খােলাবাজার ২৪, বৃহস্পতিবার২৩ মে,২০১৯ঃ আব্দুল আউয়াল,বানারীপাড়া ॥ বানারীপাড়ায় দাখিল পাস করা শিক্ষার্থীরা অন্য মাদ্রাসা বা কলেজে ভর্তিও আবেদন করতে পারছে না। পৌর শহরের বানারীপাড়া মাহমুদিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করা গোলাম রাব্বি ৪ দিন ঘুরেও একাদশ শ্রেনীতে ভর্তির আবেদন করতে পারছেনা। তার অজান্তে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অনলাইনে আলিম শ্রেনীতে ভর্তির জন্য আবেদন করে রেখেছেন।
ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইতে মাদ্রাসায় গিয়ে অফিসে, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষের কাছে বার বার আবেদন করেও কোন সুরাহা করতে না পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেন ভুক্তভোগীরা। সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দৃুল্লাহ্ সাদীদ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে কাগজপত্র দিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেও তা গতকাল বুধবার পর্যন্ত কার্যকরি হয়নি বলে গোলাম রাব্বি ও তার পিতা রুহুল আমিন সমকালসহ বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদের জানান।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে(০১৭১৮১৩৬৫৫৩) বার বার ফোন করেলে প্রথমে রিসিভ করেননি। পরে ফোন বন্ধ করে রাখেন। মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর জলিল সাহেবের সাথে (০১৭১৮১৬২৫১৭) কথা বললে তিনি অসৌজন্য মুলক আচরন করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দৃুল্লাহ্ সাদীদ’র সাথে কথা বললে তিনি অশ্চর্যান্বিত হয়ে বলেন এখনো কাগজপত্র দেয়নি।একই ভাবে বানারীপাড়া আহম্মদাবাদ হোসাইনিয়া আলিম মাদরাসার দাখিল পাস করা শিক্ষার্থী মো. আজিজুল হক (রোল ২৩৭৫১০), মো. রিফাত মৃধা (রোল ২৩৭৫১৬), মো. বায়েজিদ (রোল ২৩৭৫১১) ও মো. রনি (২৩৭৫১২) ফলে ওই শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে পারেননি।
এ বিষয়টি অস্বিকার করে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হালিম খান বলেন, এবারে ওই মাদরাসা থেকে ২৮ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় উত্তির্ণ হয়েছে। যাদের কাছে মাদরাসার বেতন সহ অন্যান্য টাকা পাওনা রয়েছে তাদের ওই টাকা পরিশোধ কওে মার্কসিট নিতে বলা হয়েছে।উপজেলার মসজিদবাড়ি আলিম মাদরাসা ও কচুয়া নেছারিয়া ফাজিল মাদরাসার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরাই তাদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করতে পারছে না। এবিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করলেও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রদান সে বিষয়টি অস্ব^ীকার করেছেন। একই ভাবে অভিযোগ অশ^ীকার করেছেন কচুয়া নেছারিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুল ইসলাম।
এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা ব্যহত হচ্ছে। জানা গেছে, বানারীপাড়া উপজেলায় ৩টি ফাজিল, ৭টি আলিম ও ৯টি দাখিল মাদরাসা রয়েছে। এসব মাদরাসার বেশির ভাগ শিক্ষকরাই দাখিল ও আলিম শ্রেনী থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধরে রাখার জন্য প্রথমে মোটিবেশন করে ভর্তি হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ব্যার্থ হলে কিংবা শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রস্তাবে রাজি না হলে তারা বিকল্প পথ হিসেবে পাস করা ওই শিক্ষার্থীদের রোল নম্বর ও অন্যের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে গোপনে অনলাইনে অলিম কিংবা ফাজিল শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করে রাখেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ বলেন, দাখিল পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীরা যাতে করে তাদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলিম শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করতে পারে সে জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মার্কসীট প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।