ফোন কেড়ে নিয়ে নিজেকে হাইওয়ে পুলিশের এসআই পরিচয়ে একজন জানান, ‘তোমার বোন এখন আমাদের হেফাজতে আছে। বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে খুব তাড়াতাড়ি ২০ হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেয়া হবে। এর বেশি কিছু জানতে চাইলে তোমার ছোট বোনকে কোর্টে চালান দিয়ে দেবে।’ তিনি টাকা পাঠানোর জন্য লুৎফিয়াকে বিকাশ নম্বরও দেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে এমনই ভুয়া ওসি ও এসআইসহ প্রতারকচক্রের তিন সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। আটককৃতরা হলেন, মোছা. শান্তা ইসলাম (২৪), রেদুয়ানুল হাসান শুভ (২৬) ও কানতি শর্মা (৩৬)। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ৪ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) র্যাব-২ একটি দল দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন নবোদয় আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৩ নং সড়কের ১ নং বাড়ির ৪র্থ তলা থেকে তাদের আটক করে।
র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘র্যাবের কাছে বেশ কিছু জায়গা থেকে এই ধরনের প্রতারণার তথ্য আসার পর র্যাব-২ এর একটি বিশেষ দল মাঠ পর্যায়ে তদন্ত শুরু করে তাদের আটক করে।’
অভিযোগকারী লুৎফিয়া কামরুন রাই বলেন, ‘ছোট বোনের বিপদের কথা চিন্তা করে ওই বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠাই। ওই টাকা পাঠানোর পর এসআই জানায় বিষয়টি তাদের অফিসার জেনে গেছে। তাদেরও টাকা দিতে হবে। এই বলে পরে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করেন।’
এরপর লুৎফিয়া বিষয়টি চাচাকে জানান। চাচাও ওই কথিত এসআইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। লুৎফিয়া বলেন, ‘আমার ছোট বোনের কণ্ঠ নকল করে আমার চাচ্চুকে বলে- ‘চাচ্চু আমাকে বাঁচাও, পুলিশ আমার গায়ে হাত দিচ্ছে’। এসময় এসআই ওসি স্যার জেনে গেছেন বলে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন।’
এক পর্যায়ে বিষয়টি প্রতারণা বুঝতে পেরে র্যাব-২ এ অভিযোগ করলে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারকচক্রের তিন সক্রিয় সদস্যকে আটক করে র্যাব-২। আটকরা প্রতারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সত্যতা স্বীকার করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা বিভিন্ন কৌশলে সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে, মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে, সরকারি কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা করে আসছিল বলে জানায়।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে র্যাব।