Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
কৃষ্ণগহ্বরের প্রথম ছবি প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা

খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯ঃ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো একটি ‘ব্ল্যাক হোল’ বা কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

দূরবর্তী একটি গ্যালাক্সিতে অবস্থিত ব্ল্যাক হোলটি ৪০ বিলিয়ন (৪,০০০ কোটি) কিলোমিটার প্রশস্ত। পৃথিবীর তুলনায় ৩০ লক্ষ গুণ বড় ওই কৃষ্ণগহ্বরটিকে বিজ্ঞানীরা একটা ‘দানব’ হিসেবে অভিহিত করছেন।

৫০০ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন কিলোমিটার দূরের ব্ল্যাক হোলটির ছবি তোলা হয়েছে পৃথিবীজুড়ে অবস্থিত আটটি টেলিস্কোপের একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।

বুধবার কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস-এ।

গবেষণাটির প্রস্তাবক অধ্যাপক হিনো ফাল্ক বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা যেটা দেখছি সেটা পুরো সৌরজগতের চেয়ে বড়। এর ভর সূর্যের চেয়ে ৬৫০ কোটি গুণ বেশি। আমাদের চেনা ভারি ব্ল্যাক হোলগুলোর মধ্যে এটা অন্যতম। এটা পুরো দানব একটা।’

ছবিতে বৃত্তাকার কালো গহ্বর ঘিরে একটা তীব্র উজ্জ্বল ‘আগুনের চক্র’ দেখা যাচ্ছে বলে বর্ণনা করেন ফাল্ক।

ব্ল্যাক হোলের ভেতরে গিয়ে পড়তে থাকা প্রচণ্ড গরম গ্যাসের কারণে ওই আলোর চক্র তৈরি হয়েছে। পুরো গ্যালাক্সিতে থাকা কোটি কোটি তারকার চেয়ে ওই গ্যাসের উজ্জ্বলতা বেশি হওয়ায় সেটি এত দূরে পৃথিবী থেকেও দেখা যাচ্ছে।

ব্ল্যাক হোলের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এটিতে একবার প্রবেশ করলে কোনও কিছুই আর বেরিয়ে আসতে পারে না, এমনকি আলোও না। সাধারণত একটি বস্তুর ওপর আলোকরশ্মি প্রতিফলিত হলে আমরা বস্তুটি দেখতে পাই। ব্ল্যাক হোল থেকে আলো প্রতিফলিত হয় না একারণে সেটার জায়গায় কালো গহ্বর ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের শিক্ষক ড. জিরি ইউনসি বলেন, হলিউডের পরিচালক এবং তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোল দেখতে যেমনটা হবে কল্পনা করেছিলেন তার সঙ্গে মিলে গেছে।

প্রথমবারের মতো এর ছবি তুলতে পারায় মহাকাশের এই রহস্যময় জিনিসটি সম্পর্কে গবেষকরা আরও নতুন তথ্য জানতে পারবেন বলে ধারণা করছেন। কৃষ্ণগহ্বর কতভাবে পদার্থবিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাগুলোর ব্যতিক্রম ঘটায় সে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা। কেউ জানে না এর চার পাশে উজ্জ্বল চক্রটি তৈরি হয় কিভাবে। আরও রহস্যজনক প্রশ্ন হচ্ছে কোনও কিছু  ব্ল্যাক হোলের ভেতর প্রবেশ করলে সেগুলো কোথায় যায়। প্রথমবার ছবি তোলার মাধ্যমে এসব রহস্যের সমাধানের পথেই আরেকটু অগ্রসর হলেন বিজ্ঞানীরা।