Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,শনিবার, ২৯ জুন,২০১৯ঃ কোনমতেই কমছে না মশার দাপট। বর্ষার শুরুতেই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও। সবমিলে মশার উৎপাতের সাথে ডেঙ্গু আতঙ্গে অশান্তিতে আছেন রাজধানীর মানুষ। মশাদমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

রাজধানীর খাল পরিষ্কার করবে ওয়াসা। কিন্তু খালে জমে থাকা মশার ডিম সরাবে কে? মাঝেমধ্যে সিটি করপোরেশন ওষুধ ছিটালেও ধারাবাহিকতা না থাকায় মশার উপদ্রব থেকে রেহাই মেলেনি। দুই করপোরেশনের বেশিরভাগ নালা আর খাল ভরে আছে নোংরা আবর্জনায়।

অভিজাত এলাকাতেও মশার তান্ডবে অস্থির নগরবাসী। অতিষ্ঠ মহল্লাবাসী নিজেদের উদ্যোগে স্প্রে করলেও মিলছে না সুফল। মশক নিবারণি দফতরও হিমশিম খাচ্ছে। এই দফতরের কার্যকারিতাও এখন প্রশ্নবিদ্ধ। ডাক্তাররা বলছেন, অন্যবারের চেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রেক্ষাপট না পাল্টালে ভবিষ্যতের নগরজীবন হবে আরও ঝুঁকিপূর্ণ।

জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গত মাসে একটি জরিপ পরিচালনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরিপে দেখা গেছে, নারিন্দা, মতিঝিল, গুলশানসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে বিপজ্জনক মাত্রায়। অর্থাৎ এসব এলাকার বাসিন্দারা এখন ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ এডিস মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন বেশি।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান জানান, এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব সূচক বিআই ২০ অথবা এর বেশি হলেই সেটা বিপজ্জনক। যেসব এলাকায় লার্ভার ঘনত্ব সূচক ২০ বা এর বেশি থাকবে, সেসব এলাকায় ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া সংক্রমণকারী এডিস মশার উপদ্রবও বেশি থাকবে।

এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব সূচকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ১২ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে ঘনত্ব সূচক ৭০ বিআই। মালিবাগ বাজার রোড (মতিঝিল অংশ), মালিবাগ, বকশীবাগ, গুলবাগ, শান্তিবাগ ও ইন্দ্রাপুরী নিয়ে এ ওয়ার্ডটি গঠিত। এডিস মশার ঘনত্ব সূচক ৪০ পাওয়া গেছে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ধানমন্ডি, কলাবাগান, গ্রিন রোড, তল্লাবাগ, শুক্রাবাদ, সোবহানবাগ নিয়ে ওয়ার্ডটি গঠিত।

এছাড়া লার্ভার ঘনত্ব ৩০ বিআই পাওয়া গেছে ৪ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে। বাসাবো, ওহাব কলোনি ও মাদারটেক এলাকা নিয়ে গঠিত ৪ নম্বর ওয়ার্ড। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে কেএম দাস লেন, অভয়দাস লেন, টয়েনবি সার্কুলার রোড, জয়কালী মন্দির রোড, ভগবতী ব্যানার্জী রোড, ফোল্ডার স্ট্রিট, হাটখোলা রোড এবং আরকে মিশন রোড। এর বাইরে এডিস লার্ভার ঘনত্ব সূচক ২০ বিআই পাওয়া গেছে ৬, ৭, ১৪, ১৯, ২০, ২১, ২২, ৪৩, ৪৭ ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, এর মধ্যে এডিস লার্ভার সর্বোচ্চ ঘনত্ব ৪০ বিআই পাওয়া গেছে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে। বড় মগবাজার, দিলু রোড, নিউ ইস্কাটন রোড, পশ্চিম মালিবাগ, মধ্য পেয়ারাবাগ ও উত্তর নয়াটোলার প্রথম ভাগ নিয়ে এ ওয়ার্ড গঠিত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘনত্ব ৩০ বিআই পাওয়া গেছে ১, ৪ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এর মধ্যে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত বনানী, গুলশান ১ ও ২, গুলশান সুইপার কলোনি ও কড়াইল বস্তি নিয়ে। এছাড়া ১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে উত্তরা মডেল টাউন এবং ২ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে মিরপুর ১২ ও উত্তর কালশী।

এর বাইরে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব সূচক ২০ বিআই পাওয়া গেছে ডিএনসিসির ১৬, ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। রাজধানীর কাফরুল ও ইব্রাহীমপুর নিয়ে ১৬ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে রামপুরা, উলন, বাগিচার টেক, নাছিরের টেক, ওমর আলী লেন ও পশ্চিম হাজীপাড়া। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে খিলগাঁও বি জোন, খিলগাঁও পূর্ব হাজীপাড়া, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, মালিবাগ ও মালিবাগ বাজার রোড।