Mon. Jun 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় ভারতেশ্বরী হোমস

খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০১৯ঃ পেরিয়ে গেছে প্রায় ১১ বছর। এই দীর্ঘ সময় পর আজ বৃহস্পতিবার জেলার  মির্জাপুর উপজেলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে কোনো ব্যক্তিগত কাজ বা দলের প্রয়োজনে নয়। তিনি আসবেন দানবীর খ্যাত রণদা প্রসাদ সাহা স্বর্নপদক অনুষ্ঠানে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসের এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে আসছেন তিনি।  তিনি হোমসে প্রথমবারের মতো  আসছেন। তার আগমনে  মির্জাপুর সেজেছে নতুন সাজে। দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। এখন ভারতেশ্বরী হোমস শুধু প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায়।

এ ছাড়া তিনি জেলার বিভিন্ন স্থানের ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ১৯টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

তিনি কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সেবা কার্যক্রমের ৮৬তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। কুমুদিনীর ৮৬তম বর্ষপূতি উপলক্ষে এ বছর শহীদ দানবীর রনদা প্রসাদ সাহা স্মারক সম্মাননা স্বর্ণপদক পাচ্ছেন চার গুণী ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রী কুমুদিনী কমপ্লেক্স ও ভারতেশ্বরী হোমসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ সম্মননা তুলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে হোমসের ছাত্রীরা দৃষ্টি নন্দন ড্রিসপ্লে প্রদর্শন এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে পুরো কুমুদিনী কমপ্লেক্সেসহ মির্জাপুর শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন তার ছোট বোন শেখ রেহেনা। তার সফরসঙ্গী হিসেবে আরো বেশ কয়েকজন মন্ত্রী থাকারও কথা রয়েছে।

জানা যায়, শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মির্জাপুরে কুমুদিনী কমপ্লেক্সে আগমন করবেন। তিনি কুমুদিনী কমপ্লেক্স পরিদর্শনের পর রনদা প্রসাদ সাহা স্মারক স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে ভারতেশ্বরী হোমসের সবুজ চত্বরে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির গুরু হিসেবে খ্যাত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (মরণোত্তর), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), শিল্পী শাহাবুদ্দিন এবং নজরুল বিশেজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে স্বর্ণপ্রদক প্রদান করবেন। কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট্র অব বেঙ্গল (বিডি) লিমিটেড এ অনুষ্ঠানের আয়োজক। পরে তিনি দুপুরের খাওয়া শেষে বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই আগমন উপলক্ষে পুরো শহরজুড়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সকল প্রস্ততি সম্পন্ন। এখন সরকার প্রধানকে বরণে প্রস্তুত ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষার্থীরাও।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এখানে আসবে এতে আমরা অনেক খুশি। এর আগে শুধু টিভিতে তাকে দেখেছি। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমাদের। তাকে এতো কাছ থেকে দেখব বলে তার আসার অপেক্ষায় রয়েছি। তার এ আগমনে ওই দিন প্রথম নৌকার ডিসপ্লে উপহার দেব আমরা। আশা করছি, আমাদের এ ডিসপ্লে দেখে তিনি অনেক খুশি হবেন।

মির্জাপুর থানার ওসি একে এম মিজানুল হক জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে পুলিশের সদস্যসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রায় ১৫ শ সদস্যের চার স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।

পুলিশ জানায়, ৪ স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর জন্য ৩টি হ্যালিপ্যাড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি যেকোনো একটিতে নামবেন। তারপর তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। আনসার ও পুলিশ মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর প্রায় ১৩ শ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

কুমুদিনী ট্রাস্টের পরিচালক (শিক্ষা) প্রতিভা মুসুদ্দী বুধবার জানান, আমাদের অনেক দিনের আশা ছিল প্রধানমন্ত্রী আমাদের এখানে আসবেন। সময়ের অভাবে তা আর হয়ে উঠেনি। এবার আমাদের প্রস্তাবে তিনি রাজি হয়ে কাল সকালে আসবেন। এতে আমরা যেমন খুশি তেমন কৃতজ্ঞ। স্বর্ণপদক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে ওই চারজন গুণী ব্যক্তিকে স্বর্ণপদক তুলে দিবেন।

১২টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৯টি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী

সফরে প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন সেগুলো হচ্ছে- ধেরুয়া রেলওয়ে ওভারপাস, ৩৩/১১ কেভি সুইচিং স্টেশন (গ্রীড সাবস্টেশন, বৈল্যা, রাবনা বাইপাস, টাঙ্গাইল), ৩৩/১১ কেভি ২০ এমভিএ ইনডোর উপকেন্দ্র (ইন্দ্রবেলতা, পোড়াবাড়ী, টাঙ্গাইল), বাসাইল উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন  ঘোষণা, দেলদুয়ার উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা ঘোষণা, নাগরপুর উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা ঘোষণা, সখীপুর উপজেলা কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ভবন সম্প্রসারণ ও হলরুম  উদ্বোধন,    কালিহাতী (ধুনাইল)-সয়ার হাট হাতিয়া পর্যন্ত রাস্তার শুভ উদ্বোধন, মির্জাপুর উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারিত ভবন উদ্বোধন, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু ভিআইপি অডিটরিয়ামের উদ্বোধন, মির্জাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও মির্জাপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র  উদ্বোধন।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী যে ১৯টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সেগুলো হলো- এলেঙ্গা-জামালপুর জাতীয় মহাসড়ক (এন-৪) প্রশস্তকরণ প্রকল্প (টাঙ্গাইল অংশ), এলেঙ্গা-ভূঞাপুর-চরগাবসারা সড়কে ১০টি ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ও ১টি কালভার্ট পুনঃনির্মাণ এবং আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন, টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার জেলা মহাসড়ক (জেড-৪০১৫), করটিয়া (ভাতকুড়া)-বাসাইল জেলা সড়ক (জেড-৪০১২) এবং পাকুল্লা-দেলদুয়ার-এলাসিন (জেড-৪০০৭) অংশকে যথাযথমানে ও প্রশস্থতায় উন্নীতকরণ, কালিহাতী উপজেলা কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ভবন সম্প্রসারণ ও হলরুম নির্মাণ কাজ,  বাসাইলের করটিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ,      দেলদুয়ারে বাতেন বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর নির্মাণ কাজ,  ঘাটাইলের রসুলপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ, ঘাটাইলের লোকেরপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ দেলদুয়ারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় নির্মাণ কাজ, জেলা সদর মডেল মসজিদ  নির্মাণ কাজ,      টাঙ্গাইল সদর উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ, বাসাইল উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ, সখীপুর উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ, মধুপুর উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ, মির্জাপুর উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ, টাঙ্গাইল সার্কিট হাউসের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ, ভারতেশ্বরী হোমসের মাল্টিপারপাস হল নিমার্ণ কাজ, মির্জাপুর ইন্সটিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট নার্সিং কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ।