খােলাবাজার ২৪, মঙ্গলবার ১৮ জুন ২০১৯ঃ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা পরিবেশকে সমুন্নত রেখে টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ হিশেবে আত্মপ্রকাশ করবো। এই লক্ষ্যে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি আজ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিশ্বপরিবেশ দিবস এবং জাতীয় বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলা উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। পরিবেশ দূষণ রোধে ব্যাপক জনসচেতনতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি এ বছরের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে : Air Pollution যার ভাবার্থ করা হয়েছে বায়ু দূষণ এবং দিবসটির স্লোগান Beat Air Pollution যার ভাবানুবাদ ‘আসুন বায়ু দূষণ রোধ করি’। এবার জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- “শিক্ষায় বন প্রতিবেশ-আধুনিক বাংলাদেশ”। এই শ্লোগান দেশের জনসাধারণকে সচেতন করার মাধ্যমে বন-বৃক্ষকে জানার এবং টেকসই বন ও বন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে উজ্জীবিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন, সুন্দর পরিবেশ, নির্মল বায়ু এবং বৃক্ষরাজিতে আচ্ছাদিত একটি সুবজ দেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণ এবং সার্বিক সহযোগিতা অপরিহার্য। মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ ও বায়ু দুষণ রোধে পরিবেশ মন্ত্রণালয় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এ কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে পরিবেশ অধিপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম আরো বাড়ানো হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেয়া হবে না।
বিশ্বপরিবেশ দিবস এবং জাতীয় বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলা উপলক্ষে শেরে বাংলা নগর বাণিজ্য মেলার মাঠে সাত দিন ব্যাপী পরিবেশমেলা ও এক মাসব্যাপী বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ২০ জুন সকাল ১০ টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে তিনি পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ৫টি ‘জাতীয় পরিবেশ পদক ২০১৯’, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদান রাখার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার’ এবং সামাজিক বনায়নে সুবিধাভোগীদের মধ্যে চেক বিতরণ করবেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হওয়া দরকার। তাই পরিবেশ দিবস ও বৃক্ষরোপণ অভিযানকে ঘিরে জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি। এবারের বৃক্ষমেলায় স্টলের সংখ্যা থাকবে ১০০টি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারা দেশে বিক্রয় ও বিতরণের জন্য ৬৯ লক্ষ ৪৫ হাজার চারা উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ লক্ষ চারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণের মাঝে বিতরণ করা হবে। পরিবেশ দিবস এবং বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলাকে কেন্দ্র করে মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সকল কর্মসূচি প্রচার মাধ্যমে বহুল প্রচার করে গণমাধ্যম কর্মীগণ জনসেচতনতা সৃষ্টিতে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি, পরিবেশ সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ.কে.এম. রফিক আহাম্মদ ও প্রধান বন সংরক্ষক সফিউল আলম চৌধুরী।