Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, বৃহস্পতিবার,৩০ মে ২০১৯ঃ ঘামে ভিজে জবুথবু রমজান আলী। প্রচণ্ড গরমে বাস আটকে আছে জ্যামে। বাইরে খোলা আকাশের নিচে গরমের যেমন তীব্রতা, বাসের ভেতরেও তার কমতি নেই; কিন্তু এর মধ্যেই প্রতিদিন মিরপুরের পল্লবী থেকে মতিঝিলে আসা যাওয়া করতে হয় তাকে।

মতিঝিলের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন রমজান আলী। অফিসে আসা-যাওয়ায় প্রতিদিন তাকে বাসেই বসে থাকতে হয় আট ঘন্টা। জ্যামের মধ্যে গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে দু’পায়ের পাতা ফুলে যায়, হাটুও লেগে যায়; কিন্তু এই ধকল সইতে হয় চাকরির স্বার্থে।

ঢাকার যানজটের এই চিত্র শুধু মিরপুর আর মতিঝিল রুটেই নয়। এই চিত্র যেন এখন প্রতিটি রুটের নিত্য-নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল আসতেও একই রকম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিশেষ করে ঈদের আগে এই ভোগান্তির মাত্রা যেন আরো বেড়েছে। মার্কেটগুলোর সামনের রাস্তায় জ্যামের অবস্থা আরো কঠিন। গাড়ির চাকা যেন ঘোরে না।

রমজান আলী বলেন, মতিঝিলের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করি প্রায় ৮/৯ বছর। আগে এই ভোগান্তি ছিল না। গত বছর মিরপুরে মেট্রোরেলের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমাদের এই ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। আগে মিরপুর থেকে মতিঝিলে আসতে সময় লাগতো একঘন্টা কিংবা জ্যাম থাকলে এক ঘন্টা ২০ মিনিট; কিন্তু এখন সাড়ে তিন ঘন্টা থেকে চার ঘন্টার আগে মতিঝিলে আসতে পারি না। একইভাবে মতিঝিল থেকে মিরপুরে যেতেও এই সময়ই লাগে। এভাবে হিসেব করলে প্রতিদিন যাতায়াতেই আমাকে আট ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। ফার্মগেট থেকে শাহবাগ, প্রেসক্লাব পল্টন গুলিস্তান হয়ে মতিঝিল আসতেই তিন ঘন্টার বেশি সময় লাগে তার।

নগরীর উত্তরা থেকে পল্টন কিংবা মতিঝিল রুটেও একই অবস্থার কথা জানালেন আবুল কালাম নামের আরেক যাত্রী। তিনি থাকেন উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে। চাকরি করেন পল্টনের একটি ট্রাভেল এজেন্ট অফিসে। উত্তরা থেকে মতিঝিলে আসতে-যেতে আবুল কালামকে প্রতিদিন সময় ব্যয় করতে হয় আট ঘন্টা। আবার জ্যামের কারণে কোনো কোনো সময় আরো বেশি সময়ও লাগে তার। তিনি জানালেন, এয়ারপোর্ট এলাকায় রাস্তায় উন্নয়নের কাজ চলছে। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশের চেকপোষ্ট বসিয়ে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করার নামেও অযথাই গাড়ির গতি কমিয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ এই যাত্রীর।

বলেন, এরপরে বনানী ওভারব্রীজের উপর থেকে শুরু হয় যানজট। মহাখালী পার হয়ে নাবিস্কো, সাতরাস্তা পার হয়ে আবার মগবাজার ফ্লাইওভারের উপরে শুরু হয় জ্যাম। মালিবাগ, শান্তিনগর, পল্টনের জ্যাম ঠেলে অফিসে আসতে সময় লাগে চার ঘন্টা। এভাবে আবার বাসায় ফেরার পথে চার ঘন্টা সময় ব্যয় হয়। অর্থাৎ নগরীর যেকোন প্রান্ত থেকে মাত্র ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার পথ আসা-যাওয়া করতেই এখন প্রত্যেককে আট ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। যার ফলে একজন কর্মজীবীর প্রতিদিনের একটি বড় অংশ সময় নষ্ট হচ্ছে যানজটে।