খােলাবাজার ২৪,শনিবার,৯ মার্চ ২০১৯ঃ ২০১৯ সালের মধ্যে বসবাস উপযোগী একটি আবাসন এলাকা হিসেবে পরিচিত হবে পূর্বাচল স্যাটেলাইট টাউন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী জনাব শ.ম. রেজাউল করিম, এম.পি বলেছেন, ‘২০১৯ সালের মধ্যে বসবাস উপযোগী একটি আবাসন এলাকা হিসেবে পরিচিত হবে পূর্বাচল স্যাটেলাইট টাউন।
২০১৯ সালের মধ্যে বরাদ্দ প্রাপকরা সকল নাগরিক সুবিধাসহ বসবাস করতে পারবেন। সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি’। আজ ০৯ মার্চ ২০১৯ তারিখ, শনিবার রাজধানীর ‘কুড়িল-পূর্বাচল লিংক রোডের উভয় পার্শ্বে (কুড়িল হতে বালু নদী পর্যন্ত) ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্প’ ও ‘পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প’ পরিদর্শনকালীন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বিফ্রিংকালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর থেকে চিন্তা রেখেছি আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব কিভাবে গতিশীলতার সঙ্গে পালন করা যায় এবং রাজউকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান করা যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য হচ্ছে, আমরা সেবক, জনসাধারণ কিভাবে সেবা পাবেন। আমরা মালিকপক্ষ নই, আমরা রাজা নই, জনসাধারণ প্রজা নন। তাদেরকে সেবা দিতে হবে-এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ। সেই নির্দেশকে পাথেয় করে আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি’। শেখ হাসিনা সরকার কোনভাবেই কোনো অনিয়ম, কোনো দুর্নীতি ও কোনো অস্বচ্ছতাকে বরদাশত করবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন ‘এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি আমাদের। আমরা যারা দায়িত্বে আছি, অফিস সহায়ক থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত সকলকে কাজের গতি বাড়াতে হবে, কাজে স্বচ্ছতা আনতে হবে, সততাকে প্রশ্নের উর্ধ্বে রাখতে হবে।
সকল কাজকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে ত্বরান্বিত করতে হবে। যেনো তেনো উপায়ে কাজকে আটকে রাখা যাবে না, প্রকল্প প্রলম্বিত করা, প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো কোনভাবেই আমরা করবো না, এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। সে লক্ষ্যেই আমি নিজে মাঠে এসেছি’। মন্ত্রণালয়ের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের চেয়ে আমার কাজের পরিসর বাইরে উল্লেখ করে মন্ত্রী ব্রিফিং এ আরো বলেন ‘উন্নয়ন কার্যক্রমে নারায়ণগঞ্জ থেকে শুরু করে সাভার, ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে আমি তাৎক্ষণিকভাবে গিয়েছি। আমি সবখানেই তাগিদ দেয়ার চেষ্টা করছি কোনভাবেই অর্থের অপচয় হতে পারবে না, ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। অকারণে কাজ আটকে রেখে বিল বাড়ানোর চেষ্টা করলে বরদাশত্ করা হবে না। জনগণের অর্থ নিয়ে কোনো রকম টালবাহানা, কোনো রকম অজুহাত সৃষ্টির সুযোগ থাকবে না’।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবটুকু স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের সকলকে তাঁর নির্দেশিকা অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। এটাই আমাদের পাথেয়। পূর্বাচল এলাকায় বেশ কিছু মামলা ছিলো, পূর্বের মালিকদের অসহযোগিতা ছিলো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন ‘এখন জনপ্রতিনিধিসহ সকলে অনুধাবন করছেন, উন্নয়নের কোনো বিকল্প নাই। আর জনবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিপূরণও তিনগুণ করে দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ পাবার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যায় পড়লে আমার কাছে আসবেন, কোথায় সমস্যা আমরা দেখবো’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন “সকলের জন্য আবাসন, কেউ থাকবে না গৃহহীন” উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য, বস্তিবাসীদের জন্য, যাদের স্বচ্ছলতা আছে তাদের জন্যসহ সবার আবাসনের জন্য আমরা কাজ করছি। মন্ত্রী আরো যোগ করেন, ‘একটি মানুষও আবাসহীন থাকবে না। পূর্বাচলে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে তারা আধুনিক ও নাগরিক সকল সুবিধা সম্পন্ন স্যাটেলাইট টাউনের অধিবাসী হচ্ছেন। আবার তিনি ক্ষতিপূরণের টাকাও পাচ্ছেন। উন্নয়নের সকল সুবিধা তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে’।
উন্নত রাষ্ট্রের অনুকরণে পূর্বাচলে কাজের প্রক্রিয়া দ্রুততার সাথে চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও যাতে পানি আটকে না থাকে, বর্জ্য আটকে না থাকে, সব পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে পূর্বাচলে কাজ চলছে। পরিবেশ সম্মত আধুনিক নগর হবার জন্য যা যা করা দরকার, পূর্বাচল প্রকল্পে সবকিছুই করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন’ কিছু লোক আছে যারা চোখ থাকতে অন্ধ, তাদের শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন চোখে পড়ে না। আমরা পরিবেশবান্ধব, আধুনিক পূর্বাচল সিটি গড়ে তুলে তাদেরকে সরকারের উন্নয়ন দেখাতে চাই। ব্রফ্রিং এর এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এ উপাধি আর কাউকে দেয়া হয়নি। আপনারা আমাদের ত্রুটি ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি উন্নয়ন কাজগুলোও মানুষের সামনে নিয়ে আসুন। বাংলাদেশ যে উন্নয়নের রোল মডেল সেটা সবার কাছে তুলে ধরুন’।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী পরিদশর্নকালীন দিনব্যাপী রাজধানীর কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত ১০০ ফুট খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন খনন ও উন্নয়ন কার্যক্রম, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন, প্রকল্প বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। পরিদর্শনকালীন রাজউকের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহমান সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ রাজউকের ঊদ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রকল্প পরিচালকগণ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ইয়াকুব আলী পাটোয়ারি ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।