Mon. Jun 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯ঃ মনের ভিতরে একরকম আর বাহিরে অন্যরকম প্রকাশিতই হচ্ছে ছদ্মবেশ বা মুখোশ। মনের ভিতরের সেই একরকম সময়ান্তে বাহিরের অন্যরকমকে প্রশমিত করে প্রকাশিত হওয়ায় হচ্ছে-মুখোশ উন্মোচিত। ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, সাংস্কৃতিক জীবন, অর্থনৈতিক জীবন, রাজনৈতিক জীবনের কোন না কোন ক্ষেত্রে মানুষ বা কোন সংঘবদ্ধ সংস্থা বা দল নিজ হীনস্বার্থ চরিতার্থে ছদ্মবেশ বা মুখোশ এর আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে। সমসাময়িক সময়ে আমাদের মাঝে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিফলন-ই মানুষকে বলে দিচ্ছে ‘মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে’।

১৯৭০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানীদের স্বার্থসিদ্ধির দলিল Legal frame work order (এল এফ ও) বা আইনগত কাঠামো আদেশ শর্ত মেনে নিয়ে তৎকালীন আওয়ামীলীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা দেন না। শেখ মুজিবুর রহমানও অল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে কোন ছাড় না দিয়ে সিদ্ধান্তে অটল থাকেন-এতে পশ্চিম পাকিস্তানীরা ক্ষেপে গিয়ে ২৫ মার্চ রাতে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকা- ঘটিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের মিরওয়ারী কারাগারে বন্দী করে রাখেন। ২৫ শে মার্চের সেই ভয়াল হত্যাকা-ে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকরা নরপিচাশ হিসেবে পরিচিতি পান এবং শেখ মুজিবুর রহমানও যে অল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন-সে সব মুখোশ উন্মোচিত হয়। ওনাদের মুখোশ উন্মোচিত হলেও পূর্ব পাকিস্তানী এ জাতি তথা আজকের বাংলাদেশীদের ললাটে ঘোর অমানিশা নেমে আসে। দিশেহারা-নেতৃত্বহারা এ জাতির মাঝে আশার প্রদীপ হয়ে ভোরের প্রভাতের আলোর মতো আসেন অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর জিয়াউর রহমান-তিনি ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং নিজে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে পাক-হানাদার মুক্ত করে স্বাধীন করেন। এতে জিয়াউর রহমান এর খাঁটি-নিখাত দেশপ্রেমের মুখোশ উন্মোচিত হয়।

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ দেশ স্বাধীন হলো এবং মেজর জিয়াউর রহমান স্ব-পদে ফিরে গেলেন। ১০ জানুয়ারী ১৯৭২ শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরে আসলেন এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১-এ (শপত গ্রহণের দিন) মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় গঠিত সরকারের (১০ এপ্রিল ১৯৭১-এ গঠিত) রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি বন্ধী হওয়ায় সে সময় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। দেশ স্বাধীনের পর ১০ জানুয়ারী ১৯৭২-এ যখন শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরেন, তখন থেকেই অর্থাৎ ১০ জানুয়ারীতেই অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দ্বায়িত্ব অকার্যকর হয়। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ জানুয়ারী দেশে ফিরলেও রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন না করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন ১২ জানুয়ারী ১৯৭২ সাল থেকে। তাহলে জনমনে প্রশ্ন ১০ জানুয়ারী তিনি দেশে ফিরলেন ১২ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব নিলেন ; ১১ জানুয়ারী কার অধীনে দেশ ছিল ?

সেদিন সে প্রশ্ন যদি কোন নেতা বা জনগণের মাঝে উঠতো তাহলে পরবর্তীতে বাকশাল হওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হিমশিম খেতো। দেশ স্বাধীনের পর দুর্বিনীত দুঃশাসনের যাতাকলে পরে দেশে তৎকালীন শাসক এক নেতার এক দল ‘বাকশাল’ কায়েম করেন। দেশ স্বাধীনের পর বিরোধী হিসেবে তৎকালীন সময়ে সিরাজ শিকদার সমালোচনা করলে তাকে আঘাত করেন তৎকালীন শাসক এবং তার মৃত্যুর পর বলেন-‘আজ কোথায় সিরাজ শিকদার’ ? বাকশাল কায়েম করতে সরকার নিয়ন্ত্রিত ৪ টি পত্রিকা বাদে দেশের সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন। এতে তৎকালীন শাসকের গণতন্ত্রকে গলাটিপে মেরে ফেলা এবং এক দল এক নেতা বা এক দেশ এক শাসকের ভূমিকায় অবর্তীণ হওয়ার মুখোশ উন্মোচিত হয়।

আশির দশকে বন্দুকের নলের মুখে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হু.মু. এরশাদ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এবং তার স্বৈরাশাসন পাকাপোক্ত করার জন্য তিনি ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। হু.মু. এরশাদের স্বৈরাশাসনের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন এরশাদ বিরোধী আন্দোলন চলতে থাকে এবং সে সময় চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরশাদের এ পাতানো নির্বাচনে যিনি অংশগ্রহণ করবেন তিনি জাতীয় বেঈমান’ হবেন। ঢাকায় ফিরে পরেরদিন তিনি (শেখ হাসিনা) আঁতাত করে এরশাদের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং জাতির কাছে কে ‘জাতীয় বেঈমান’ হয়ে যান তা আর কারো অজানা থাকে না। অপর দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তার নেতৃত্বে স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য তুমুলবেগে আন্দোলন চালিয়ে যান। আশির দশকেই জাতির সামনে ‘কে বেঈমান’-‘কে দেশপ্রেমিক’ তার মুখোশ উন্মোচিত হয়?

আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন হলে নব্বই দশকের শুরুতেই অবাধ, সুষ্ঠ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক উৎসবমূখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সে নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি বিজয় লাভ করেন এবং বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠিত হয়। বেগম খালেদা জিয়া হন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী-যা ইতিহাসে চিরদিন লেখা থাকবে। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের মেয়াদ শেষ হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেন এবং সে নির্বাচনে বিএনপি আবার ক্ষমতাসীন হলে বেগম খালেদা জিয়া ২য় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু সে সময় আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় যেতে না পারায় জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন এবং ১৭৩ দিন হরতাল ডেকে দেশ-জাতির অগাধ ক্ষতি সাধন করেন। পরে বেগম খালেদা জিয়া দেশ-জাতির কল্যাণে তত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন দেন এবং সে নির্বাচনে বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের মর্যাদায় ভূষিত হন। ২০০১ সালে আবার তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক উৎসবমূখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সে নির্বাচনে বিএনপি জোট ভূমিধ্বস বিজয় নিয়ে ক্ষমতায় আসেন এবং সফলভাবে ক্ষমতা শেষে ২০০৬ সালের অক্টোবরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ক্ষমতা ছাড়েন। আওয়ামীলীগ তাল-বাহানা করে অরাজক সৃষ্টি করে ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন সরকারকে ক্ষমতায় আনেন এবং আওয়ামীলীগ প্রধান বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের ফসল’। উনাাদের (আওয়ামীলীগদের) আন্দোলনের ফসল সংবিধান লংঘন করে ২ বছর ক্ষমতায় থাকেন এবং মামলা দিয়ে শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়াকেও কারাবন্দী করে রাখেন। জনমনে প্রশ্ন আছে বা এমন ভাবনা বিদ্যমান আছে যে, সে সময় সমঝোতা করে তিনি (শেখ হাসিনা) প্যারোলে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন। ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের বাহিরে পাঠানোর জন্য টিকিট কেটে রেডি করে জোড় প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া উল্টো বলেন, “আমি দেশ চাই”। এ দেশ আমার মা। এ দেশে আমার স্বামীর ঘর। আমার মা আর এ ঘর ছেড়ে আমি কোথাও যাব না। এ দেশের জনগণের মাঝে থেকে সুযোগ পেলে তাদের সেবা করে যেতে চাই। দেশের বাহিরে আমার কোন ঠিকানা নাই”। এ ঘটনার মাধ্যমেই জনগণের কল্যাণ ও দেশপ্রেম কার কতটুকু তার মুখোশ উন্মোচিত হয়।

জনগণের মনে এমন ভাবনা গ্রোথিত হয়েছে যে, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে প্রতিহিংসা ও জিঘাংসার বশবর্তী হয়ে যথাযথ নিয়মের লংঘন করে ২০১০ সালের ১৩ই নভেম্বর শেখ হাসিনা সরকার তার প্রশাসনের লোক দিয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় এক কাপড়ে জোড় করে উচ্ছেদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর বাড়ী থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে বের করে দেন। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে নিজেদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নিমিত্তে আওয়ামীলীগ সরকার ১০ মে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে তাদের সরকার অর্থাৎ শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে নির্বাচন করার বাসনা করেন। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের বিরুদ্ধে প্রবল জনসম্পৃক্ত আন্দোলন গড়ে তুললে শেখ হাসিনা সরকার রাজনীতিতে এক নতুন সংস্কৃতি চালু করেন তা হলো গুমের সংস্কৃতি। বিএনপি নেতা নূর চৌধুরী, এম ইলিয়াস আলী থেকে শুরু যার শেষ আজো হয় নাই। সরকারের একটু সমালোচনা করলেই হতে হয় গুম বা অপহরণের সম্মুখীন। জনগণ ভাবছে সরকারের কোন এলিয়েন বাহিনী এসে মনেহয় এ গুম করেন-যা বেছে বেছে শুধু বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বা সমালোচনাকারীদেরই করেন। কখনো শোনা যায়নি সরকারী দলের কেউ গুম বা অপহরণের শিকার হয়েছেন।

অতঃপর বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের একচোখা নীতিতে ভর করে আওয়ামী সরকার প্রার্থীবিহীন, ভোটারবিহীন ০৫ জানুয়ারী ২০১৪ এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেন। এই নির্বাচনের আগেই ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইসির সহায়তায় আগেই নির্বাচিত করে নেন আওয়ামীলীগ সরকার। সে নির্বাচনে অনেক কেন্দ্রে ভোটার ছিল না, ছিল কুকুর ঘুমিয়ে। পোলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং অফিসার, প্রশাসনের সহায়তায় দুর্নীতি, নিয়ম-নীতি লংঘনের সীমাহীন পক্ষপাতিত্ব ও গাফলতির কারনে ভোটারদের ভয়-ভীতিতে ভীত করে, বিরোধী দলের এজেন্টদের বের করে দিয়ে এক জনের একাধিক ভোট দানে সহায়তা করেন। এ ধারা এখনো পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার জাতীয়সহ সকল স্থানীয় নির্বাচনে প্রয়োগ করেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ ধারার সাথে আরো কিছু নতুন ধারা সযুক্ত করেছেন আওয়ামী সরকার। ভোটের আগের রাতেই ছিল মেরে ব্যালটবাক্স ভরানো-যা বিবিসি’র ক্যামেরায় এবার ধরা পড়েছে। বিরোধী দল বিশেষতঃ বিএনপি সমর্থক ভোটারদের পুলিশ দ্বারা নির্বাচন প্রাক্কালে ধরিয়ে জেলে পাঠানো, কেন্দ্রে ক্যাডার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া। বিরোধী দলকে নির্বাচনী প্রচারণায় আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী দ্বারা ক্যাডারদের সহায়তায় প্রচারণা চালাতে বাধা দেওয়া, তাদের নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে ফেলানো, যে পোস্টার ছাপায় সে কারখানায় আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর খড়গ দৃষ্টি ও না ছাপানোর চাপ দেন এবং বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখান। যে বিরোধী দলের পোস্টার টানাতে যায় তাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দ¦ারা গ্রেফতার করা। ভোটের আগের রাতে বিরোধী দলের এজেন্টদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অন্য এলাকায় ফেলে আসা ইত্যাদি-ইত্যাদি। এসব অনিয়ম এখনো স্থানীয় নির্বাচনে চলমান। আর ইসি যেনো বিবেকহীন, মেরদি-হীন, অন্ধ, বধির। দেখেই না দেখার ভান করে বলেন-নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। চলমান এ স্থানীয় নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে-ভোটররা আর ভোট দিতে কেন্দ্রেই যাচ্ছেন না। মিডিয়ার ক্যামেরামান অপেক্ষা করেন ভোটাররা কখন আসবেন আর তখন তাদের চিত্রধারণ করে মিডিয়ায় প্রকাশ করবেন। কেন্দ্রে কুকুর ঘুমানো, অলস সময় কাটাচ্ছেন ভোটে নিযুক্ত কর্মকর্তাগণ……এভাবেই চলছে ভোটের চিত্র। যিনি এসব অনিয়ম জনসম্পৃক্ততা করে তুলে ধরেন তাকে মিথ্যা মামলায় প্রহসনের রায়ে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে রেখেছেন বর্তমান শাসক এবং যে দিন কারাবন্দী করেন সে দিন শাসক প্রধান বলেছিলেন ‘আজ কোথায় খালেদা জিয়া’ ? -যা স্মরণ করে দেয় সেই উক্তি ‘আজ কোথায় সিরাজ শিকদার’ ? শাসকগোষ্ঠী তাকে (বেগম খালেদা জিয়াকে) শুধু কারাবন্দী করেই ক্ষান্ত হননি এবং যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে আরো অসুস্থ্য বানিয়ে হুইল চেয়ারে রেখে স্যাঁতস্যাঁতে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিদ্যমান রেখেছেন। জনমনে গুঞ্জন রয়েছে তাকে বাহিরে পাঠাবেন। তিনি দেশ, জাতি, জনকল্যাণের জন্য, ভোটের অধিকার তথা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন, জেল বন্দী হয়ে আছেন। তিনি শুধু বন্দী নন, যেনো গোটা দেশ আজ কারাবন্দী হয়ে আছেন। জনগণ তাকে ‘গণতন্ত্রের মা’ উপাধি দিয়েছেন। তিনি আজ দেশনেত্রী থেকে ‘দেশমাতা’।
………এমনি অবস্থায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এক বক্তব্যে ইঙ্গিত দিলেন ‘বাকশাল’ এর। যেনো তার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করলেন। বাকশাল মানে-কোন দল থাকবে না। ‘এক দল, এক নীতি’ ; ‘এক দেশ এবং দেশে সেই এক দলেরই সরকার’। মানুষের ভোটাধিকারের কোন বালাই থাকবে না। কেউ কোন স্বাধীন মতও প্রকাশ করতে পারবেন না-টুটি চেপে ধরা হবে-এই তো ‘বাকশাল’। সে ‘বাকশাল’ শাসন এর ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী। এতে জনগণের কাছে আরেকবার মুখোশ উন্মোচিত হলো কে কেমন ? দেশ ও জাতির জন্য কে কতোটুকু কি করতেছেন? আর এর জন্য আজ থেকে ৪০ বা ৫০ বছর পর ইতিহাসে একজন হবেন জনপ্রিয় আর একজন হবেন অজনপ্রিয়।
লেখক: মোঃ মিজানুর রহমান-জার্নালিস্ট ও কলামিস্ট।