রবিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের দিন সারারাত চারদিকে বিকট শব্দ, মানুষের আর্তচিৎকার, রাসায়নিক বিস্ফোরণের ভয়ঙ্কর ও বিকট শব্দ গ্রাস করেছিল আশপাশের সকল এলাকা। অল্প দূরত্বে নির্ঘুম উৎকণ্ঠায় কেটেছে চরম অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার। আর আমরা গভীর উৎকণ্ঠা নিয়ে মহান আল্লাহর কাছে তাঁর নিরাপত্তার জন্য দোয়া করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠা এবং আতঙ্কের সঙ্গে বলছি- আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী, বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা বেগম খালেদা জিয়াকে যে পরিত্যক্ত কারাগারে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে তার চারপাশে রাসায়নিক বিস্ফোরকের ডিপো। চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানসন থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে দেশনেত্রীর কারা প্রকোষ্ঠের দূরত্ব মাত্র দেড় থেকে দুই শত মিটার। খুব কাছে হওয়ায় এই কারাগারের পুকুরে পাম্প বসিয়ে অগ্নিকাণ্ডের রাতে সেখান থেকে পাইপে নন্দ কুমার দত্ত রোড দিয়ে চুড়িহাট্টায় পানি নিয়েছিলো দমকল বাহিনী। বুধবার রাতভর আগুনের লেলিহান শিখা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর বিস্ফোরণ ঘটেছে। আতঙ্কিত মানুষ দ্বিগবিদিক ছুটেছে। চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানসন থেকে আশপাশের আর ৫/৬টি ভবনে যখন আগুনের বিস্তৃতি ঘটেছে, দোকানপাট পুড়েছে তখন আতঙ্ক আরও বাড়তে থাকে। আগুনের ভয়াবহ লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের সড়কেও।’
‘সড়কে গাড়িতে যারা ছিলেন, রিকশায় যারা ছিলেন তারা দগ্ধ হয়েছেন। কেউ অঙ্গার হয়েছেন, কেউ আগুনে ঝলসে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। পুরো এলাকার বাসিন্দারা উৎকন্ঠা-আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান। আগুনে পুড়ে এবং ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়ে শতাধিক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ি পরিত্যক্ত কারাগারে একমাত্র বন্দি দেশনেত্রীকে নিয়ে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। বসতে পারছেন না। হাঁটা চলা করতে পারছেন না। তাঁকে যখন কারাগারে নেয়া হয় তখন তিনি হেঁটে কারাগারে ঢুকলেন আর এখন তিনি হুইল চেয়ারে করে আদালতে আসছেন। সরকারের কি ভয়ঙ্কর নির্মমতা! তাঁকে এক অশুভ উদ্দেশ্যে ভয়াবহ বিপজ্জনক পরিবেশে বন্দি করে রেখেছে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই- দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কেন এধরনের শ্বাসরোধী পরিবেশে আটকে রেখেছেন? কেন তাঁর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন? আপনাকে এরকম বিস্ফোরন্মুখ বারুদের মাঝে বন্দি রাখা হলে কেমন লাগতো? কেন আপনি ৭৩ বছরের গুরুতর অসুস্থ তিন বারের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বন্দি করে রেখেছেন? কেন আপনি বিদ্বেষ-বুদ্ধি নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আছেন? আপনি এবার প্রতিহিংসার আগুন থেকে নিবৃত্ত হোন। দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন।’