
তাদের বক্তব্যে উঠে আসে, প্রায় ১৪ মাস কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির বর্তমানে করণীয় বিষয়গুলো।
তারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন আর শুধু বিএনপির নেত্রী নন। কারাগারে যাওয়ার পর তিনি এখন জনগণের নেত্রী হয়ে গেছেন। তাই তার মুক্তি শুধু বিএনপির দাবি নয়, জনগণের দাবি।’
রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির উদ্যোগে ‘গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে’ এ গণঅনশন কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সোয়া ৬ ঘণ্টা অনশন করে দলটির নেতাকর্মীরা। বিকেলে ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমেদ বিএনপি নেতাদের ফ্রুটিকা খাইয়ে অনশন ভাঙান।
সংসহতি প্রকাশ করে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘ঘরের মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি জানাতে চাই না। এখানে এক হাজার একশ লোক জীবন দিলেও তার মুক্তি হবে না। কিন্তু কিছু হারিয়েও খালেদা জিয়ার মুক্তি পাওয়া যাবে না। এখন শুধু স্লোগান দিলে হবে না , সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, আপস করে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্মনজনক হবে না। সরকারের একটা পক্ষ প্যারোলেবেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলে নাটক করছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘১৪ মাস হয়ে গেল বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। তার মুক্তিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে।বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি।’
বিএনপির উদ্দেশে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি জানি, এ গণঅনশনে কী হবে। যদি পারেন এক হয়ে রাস্তায় নামেন। রাস্তায় নামলে দু-চারটা মামলা হবে। তাতে কী যায় আসে। দেশটাই তো একটি কারাগারে পরিণত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলেছেন নির্বাচনের পরের দিন কেন হরতাল ডাকা হলো না। রাস্তা অবরোধ করা হলো না। আমি মনে করি আপনারা রাস্তা অবরোধ না করে ভালোই করেছেন। এখন ধীরে ধীরে অবরোধ শুরু করেন।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেমন প্যারোলে লাহোরে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনা করতে যাননি তেমনি বেগম খালেদা জিয়াও প্যারোলে মুক্তি না নিলে সেটা হবে দ্বিতীয় নজিরবিহীন। প্যারোলে মুক্তি মানে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু, গণতন্ত্রের মৃত্যু।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, পুলিশের অনুমতি নিয়ে নয়, রাস্তায় কীভাবে নামতে হবে সেই চিন্তা করতে হবে। তবে সেটা রাস্তা দখল করে নয়, আমরা ফুটপাত দখল করতে পারি।
অনশনে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন, শামসুজ্জামান দুদু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. মাইনুল ইসলাম প্রমুখ।
জাতীয় ঐক্যফ্যন্টের পক্ষ থেকে বিএনপির অনশনে আরও অংশ নেন-মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
২০ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে অনশনে যোগ দেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক, মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ডিএল মহাসচিব সাইফুদ্দিন মুনির, মুসলিম লীগের মহাসচিব জুলফিকার বুলবুল প্রমুখ।