খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার,১১জুলাই,২০১৯ঃ হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেলে জ্বরের আশঙ্কা থাকে। ছবি: সাইফুল ইসলামযদিও সময়টা ডেঙ্গুর, তথাপি ভ্যাপসা গরম আর ঝড়–বৃষ্টিতে পড়ে অনেকেরই ভাইরাল জ্বর হচ্ছে। গরমে ভিজে বা বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লাগছে; আর এমন অস্বাভাবিক আবহাওয়ায় পরিবর্তনের সঙ্গে যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খাপ খাওয়াতে পারে না, তখন কিছু কিছু ভাইরাস শরীরের ওপর আক্রমণের সুযোগ পায়। এর ফলে
কেউ কেউ জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যথাসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হয়। হঠাৎ এমন জ্বর, সর্দি-কাশি,
গলাব্যথা ভাইরাল জ্বর হিসেবে পরিচিত।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, এমন আবহাওয়ার কারণে জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ছে৷ এমন সাধারণ জ্বরেও শরীরজুড়ে ব্যথা থাকে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, সেটা ডেঙ্গু জ্বর কি না? তবে সাধারণ ভাইরাস জ্বর হলে সাধারণত সাত দিনের মধ্যে এমনিই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু জ্বরের সঙ্গে যদি শরীরে র্যাশ বা ত্বকে ছোট লাল দানা দেখা দেয়, তবে তা ভীতির কারণ হতে পারে।
সাধারণ ভাইরাল জ্বরের লক্ষণ
রোগী মূলত জ্বর, কেউ কেউ মাথাব্যথা, সর্দি, অরুচি, গলাব্যথা, কাশির উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। কেউবা শরীরে ব্যথা নিয়েও আসেন। ঠান্ডা লেগে সর্দির কারণে কান ভারী লাগতে পারে। কান বন্ধের সঙ্গে কানে ব্যথাও থাকতে পারে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত। অনেক সময় শিশুর প্রচণ্ড সর্দি লেগে যায়। জ্বর ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। ছোটদের জ্বরের তীব্রতা বেশি হয়ে থাকে।
জ্বর হলে কী করবেন
জ্বর হলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায়; তাই বাড়তি ক্যালরির প্রয়োজন হয়। অনেকে জ্বর হলে কিছু খাবেন না বলে ঠিক করেন। এতে নিজেরই ক্ষতি হয়। জ্বরে সাধারণত শরীরের তাপমাত্রাকে ১০০ নিচে নামিয়ে আনা, তাপমাত্রা কমানো, গা মোছা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করা হয়। জ্বরের সময় বেশির ভাগ মানুষেরই রুচি কমে যায়। তাই এ সময় রোগীর খাবারের প্রতি অনীহা থাকলেও পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণে রোগীকে সঠিক খাবার চালিয়ে যেতে হয়।
শিশুদের দিকে একটু বিশেষ নজর দিতে হবে; কারণ তাদের প্রায়ই পানিশূন্যতায় ভোগে। কেননা জ্বরের তাপে শরীর পানি হারায়। তাই শিশুকে প্রচুর পানি ও তরল খাবার দিন। শুধু পানি পান করতে না চাইলে ফলের রস, তরমুজ বা আঙুর, ডাবের পানি, স্যুপ দিন। সেই সঙ্গে শিশুর দরকার প্রচুর বিশ্রাম। কিন্তু জ্বর দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র মাত্রার হলে, শিশুর শ্বাসকষ্ট হলে বা সে খাওয়াদাওয়া একদম ছেড়ে দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সর্দি–কাশি ও গলাব্যথায় কী করবেন
সর্দি-কাশি বা সামান্য গলাব্যথা এমন কোনো বড় ব্যাপার নয়। তবে একবার ঠান্ডা লাগলে তা সারতে অন্তত এক সপ্তাহ লাগবেই। আর কাশি তো বেশ কয়েক দিন থাকতে পারে—এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এ ধরনের কাশি একটি নির্দিষ্ট সময় পর আপনা-আপনি ভালো হয়ে যায়। তবে কাশির সঙ্গে যদি জ্বর হয়, তাহলে গুরুত্ব দিতে হবে। ঠান্ডা খাবার, ফ্রিজের পানি পরিহার করতে হবে। কুসুম গরম পানি পান করতে পারলে ভালো হয়। হালকা কুসুম কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গলা গড়গড়া করলে গলাব্যথা সহজেই ভালো হয়ে যায়। দিনে কমপক্ষে দুবার ৫-১০ মিনিট সময়ে গড়গড়া করা উচিত। ধুলাবালি এড়িয়ে চলুন।