Sat. Apr 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,বুধবার,১০জুলাই,২০১৯ঃ সদ্য সমাপ্ত ২০১৮-১৯ অর্থবছরটি রপ্তানির জন্য স্বস্তির ছিল। আলোচ্য সময়ে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত কয়েক বছরের মধ্যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও ছিল অপেক্ষাকৃত বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ পণ্য। পূর্বের অর্থবছরে (২০১৭-১৮) রপ্তানি হয়েছিল ৩ হাজার ৬৬৭ কোটি ডলারের পণ্য। সেই হিসেবে, গত অর্থবছর রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি কমেছিল তিন শতাংশ ।

অবশ্য অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে ছন্দপতন হয়েছে। আলোচ্য সময়ে রপ্তানি না বেড়ে উলটো পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় সোয়া পাঁচ শতাংশ কমে গেছে। আলোচ্য সময়ে ৩৬০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পণ্য। ঐ সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশের বেশি এসেছে গার্মেন্টস খাত থেকে। গত অর্থবছরে গার্মেন্টস রপ্তানি বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১১ শতাংশ। রপ্তানিকারকরা বলছেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ গার্মেন্টস কারখানার নিরাপত্তায় বড়ো অগ্রগতি করেছে। এর ইতিবাচক বার্তা গিয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এছাড়া সম্প্রতি চীন থেকে সরে আসা অর্ডারের একটি অংশ বাংলাদেশও পেয়েছে। ফলে তা গার্মেন্টসের রপ্তানি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

নিটওয়্যার গার্মেন্টস পণ্য উপাদনকারী ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান ইত্তেফাককে বলেন, প্রধানত দুটি কারণে আমাদের গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ গত ছয় বছরে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সহযোগিতায় কারখানা ভবনের কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তায় ব্যাপক কাজ হয়েছে। এছাড়া আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা কিংবা ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অর্থাত্ আমাদের কারখানা যে নিরাপদ—এই বার্তা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে গিয়েছে। এছাড়া চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে চীন থেকে গার্মেন্টসের ক্রয়াদেশও অন্য দেশগুলোতে যাচ্ছে। এসব ক্রয়াদেশের কিছু অংশ বাংলাদেশ পেয়েছে।

অবশ্য বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক মনে করেন, রপ্তানি বাড়ছে, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দর পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতে অনেক উদ্যোক্তার পক্ষেই ব্যবসায়ে টিকে থাকা কঠিন হবে।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত অর্থবছর ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পূর্বের অর্থবছরে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলার।

অবশ্য গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি বাড়লেও হিমায়িত মাছ, চামড়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য ও হোম টেক্সটাইলের মতো রপ্তানিতে বড়ো অবদান রাখা বেশকিছু খাতের রপ্তানি কমে গেছে।

গার্মেন্টস ছাড়াও আলোচ্য সময়ে রপ্তানি বেড়েছে কেমিক্যাল পণ্য ৩৬ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, হস্তশিল্প ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ, বিশেষায়িত টেক্সটাইল ৩১ শতাংশ, টেরিটাওয়েল ২০ শতাংশ এবং ফার্নিচার ১৯ শতাংশ।