Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, বৃহস্পতিবার,২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ঃ নির্বাচনী উৎসবের লেশমাত্র নেই-জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে তামাশার নির্বাচন করছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন- রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়া কমিশনের জন্য অস্বস্তিকর। সিইসি তাঁর এই বক্তব্যে স্বীকার করে নিলেন যে, জনগণ ও দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নিকট তাঁদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। যেদেশে ভোটের আগের রাতেই ব্যালট পেপারে সীল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়, ভোট চুরি হয়, ভোট দিতে পারে না সেদেশের মানুষ বর্তমান নির্বাচন কমিশন ধিক্কার ছাড়া অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য নয়। তিনি জনগণকে ভোট প্রদান থেকে প্রতারিত করেছেন। তাঁর আজ্ঞাবহ জীবনদর্শনের জন্য গণতন্ত্র এখন রাহুগ্রস্ত। ৩০ ডিসেম্বরে ভোট চুরির মহৌৎসব করে একটা অবৈধ শাসকগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসিয়ে দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করার মূল হোতাই হচ্ছেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা। কাজেই জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো এখন নির্বাচন কমিশন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ১১ টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘২৯ ডিসেম্বরে মিডনাইট নির্বাচনের পর এখন শেখ হাসিনা নতুন পাটিগণিত কষছেন। আর সেটি হচ্ছে-দেশের অবিসংবাদিত জাতীয়তাবাদী নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দেয়া। অসুস্থ দেশনেত্রীকে টানাহেঁচড়া করে ঘনঘন আদালতে নিয়ে আসা, অন্ধকারাচ্ছন্ন শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে তাঁর জন্য আদালত স্থাপন করা, তাঁর পছন্দমতো চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করতে না দেয়া, তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে না নেয়া, সাত দিন পর পর নিকটাত্মীয়দের সাথে দেখা করতে না দেয়া, আত্মীয়-স্বজনদেরকে দেখা করতে দিতে বিলম্ব করা।’

তিনি বলেন, ‘অস্বাস্থ্যকর ও কীট-পতঙ্গে ভরা কারাকক্ষে থাকতে বাধ্য করা, যে মামলায় অন্যরা জামিন পেয়েছেন সেই একই মামলায় তাঁকে জামিন না দেয়া ইত্যাদিতে প্রমাণিত হয়-সরকার দেশনেত্রীকে এক অশুভ পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে চায়। সেজন্যই বেআইনিভাবে নির্দোষ বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বরের মিডনাইট নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হবে বলেই বেগম জিয়াকে বেশ কয়েক মাস আগেই কারান্তরীণ করা হয়েছে। গণতন্ত্রের সূর্যকে অস্তগামী করার জন্যই বেগম জিয়া এখন কারাগারে। বর্বরোচিক একদলীয় কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করার জন্যই বেগম জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। বিচার ব্যবস্থায় ক্রমাগত হস্তক্ষেপের কারণেই বেগম জিয়া এখন কারাগারে। আমরা আবারও আহবান জানাচ্ছি-এই মূহুর্তে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’

রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার আগ্রাসী একদলীয় শাসনে মানুষের অন্তত: নিশ্চিন্তে মৃত্যুর সুযোগ নেই। চারিদিকে শুধু ট্র্যাজেডিরই পূণরাবৃত্তি ঘটছে। ঘরে ঘরে শুধু বুকফাটা কান্নারই আহাজারি। পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে রানা প্লাজা ও চকবাজারে প্রাণহানির ঘটনা বেশিদিনের আগের ঘটনা নয়। শেখ হাসিনার আমলজুড়েই নাৎসিবাদের ভয়ঙ্কর আত্মপ্রকাশে সমগ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখন চাপাকান্না।’

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘মধ্যরাতের সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বলেছেন-গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে। গণবিরোধী সরকারের কাছে জনগণের ইচ্ছার কোনো মূল্য নেই। ম্যান্ডেটবিহীন বলেই জনগণের দুঃখ-কষ্টের প্রতি তাদের কোনো লক্ষ্য নেই। জনগণের সরকার নয় বিধায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না জনগণ। এটি ক্ষমতাসীনদের জন্য আরেকটি লুটপাটের সুযোগ সৃষ্টি করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।