খােলাবাজার ২৪,শনিবার,৯ মার্চ ২০১৯ঃবাংলাদেশের রাজনৈতিক পথ কণ্টকময়-গণতন্ত্র সেও যেনো নিষ্পেষিত, পর্যবেষিত। ৯০ দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পর ৮০ দশকের শুরুতেই হারানো গণতন্ত্রের পদযাত্রা আবার নবরূপে শুরু হলো। নবগণতন্ত্রের শুরুতেই বাংলাদেশ রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন নাম লেখলো। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে। তিনি তার মেয়াদ শেষ করে নির্বাচন দিয়ে আবার তার দলকে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আনলেন। কিন্তু আওয়ামীলীগ জামায়াতকে সাথে নিয়ে ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচনে না গিয়ে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ এর অধীনে নির্বাচনের জন্য হরতাল-অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন। ১৭৩ দিন হরতাল পালনের রেকর্ড গড়লেন। তৎকালীন সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকার জনগণের কল্যাণের কথা ভেবে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচন দিলেন। সে নির্বাচনে আওয়ামীলীগ এককভাবে ১৪৬ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসলো এবং বিএনপি এককভাবে ১১৬ আসন নিয়ে দেশের ইতিহাসে রড় বিরোধী দল হলো। আওয়ামীলীগও ২০০১ সালে মেয়াদ শেষে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ এর অধীনে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়ল এবং বিএনপি জোট ভূমিধ্বস বিজয় নিয়ে ক্ষমতায় আসলো। ২০০৬ সালে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ এর হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিল বিএনপি। কথিত আছে সে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিজয় হতে পারবেনা বলে আওয়ামীলীগ তাল-বাহানা করতে থাকলো এবং তাদের ফসল ‘ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন’দের ক্ষতায় আনলো এবং ‘ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন’ গং অগণতান্ত্রিকভাবে ২ বছর ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দিলেন এবং আ’লীগ বিজয়ী হলেন।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতাসীন হয়ে গণতন্ত্রের বুকে ২০১১ সালে কুঠারাঘাত করলেন। ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ পদ্ধতি সংবিধান থেকে বাতিল করেন। বিরোধীদল বিএনপি তখন এ ইস্যু নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেন রাজপথে। এর মাঝে দেশে চালু হয়ে যায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বা সরকারের সমালোচনাকারীদের গুমের সংস্কৃতি-বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী, নূর আলম চৌধুরী থেকে শুরু যার শেষ আজও হয়নি। মনে হয় কোন বিশেষ ‘এলিয়েন বাহিনী’ এসে গুম করে-যা শুধু বেছে বেছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বা সরকারের সমালোচনাকারীরাদেরই করে, সরকারী দলের কেউ আজ পর্যন্ত গুম হয় নাই। এর মাঝেই এসে যায় ২০১৩ সালে ৫ সিটি নির্বাচন-যা সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয়েছিল। ফলে, ৫ সিটিতেই বিএনপি বিজয়লাভ করে এবং আওয়ামীলীগ পরাজিত হয়। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ বিরোধীদলের উপর মামলা-হামলা, দমন-পীড়ন অব্যাহত রাখে এবং মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এরই মাঝে ০৫ জানুয়ারী ২০১৪ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ধার্য হয়। আওয়ামীলীগ জোটসহ মাত্র ১২ (প্রায়) দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। বিএনপি জোটসহ বেশিরভাগ দল এ নির্বাচন বর্জন করেন এবং বিএনপি জোট “মার্চ ফর ডেমোক্রেসি”র আন্দোলনের ডাক দেন। অবশ্য এ নির্বাচনে বিএনপি জোট না আসায় আগেই ১৫৪ আসনে আওয়ামীলীগ রকিবউদ্দিন নির্বাচন কমিশনের যোগসাজসে নিজেদের জয়ী করে নেন-যা গণতান্ত্রিক বিশে^র ইতিহাসে নজিরবিহীন এক ঘটনা।
বিএনপি “মার্চ ফর ডেমোক্রেসি”র আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ প্রশাসনের দ্বারা গণ-গ্রেফতার শুরু করেন এবং ০৫ জানুয়ারীর কয়েকদিন আগে থেকেই ঢাকার সাথে সারা দেশের সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখেন এবং বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, নৌবন্দরগুলিতে পুলিশ-প্রশাসনের সাথে তাদের ক্যাডারবাহিনী দ্বারা প্রহরা দিয়ে রাখেন যেনো কেউ না আসতে পারেন ঢাকায়। যেনো সারা দেশ অবরুদ্ধ। বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে রাখা হয় এবং বিএনপি’র অন্যান্য শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে ছোট নেতা-কর্মী, সমর্থকদেরও গ্রেফতার করা হয়। এর মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন এটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যে সবাইকে নিয়ে আবার একটি অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন করা হবে। ০৫ জানুয়ারী ২০১৪ অবরুদ্ধ অবস্থায় নির্বাচন হয় এবং সে নির্বাচনে মাত্র ০৫% ভোট পরে। ভোট কেন্দ্রে কুকুর ঘুমিয়ে ছিল। অনেক ভোটকেন্দ্রে কোন ভোটই পড়েনি। এমন এক নির্বাচনকে জনগণ বলেছেন ভোটারবিহীন, প্রার্থীবিহীন তামাশাপূর্ণ এক নির্বাচন।
……….নির্বাচন পার হয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রী অল্পদিনের মধ্যে সবাইকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বে-মালুম ভূলে যান। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সে বক্তব্য অনুযায়ী অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপিও আওয়ামী সরকারকে ১ বছরের মতো সময় দেন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে আওয়ামীলীগ নির্বাচন তো দুরের কথা আরো কঠোর মনোভাব দেখান বিরোধীদলের প্রতি। ২০১৫ সালের ০৫ জানুয়ারী বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যাদিবস’ বা ‘কালো দিবস’ পালন করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সারাদেশে অনিদির্ষ্টকালের অবরোধ আন্দোলনের ডাক দেন। ক্ষমতাসীনরা পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারা বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রায় তিনমাস গৃহবন্দী করে রাখেন। সেখান থেকে ০৫ জানুয়ারী ২০১৫ তিনি তার ঘোষিত নয়াপল্টন প্রোগামে অংশগ্রহনের জন্য আসতে চাইলে তাকে তার কার্যালয়ের মেইনগেটে তালাবন্দী করে রাখা হয় এবং তার উপর মরিচের গুড়ার পেপার স্প্রে করা হয়। এতেও বেগম খালেদা জিয়া ও তার দলের নেতা-কর্মীরা দমে না গেলে তার সেই গুলশানের কার্যালয়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, খাবার, নেটসহ সকল যোগাযোগের মাধ্যম এবং খাবার সরবরাহও বন্ধ করা হয়। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন অভূক্ত বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কিছু খাবার নিয়ে কার্যালয়ের ভিতর যেতে চাইলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান-জনগণ দেখলো এই ক্ষমতাসীনদের আমলে গণতন্ত্রের নমুনা। এর মাঝে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো চিকিৎসাধীন অবস্থায় মালএশিয়ায় মারা যান। এতেও সরকার দমন-পীড়ন থামান না। বেগম খালেদা জিয়া ও তার দলের নেতা-কর্মীরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে আন্দোলন চালিয়ে যান। মরহুম আরাফাত রহমান কোকো’র জানাযায় বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গনে এতো বেশী পরিমান লোক হয়েছিল যে, স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জানাযা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর জানাযার পরই তারই ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ২য় বৃহত্তম জানাযা। জানাযায় এতো লোকের সমাগম দেখে ক্ষমতাসীনরা নতুন করে হিসাব-নিকাশ করতে থাকেন।
অবরোধের মধ্যে ২/১ টা বাস চলাচল করলে কে বা কারা চলন্ত বাসে পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করেন। এতে ক্ষমতাসীনরা বিএনপিদের দোষ দেন আর বিএনপিরা বলেন আমাদের আন্দোলন দমানোর জন্য মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর জন্য ক্ষমতাসীনরা পূর্বের ন্যায় গান পাউডারের মতো পেট্রলবোমা মারছে। ফলে এর কোনো সুরাহা হয় না। সরকার তখন কৌশলে ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ঢাকার ২+ চট্টগ্রামসহ মোট ৩ টি সিটি নির্বাচন ঘোষণা করেন এবং কৌশলে বেগম জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে পুলিশ-প্রশাসনও ধীরে ধীরে তুলে নেন। বেগম জিয়া প্রায় ৩ মাস অবরুদ্ধ থাকার পর বের হয়ে আসেন এবং তার বাসায় ফিরে যান।
২৮ এপ্রিল ৩ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলেও এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়া, ভোট জালিয়াতির কারনে বিএনপি বর্জন করেন। এর পরে আওয়ামী ক্ষমতাসীনদের সময়ে যতো স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন হয়েছে সব ভোট চুরি-ডাকাতি, জালিয়াতি, ভয়-ভীতিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এভাবে চলতে চলতে এসে যায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১১ মাস পূর্বে আদালতের মাধ্যমে এক রায়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করেন ক্ষমতাসীনরা। তার নামে ছিল মাত্র ৫ টি মামলা আর ক্ষমতাসীন দলের নেত্রীর নামে ছিল বেগম খালেদা জিয়ার ৩ গুন ১৫ টি মামলা। ক্ষমতায় থেকে এই ১৫ টি মামলা ৩ মাসের মধ্যে তুলে নেন তারা আর বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নামে নতুন করে আরো অসংখ্য মামলা দেন।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ধারাবাহিকভাবে বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেন এবং এসব কর্মসূচি পালনের সময় অসংখ্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেন, রিমান্ডে নিয়ে ভয়-ভীতি দেখান। বিএনপি নেতা-কর্মী মানেই যেন তাদের কোন গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। বিনা অপরাধে মামলা খাওয়া, বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার হওয়া। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রাক্কালে এই ছিল যেনো বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিণতি-‘চুপচাপ থাকো, নয়তো গ্রেফতার হয়ে জেলে যাও’। আর আওয়ামীদের ভোট ছিল অনেকটাই এ রকম ‘আমার ভোট আমি দিব, তোমার ভোটও আমি দিব-সবার সব ভোট আমরাই নিব’। এ নির্বাচনের সময় দেখা গেছে-আওয়ামী জোট প্রার্থী অবাধে প্রচারণা চালালেও বিএনপি জোটের প্রার্থীরা প্রচারণা তো দুরের কথা পোস্টার-ই টানাতে পারেননি-আওয়ামী ক্যাডাররা পুলিশ-প্রশাসনের সহায়তায় পোস্টার ছিড়ে ফেলছে এবং বিএনপি জোট প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে গেলে পুলিশ-প্রশাসনসহ আওয়ামী ক্যাডাররা তাদের উপর হামলা করে; এমনো নজির আছে বিএনপি প্রার্থীকে পুলিশ গুলি করেছে মাথায় নয়তো বুকে বা অন্য কোন অঙ্গে-সেই সাথে গ্রেফতার তো চলমান। অতঃপর ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগেই ব্যালটবাক্স পূর্ণ ছিল-যা বিবিসির ক্যামেরাই ধরা পড়েছে। এমনো দেখা গেছে এক আসনে মোট ভোটের চেয়ে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা বেশী। চিহ্নিত বিএনপি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী ক্যাডার, কর্মী, সমর্থকরা এক একজন একাধিক ভোট দেন। পুলিশ প্রশাসন এ কাজে পুরোপুরি সমর্থন জানায়, সেনাবাহিনী নীরব থাকে ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতা করে-এতে গণতন্ত্র যেনো যায় মরে। ভোটের আগে এমন গ্রেফতার, মামলা, হামলা, রিমান্ড,জেল, অত্যাচার, নির্যাতন, সাধারণ ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন যেনো রীতি ছিল আওয়ামী ক্যাডারদের ও তাদের সহযোগী পুলিশ-প্রশাসনদের। আর ৩০০ আসনের এক অভূতপূর্ব ফলাফল দেখা গেল। আওয়ামী জোটদের ২৮৮, বিএনপি’র ৫ সহ জোটের ৭ টি আসন, বাকী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। আর আওয়ামীলীগদের সাথে বিএনপি প্রার্থীদের ভোটের ব্যাবধান ছিল আকাশ-পাতাল সমান। বিএনপি’র হেভিওয়েট প্রার্থীদের জামানত হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ পরিস্থিতি এমনি ছিল জনগণের মনে মনে তখন এমন ধারণা ছিল যে-‘ভয়-ভীতিতে ঘুমিয়ে ছিল দেশের জনগণ-অবাধে একাধিক ভোট দিয়েছে আওয়ামী ক্যাডার ও পুলিশ-প্রশাসন”।
এখানে প্রসঙ্গক্রমে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যা ছিল নতুন ভোটার। তাদের মনে কতো আশা ছিল তারা জীবনের প্রথম ভোট দিবে। অনেক তরুণ ভোটার নতুন ড্রেস কিনেছিল ভোট দেওয়ার জন্য। তারা তাদের কাঙ্খিত ভোট দিতে না পারায়, কেন্দ্রে যেতে না পারায় আওয়ামী সরকারের উপর সমর্থন তো দুরের কথা-মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তারা বুঝে ফেলেছে-এ সরকারের আমলে কেমন ভোট হবে ? অতি সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর ভোটের চিত্রে দেখা গেল- ভোটাররা তেমন কেহই ভোট দিতে যাননি। অনেক কেন্দ্র ছিল ভোটারশুন্য। জনমনে আজ প্রশ্ন জেগেছে বর্তমান সরকার দেশে ভোটার শুন্য করতে করতে গণতন্ত্র শুন্যেরও শেষ পথে খাদের শেষ কিনারে পৌঁছেছে। কেননা-ভোটের অধিকার বা ভোটাধিকার প্রত্যেক মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার-যা মানুষের রাজনৈতিক অধিকারও বটে। আজ মানুষের এ রাজনৈতিক অধিকার কি আছে? মানুষ কি আজ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে? নিজের পছন্দমতো দলকে সমর্থন দিতে পারে। যদি কেউ আওয়ামী জোটের বাহিরে কোন দল করে বা সমর্থন দেয় তাহলে আজকাল সে হয়ে যায় রাজাকার বা স্বাধীনতা বিরোধী। মানুষ কি এখন তার রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে রাজপথে নামতে পারে-তাকে হতে হয় হেনেস্তা, পঙ্গু জীবন-যাপন, গুম খুন, অপহরণের শিকার। একককর্তত্ববাদের শাসনে আজ মানুষ তার রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাইতো মানুষের মনে আজ এমন ধারনা জন্মেছে-বর্তমান ক্ষমতাসীনদের আমলে গণতান্ত্রিক রাজনীতি সুশোভিত না হয়ে হয়েছে কলুষিত রাজনীতি।কিন্তু মানুষ কলুষিত রাজনীতি চায় না-চায় গণতান্ত্রিক রাজনীতি।
মোঃ মিজানুর রহমান-লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট