২০১০ সালে নিমতলীতে ১২৪ জন, ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনে ১১৭ জন নিহতসহ একাধিক ঘটনা উল্লেখ্য করে বারবার আগুন লাগলেও ঠেকাতে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
বিবিসিতে দিনের প্রধান খবর হিসেবে প্রকাশ করা হয় আগুনের খবরটি। শিরোনাম ছিলো, ‘ঢাকার ঐতিহাসিক এলাকায় আগুনে নিহত ৭৮’। একই সঙ্গে আরও চারটি চারটি সাইডস্টোরি প্রকাশ করা হয়। মূল সংবাদে বলা হয়, ঐ এলাকায় আগুন লাগার ঘটনা নতুন নয়, ২০১০ সালেও আগুন লেগে নিমতলীতে ১২৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেবার গঠিত তদন্ত কমিটি কেমিক্যাল কারখানা সরাতে বললেও তা বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি।
মূল খবরে বিবিসির প্রতিবেদক বলেন, ‘বাংলাদেশে বড় ভবনে আগুন লাগার ঘটনা সাধারণ ব্যাপার। কর্তৃপক্ষের শিথিল নিয়ন্ত্রণ ও ত্রুটিপূর্ণ অবস্থাই এর কারণ।’
আল-জাজিরা ব্যানার হেডলাইন করেছে চকবাজারের আগুনকে। শিরোনাম দেয়া হয়, ‘আমি বিগ ব্যাংয়ের মতো বিস্ফোরণ শুনেছি—বাংলাদেশে বড় আগুনে অনেক মানুষের মৃত্যু’। সঙ্গে ছিলো আরও তিনটি সাইডস্টোরি। খবরে আল-জাজিরা বলেছে, ‘বাংলাদেশে লাভজনক ইন্ডাস্ট্রির খরচ কমানোর অর্থ হলো নিরাপত্তায় গুরুত্ব না দেয়া। ২০০৬ সালের পর থেকে দেশটিতে ৬০০ শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা গেছে।’
সিএনএনে ‘ঢাকায় অ্যাপার্টমেন্টে আগুন নিহত ৭০’ শিরোনামে দেয়া দ্বিতীয় প্রধান খবরে বলা হয়, ‘ঢাকার আগুন লেগে মৃত্যুর মর্মান্তিক ইতিহাস রয়েছে।’
সিএনএন ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনে আগুন লেগে ১১৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনাসহ বাংলাদেশে ঘটা বড় অগ্নিকাণ্ডের খতিয়ানও উল্লেখ করেছে খবরে।
বার্তা সংস্থা এপির রিপোর্টে বলা হয়েছে, উচ্চমাত্রায় প্রাণহানীকর এমন সতর্কতা দেয়া সত্ত্বেও বেশিরভাগ ভবন ব্যবহার করা হয় একই সঙ্গে আবাসিক ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। ২০১০ সালে এক অগ্নিকান্ডে কমপক্ষে ১২৩ জন নিহত হওয়ার পর এমন সতর্কতা দেয়া হয়েছিল। এসব ভবনকে বিধিবিধানের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আবাসিক ভবন থেকে রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে ফেলার।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস, যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান, ডেইলি মেইল, সৌদি আরবের আরব টাইমস, ভারতের এনডিটিভিসহ বিশ্বের প্রায় সবকটি সর্বাধিক পঠিত সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে চকবাজারের আগুনের খবরটি।