খােলাবাজার ২৪, মঙ্গলবার , ০২জুলাই,২০১৯ঃ প্রতিদিন কোন খাবার খাব বা কোন খাবারে শরীরের কী উপকার করে, তার কতটুকুই বা আমরা জানি। ভালো খাবার যেমন ভালোভাবে বাঁচিয়ে রাখে, তেমনি খারাপ খাবার ডেকে আনে বিড়ম্বনা। সবকিছু চিন্তা করে আমেরিকান ওয়েবসাইট- ‘লাইভ হেলথ ক্লাব’ নির্বাচন করেছে পৃথিবীর সেরা কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার। আসুন জেনে নেওয়া যাক।
জাম
জাম একটি আঁশযুক্ত ফল। সব ধরণের জামই কম শর্করাসমৃদ্ধ এবং বেশি আঁশযুক্ত, যা যে কোন বয়সী মানুষের স্বাস্থের জন্য উপকারি। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং গবেষণা ও লেখাপড়ায় উৎসাহ যোগায়। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির মতে, ফলটি ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
শিম, বরবটি এবং মটরশুঁটি
শিম, বরবটি এবং মটরশুঁটি অতি আঁশযুক্ত একটি খাবার। এগুলো শরীরের ওজন এবং রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া মলাশয় ক্যানাসার এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। আমেরিকার ‘দ্য ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মেডিস’ মনে করে, প্রতিদিন প্রত্যেকের খাবারে ২৫-৩৮ গ্রাম আঁশ খাওয়া উচিত। এক কাপ শিমে ১১-১৭ গ্রাম আঁশ থাকে।
বাদাম
যারা সপ্তাহে কয়েক দিন বাদাম খান, আর যারা খান না তাদের মধ্যে দীর্ঘ এবং গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় দেখা গেছে, বাদাম খাওয়া ব্যক্তিরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগ হার্ট এটাকের ঝুঁকিমুক্ত। সাথে সাথে অন্যান্য হৃদরোগ থেকেও ঝুঁকিমুক্ত। কেউ যদি সপ্তাহে কয়েক দিন এক আউন্স পরিমাণ বিভিন্ন ধরণের বাদাম খান, তবে অনেক সুফল পাবেন। বাদাম চুলের জন্যও উপকারী।
ওয়াইল্ড স্যামন
সামুদ্রিক এ মাছটি ইউরোপ এবং আমেরিকান খাবার হিসেবেই পরিচিত। সাধারণভাবে যেকোন মাছই বার্ধক্য রোধ করে, তবে এ মাছটি বেশি উপকারী। এই মাছে ওমেগা থ্রি নামে যে চর্বি থাকে তা হৃদপিন্ড এবং মস্তিস্ককে রক্ষা করে। এছাড়া এটি মানসিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
প্রাকৃতিক দুধ
অপরিশোধিত দুধ, যা সাধারণত ঘাস খাওয়া গরু থেকেই আসে। প্রাকৃতিক এই দুধ ক্যান্সারের সাথে শক্ত-সামর্থ্যভাবে লড়তে পারে। দুধ যেমন শক্তিশালী ভিটামিনের উৎস, তেমনি এতে আছে খনিজ পদার্থ যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
তৃণভোজী প্রাণির মাংস
ঘাস খাওয়া গরুর মাংস এবং বাজারে বিক্রি হওয়া সাধারণ মাংসের মধ্যে নানা পার্থক্য রয়েছে। এর মাংসে এক ধরণের চর্বি আছে, যা ক্যান্সার রোধে সহায়ক। এটি প্রাণিজ আমিষ এবং ভিটামিন বি-১২ এর চমৎকার উৎস।
ডিম
বিভিন্ন দিক বিবেচনায় দেখা যায়, ডিম অন্যতম একটি পরিপূর্ণ খাবার। ডিমে আমিষ থাকে বেশি কিন্তু সেই তুলনায় ক্যালরি থাকে অল্প পরিমাণে। ডিমের কুসুমে থাকা ‘কোলিন’মস্তিষ্কের জন্য খুব উপকারী। এর মধ্যে আছে চোখের জন্য খুব দরকারি উপাদান। বাঁধাকপি এবং ফুলকপির মতো এটিও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া এতে আছে নানা ধরণের ভিটামিন, খনিজ এবং ক্যালসিয়াম।
আপেল
আপেল যে শুধু খেতে সুস্বাদু তা নয়, এটি ক্যান্সার এবং হাঁপানি রোধে সহায়তা করে। একটি আপেলে ৫ গ্রাম আঁশসহ নানা রকমের উন্নত ভিটামিন থাকে। যেমন- এতে আছে হাড় মজবুতকারী ভিটামিন ‘কে’। ফুসফুসের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণেও এটি সমানভাবে কাজ করে। বড় ধরনের কোন ভোজের আধাঘণ্টা আগে একটি আপেল খেলে খাদ্যের প্রতি আগ্রহ বিপুল পরিমাণে বাড়বে।
পেঁয়াজ এবং রসুন
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজ এবং রসুন পাকস্থলী, প্রোস্টেটসহ বিভিন্ন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। ফুলকপি, চা এবং পেঁয়াজ-রসুন এমন ধরণের খাবার, যা মানুষের হৃদরোগজনিত শতকরা ২০ ভাগ মৃত্যু প্রতিরোধ করে।
ডালিম শরবত
‘তেল আবিব ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরা ডালিমের শরবতকে ‘প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা’ বলে অভিহিত করেছেন। এটি রক্ত সঞ্চালনে যেমন সহায়তা করে, তেমনি দাঁতের ব্যাকটেরিয়াও দমন করে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি টিউমারও প্রশমন করে। চিকিৎসকদের মতে, দৈনিক ৪-৮ আউন্স ডালিম শরবত বেশ উপকারী।
সবুজ চা
যদিও সব ধরণের চা আপনার জন্য ভালো, তারপরও সবুজ চা আপনার জীবনে আলাদা জায়গা করে নেবে, শুধু ক্যান্সার প্রতিরোধের কারণে। এটি মূত্রাশয়, মলাশয়, অগ্ন্যাশয় এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার রোধ করে । এছাড়া এটি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে