Sat. Jun 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,শুক্রবার,১২জুলাই,২০১৯ঃ প্রশ্রাবের রাস্তা দিয়ে সাদা স্রাব যাওয়া (বিশেষ করে মাসিকের সময়) খুব কমন একটা সমস্যা। যেটা নিয়ে মেয়েরা রোজই আমাদের কাছে আসেন

প্রতিদিন যেসব রোগী আমরা পাই তারমধ্যে কমপক্ষে দু`জন এমন সমস্যা নিয়ে আসেন। এই ক্ষেত্রে আমরা প্রথমে দেখি, সাদা স্রাবটা কেন হয়?

সবসময় এটা স্বাভাবিক তা যেমন নয় তেমনি সব সময় এটা খারাপ তাও নয়। প্রথমেই আমরা পেশেন্টকে জিজ্ঞেস করি, অাপনার যে সাদা স্রাব যাচ্ছে তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায় কিনা বা চুলকায় কিনা।

সাদা স্রাব যাওয়ার খুব কমন একটা কারণ হচ্ছে ফাঙ্গাল ইনফেকশন। দুধ ফেটে গেলে যেমন ছানা ছানা হয়ে যায়, তেমনি ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে সাদা স্রাব সেভাবে ছানা ছানা অাকারে বের হয়। এ

কই সঙ্গে প্রচন্ড চুলকাবে লজ্জাস্থানে। চুলকাতে চুলকাতে অনেক সময় চামড়া উঠে যায়। এক্ষেত্রে আমরা ( ডাক্তার) ফাঙ্গাসের ট্রিটমেন্ট দিই ও রোগী ভাল হয়ে যায়।

সাদা স্রাবের আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, একটা মেয়ের যখন মাসিক হবে তার আগে তার স্রাবটা একটু বেশি যাবে। এটা অনেকটা স্বাভাবিক।

অাবার মাসিকের পরপর তার স্রাবটা একেবারেই থাকে না। অাবার মাসিক যখন শেষ হয়ে যায় তখন স্রাবটা থাকে পাতলা, পরিষ্কার ও পানির মতো।

মাসিক যখন মাঝামাঝি অাসে তখন স্রাবটা হয় নাকের সর্দির মতো। আবার যখন মাসিকের কাছাকাছি অাসে তখন স্রাব হয় ফাটা ফাটা দুধের মত। কিন্তু এর সঙ্গে যদি দুর্গন্ধ না থাকে,  চুলকানো না থাকে তাহলে এটা একদম স্বাভাবিক।

একটা মেয়েকে বুঝতে হবে, যে প্রত্যেক মেয়েরই কিছুটা সাদা স্রাব যায়।

সাদা স্রাব সব সময় স্বাভাবিক তা কিন্তু নয়। কখনো কখনো এটা অস্বাভাবিকও হতে পারে।  এমনকি এটা জরায়ুর মুখের ক্যান্সারের কারণও হতে পারে। অতিরিক্ত সাদা যাওয়া। এই সাদা স্রাবের ধরনটা হয় চাল ধোয়া পানির মতো নোংরা।

এই স্রাবটা প্রচন্ড দুর্গন্ধযুক্ত হয়। এটা তখন এতো বেশী পরিমাণ যায়, টিস্যু বা প্যান্টি কোন কিছু দিয়ে একে আটকে রাখা যায়না। এ অবস্থায় আমরা পরীক্ষা করে দেখি, তার জরায়ুর মুখে টিউমার বা এমন কিছু আছে কি-না।

যদি দেখি, খালি চোখে কিছু দেখা যাচ্ছে না তখন তাকে `পেপস` নামক একটা টেস্ট করতে দিই। এই টেস্ট বলে দেয় তার জরায়ুতে ক্যান্সারের কোন পূর্ব লক্ষণ আছে কি-না।

জরায়ুর মুখের ক্যান্সারের একটা পূর্বধাপ আছে। এই অবস্থায় যদি ধরা পড়ে এবং ঠিক মতো চিকিৎসা হয় তাহলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এজন্য যখনই সাদা স্রাব যাবে, দেখতে হবে এটা কী স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক। সব সময় অস্বাভাবিকটা মাথায় রেখেই স্বাভাবিকটার চিকিৎসা করতে হবে।

(লেখক: ডা. কাজী ফয়েজা আক্তার, এমবিবিএস, এফসিপিএস, এমসিপিএস। কনসালটেন্ট, ইমপালস হাসপাতাল। ও সহকারী অধ্যাপক, গাইনী, প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন।)