Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার,১১জুলাই,২০১৯ঃ  পেটের দায়ে ডাক্তারের চেম্বার ডিজিটাল হেলথ কেয়ারে অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন জোসনা (ছদ্মনাম)। কিন্তু সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকের হাতে ৩০ বারের বেশি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। বাধ্য হয়ে র‌্যাব-১১তে অভিযোগ জানান জোসনা। পরে অভিযুক্ত ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার লাকসাম শহরের জংশন এলাকার ডিজিটাল হেলথ কেয়ারে।  জানা যায়, চাকরি দেয়ার নামে অসংখ্য মহিলাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ রয়েছে ডাঃ মীর হোসেনের বিরুদ্ধে।  বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই চিকিৎসকের চেম্বার থেকে বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, কনডমসহ বিভিন্ন অবৈধ নেশাজাতীয় দ্রব্যসহ তাকে আটক করা হয়।  সে লাকসাম পৌর শহরের বাইনচাটিয়া গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে।

র‌্যাব-১১ এর কাছে জোসনা বেগমের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, ডিজিটাল হেলথ কেয়ারে কর্মরত জোসনা (ছদ্মনাম) গত চার মাস আগে হেলথ সহকারী হিসেবে যোগ দেন।  এরপর থেকেই তার উপর লোলুপ দৃষ্টি দেয় ডাঃ মীর হোসেন।  এসময় নানাভাবে জোসনাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে সে।

জোসনা জানান, চাকরি রক্ষা ও পেটের দায়ে সবকিছু সহ্য করে আসছিলেন তিনি।  একপর্যায়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হন।

তিনি বলেন, গত চার মাসে এমন করে ৩০ বার সে আমাকে ধর্ষণ করে।  প্রতিবার ধর্ষণ করার পর সে আমার শরীরে ব্যথানাশক অজ্ঞাত একটি ইনজেকশন পুষ করতো।  ধর্ষণের পর মীর হোসেন আমাকে হুমকি ধমকি দিয়ে বলে- এ কথা যদি কেউ জানতে পারে তাহলে আমাকে চাকুরিচ্যুত করে মিথ্যা মামলা দিবে।  আমি দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম হওয়ায় তার এ নির্যাতন সহ্য করে আসছিলাম।  কিন্তু দিন দিন তার অত্যাচার নির্যাতন বেড়ে চলায় নিরুপায় হয়ে গত ৮ জুলাই সোমবার কুমিল্লা র‌্যাব-১১ এর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ডাঃ মীর হোসেন একই ভাবে তার চেম্বারে বহু তরুণীকে চাকুরী দেয়ার নাম করে সর্বনাশ করেছে।  তার হুমকির কারণে কেউ মুখ খুলার সাহস করেনি।  এছাড়া ভুয়া ডাঃ মীর হোসেনের চেম্বার বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্ধ করে দেয়।  তবে কিছু দিন পর সে কৌশলে আবার চেম্বার খুলে তার পুরনো অপকর্ম শুরু করে থাকে।

কুমিল্লা র‌্যাব-১১ কোম্পানি কমান্ডার প্রণব কুমার জানান, ওই মেয়ের লিখিত অভিযোগ পেয়ে আমরা লাকসাম ডিজিটাল হেলথ কেয়ারের মালিক ডাঃ মীর হোসেনের চেম্বারে অভিযান চালাই।  এসময় যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, বিপুল পরিমাণ কনডমসহ বিভিন্ন অবৈধ নেশাজাতীয় দ্রব্য পাওয়া যায়।  সে কোনো ডাক্তার নয়।  সে চাকুরী দেয়ার নামে এই চেম্বারে অসংখ্য মহিলাকে ধর্ষণ করেছে। তাকে ও তার চেম্বারে কর্মরত অপর এক মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কুমিল্লা র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে লাকসাম জংশন এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ভুয়া ডাক্তার মীর হোসেন আরও অনেক মেয়ের সর্বনাশ করেছে।  সে কিছু দালালের মাধ্যমে চাকুরী প্রত্যাশী মেয়েদের নিয়ে এসে অপকর্ম করে ছেড়ে দেয়।  ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলে না।

এসময় তারা ডাক্তার মীর হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।