Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড পেলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম

খােলাবাজার ২৪,বুধবার, ০৩এপ্রিল ২০১৯ঃআন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত বাংলাদেশী আলোকচিত্রী, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী শহিদুল আলমকে মর্যাদাপূর্ণ ‘ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অফ ফটোগ্রাফী আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। দুনিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চার শতাধিক নেতৃস্থানীয় আলোকচিত্রশল্পীর উপস্থিতিতে ম্যানহাটানের জিগফেল্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত হয় ৩৫তম ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান। আলোকচিত্রের ক্ষেত্রে এটি দুনিয়ার শীর্ষ মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি হিসাবে বিবেচিত হয়। শহিদুল আলমকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে স্পেশাল প্রেজেন্টেশন ক্যাটাগরিতে। অনুষ্ঠানে তাঁর ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে তাঁর বিভিন্ন কর্মকান্ডের পাশাপাশি গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন প্রদান, অতঃপর গ্রেফতার হওয়ার প্রসঙ্গটিও রয়েছে।

পুরষ্কার পাওয়ার পর নিজের অভিজ্ঞতা ও প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শহিদুল আলম বলেন- গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সে ব্যাপারে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার ব্যাপারে তিনি দৃঢ়প্রতীজ্ঞ।

যে কোনো অবস্থায় ক্যামেরা হাতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে থেকে সেই প্রতিবাদ তিনি চালিয়ে যাবেন। পৃথক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। তাই আমার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের মানুষের জন্য গ্রহণ করেছি এই অ্যাওয়ার্ড। আমাদের বাকস্বাধীনতার ব্যাপারে যে প্রতিরোধ গড়ে উঠছে, আমরা যে সংগ্রামী এবং স্বাধীনচেতা সেটারই স্বীকৃতি এই অ্যাওয়ার্ড। তাছাড়া আলোকচিত্রশিল্পে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি ও অর্জন তার প্রতি সম্মান জানানো হয়েছে ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার মধ্য দিয়ে।

এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের আরও চারজন আলোকচিত্রীকে ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এর মধ্যে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় প্রখ্যাত মার্কিন আলোকচিত্রী মিজ রোজালিন্ড ফক্স সলোমনকে।

৩৫তম ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকায় শহিদুল আলম সম্পর্কে বলা হয়, ২০১৮ সালের টাইম ম্যাগাজিন পারসন অব দ্য ইয়ার শহিদুল একজন আলোকচিত্রী, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করেন। ১৯৮৪ সালে দেশে ফিরে ফটোগ্রাফী শুরু করার আগে তিনি জেনারেল এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-প্রচারণায় অংশ নেন। পরবর্তীকালে তিনি দৃক নামে একটি স্বনামখ্যাত আলোকচিত্র লাইব্রেরী এবং পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি প্রবর্তন করেন ছবিমেলা নামে একটি আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র উৎসবের। তিনি বিভিন্ন সময় দুনিয়ার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড, কেমব্রিজ ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি সান্ডারল্যান্ড ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং প্রফেসর এবং রয়েল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সম্মানীয় ফেলো। ২০১৮ সালে তিনি সরকারি দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে কারারুদ্ধ এবং নির্যাতিত হন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।