Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯ঃ  ১৭ মার্চ ২০১৯ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত করতে বর্তমান সরকার অবিরাম কাজ করছে, এটা বাংলাদশের ইতিহাসে অন্য কেউ করেনি। মানবাধিকারের সোচ্চার ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে সরকারের ন্যূনতম কোনো বাধা নেই। আমারা সরকারের পক্ষ থেকে চাই একজন নাগরিকেরও মানবাধিকার যেনো লঙ্ঘন না হয়। আমরা সকল সহায়তা দিতে প্রস্তুত। মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হবার ব্যাথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন। তাঁর পরিবারের সকলকে হত্যা করা হলো, তিনি বিচার পাননি। পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে সারা দেশ বার্ণ ইউনিটে পরিণত করে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিলো। সে জায়গা থেকে আজকে আমাদের উত্তরণ হয়েছে’।

আজ শনিবার সকালে ঢাকার শাহবাগস্থ জাতীয় যাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে মাসিক মানবাধিকার খবর এর ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সূচকে, সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে, অথচ এই বাংলাদেশই ছিলো দারিদ্রতা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের একটা মডেল। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ কল্পনাতীত জায়গায় পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশের কোনো প্রান্তে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার অভাবে আছেন, এমন একজন মানুষ পাওয়া যাবে না। নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে সমুন্নত করার জন্য বর্তমান সরকার অর্থাৎ শেখ হাসিনা সরকার কাজ করে চলেছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন মানুষের সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে তার মানবাধিকার। সংবিধান নাগরিককে যে অধিকার দিয়েছে সে অধিকার থেকে তিনি যদি বঞ্চিত থাকেন, তাহলে তিনি মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হন’। বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিলো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স এর মতো নিকৃষ্ট, জঘন্য, ঘৃন্য অর্ডিনেন্স ১৯৭৯ সালে পার্লামেন্টে পাশ করে সেটাকে আইনে পরিণত করা হয়, সংবিধানের অংশ করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-সহ ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট যারা নৃশংস হত্যাকান্ডের স্বীকার হয়েছিলেন তাঁদের খুনীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়েছিলো।

জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে জাতির কাঁধে কলঙ্ক হয়ে থাকা এই আইন অপসারণ করে জাতির জনকের খুনীদের বিচার করেছিলেন’। মন্ত্রী বলেন ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর ৩১ ডিসেম্বর সকল যুদ্ধাপরাধীদের জেল থেকে বের করে দেয়া হয়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের দাম্ভিকর্তা চূর্ণ করে তাদের বিচার করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে বাংলাদেশ মানবাধিকারকে সমুন্নত করেছে’। মিয়ানমারের অসহায় নিরস্ত্র মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা ও জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই বর্বোরচিত ঘটনায় মিয়ানমারের মানুষ যখন বিপন্ন হয়ে পড়েছিলো, সারা দুনিয়া তখন নির্বাক হয়ে তাকিয়েছিলো। কেউ সাড়া দেয়নি। মানবাধিকারকে সমুন্নত করতে গণতন্ত্রের জননী, মানবাধিকারের জননী শেখ হাসিনা বর্ডার খুলে দিয়ে ১৬ লক্ষ মানুষকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে, তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সুযোগ করে দিয়ে শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন সারা বিশ্বে তিনিই হচ্ছেন লিডার, যিনি মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন’।

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের বিচার, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার বিচার, বিডিআর হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়, প্রমাণ করেছেন আসামীর সংখ্যা বড় নয়, অপরাধটা বড়’। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের এমপিও দুর্নীতির দায়ে কারাদন্ড প্রাপ্ত হয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন অপরাধের কোন দায়মুক্তি নাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশে মানবাধিকারকে সমুন্নত করার বিষয়’।

মন্ত্রী তার বক্তব্যে আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ শান্তির একটি স্বর্গে পরিণত হচ্ছে। সেরকম একটি সময়ে মানবাধিকার খবর যুগান্তকারী পদক্ষেপ রাখছে। মানবাধিকার খবর এর অগ্রযাত্রায়, ছিলাম, আছি, থাকবো’। মন্ত্রী উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান, ‘মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখার জন্য বাংলাদেশে সবচেয়ে সোচ্চার কর্মী শেখ হাসিনার পাশে থাকবেন’। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার খবর-এর সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা ও উম্মে ফাতেমা নাজমা, প্রেস ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মোঃ আব্দুর রহিম খান, প্রখ্যাত যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ প্রমুখ।