খােলাবাজার ২৪,সোমবার,২৫ফেব্রুয়ারি ২০১৯ঃ চট্টগ্রামে বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি ফ্লাইট ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহত কথিত মাহাদীর পরিচয় প্রকাশের পর বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সোমবার সকালে র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায় মাহাদী তাদের তালিকাভুক্ত অপরাধী। তার নাম পলাশ আহমেদ। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরিজপুরের দুধঘাটা ইউনিয়নে।
র্যাবের প্রকাশ করা ঠিকানায় গিয়ে পরিবর্তন ডটকমের এই প্রতিনিধি জানতে পারেন, কথিত বিমান ছিনতাইকারী মাহাদীর আসল নাম পলাশ মাহমুদ।
তিনি তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল পাস করেন। পরে সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। এরপর আর পড়ালেখা এগোয়নি।
এরপরই মধ্যে ২০১৪ সালে পলাশ বগুড়া সদর উপজেলার সাতমাথা ভাইপাগলা মাজার সংলগ্ন স্থানীয় এক আইনজীবীর মেয়েকে বিয়ে করেন। পলাশ-মেঘলা দম্পতির আড়াই বছর বয়সী আয়ান নামে এক ছেলেও রয়েছে।
পলাশের বাবা পিয়ার জাহান সর্দারের ভাষ্যে, ছোটবেলা থেকেই তার ছেলে উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের। কোনো কিছুতে স্থির ছিল না। বিভিন্ন সময় নাটক-সিনেমায় কাজ করারও চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাতে হঠাৎ একটি মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে হাজির হয় পলাশ। সবার সঙ্গে তাকে ঢাকায় সিনেমার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া চিত্রনায়িকা সিমলা এবং তার প্রেমিকা পরিচয় করিয়ে দেয়। দুই মাস পর আবার সিমলাকে বাড়িতে এনে এবার স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে বিয়ের কথা সিমলাও স্বীকার করে। পরে ওই রাতেই তারা ঢাকায় চলে যায়।’
পিয়ার জাহান বলেন, ‘স্ত্রী পরিচয় দেয়ার পর আমরাও তাদের বিয়ে মেনে নেই। আমরা সিমলাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তোমার বয়স আমার ছেলের দ্বিগুণ। কেন তাকে বিয়ে করলে? সে জানায় তারা পরস্পরকে ভালবাসে। সে সম্পর্ক থেকেই বিয়ে করেছে। এরপর আমার তাকে অনুরোধ করি— পলাশ ছোটবেলা থেকে অবাধ্য। তুমি তাকে ভালো পথে ফিরিয়ে এনো।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার তিন মেয়ে ও একমাত্র ছেলে পলাশ। দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। আরেক মেয়ে ছোট (৪)। রোববার রাতে সোনারগাঁও থানা বাড়িতে এসে ছবি দেখালে আমরা জানতে পারি, পলাশ বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে নিহত হয়েছে। এ খবর শোনার পর থেকে আমার স্ত্রী শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন।’
উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’র ফ্লাইটটি (বিজি-১৪৭) ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়।
কমান্ডো অভিযানে বিমান ছিনতাইকারী তরুণ নিহত হন। সে সময়ে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল। পরে জানানো হয় নিহতের নাম মাহাদী।