খােলাবাজার ২৪,রবিার,১৪জুলাই,২০১৯ঃ সংগীতশিল্পী মৌসুমী আক্তার সালমার স্বামী সানাউল্লাহ নূরীর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তাসনিয়া মুনিয়াত পুষ্মী। সালমাকে বিয়ের আগে ২০১৪ সালে এই তাসনিয়া মুনিয়াত পুষ্মীকে বিয়ে করেছিলেন সানাউল্লাহ। পুষ্মীর অভিযোগ, সানাউল্লাহ নূরী তার সঙ্গে প্রতারণা করে সালমাকে বিয়ে করেছেন। এছাড়া তাকে শারীরিক নির্যাতন ও প্রতারণা করে সানাহউল্লাহ নূরী বিরুদ্ধে তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ করেছেন তিনি।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলন করে এমন সব অভিযোগ করেন তাসনিয়া মুনিয়াত পুষ্মী।
সংবাদ সম্মেলনে পুষ্মী বলেন, ”২০১৪ সালে ৩ জুন ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে সানাউল্লাহ নূরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। কিছুদিন সংসার জীবন সুখকর থাকলেও এক পর্যায়ে সানাউল্লাহ ও তার মা-বাবার লোভাতুর মনমানসিকতার কারণে তা জটিলতর রূপ ধারণ করে। সাধারণত বিয়ের পর স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামীর পালনের বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও আমার ক্ষেত্রে তা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রতি মাসে আমি আমার মা’র কাছ থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা এনে সংসারের খরচ বহন করতাম। আমার মা ও একমাত্র মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মুখ বুঝে সব চাওয়া আমার পূরণ করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে সানাউল্লাহ নূরীর লন্ডন যাওয়ার কথা থাকলে আমার মা চাকরি বিপরীতে ব্যাংক থেকে দশ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা তার ব্যাংক একাউন্টে এবং সাড়ে তিন লক্ষ টাকা তার মাতা-পিতাকে দেন। তার ভিসার জটিলতায় ইংল্যান্ড যাওয়া বাতিল হলে সেই টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে সানাউল্লাহ তার মাতা-পিতা ও আমি কক্সবাজারে বাসা বদলায়। কক্সবাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেন। কক্সবাজারে বাসা নেওয়ার পর তার বাবা-মাসহ সকলে অল্পদিনের মধ্যে সুকৌশলে আমার বাবা-মার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলতে সক্ষম হয়। সে সুবাদে তারা আমাকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। আরও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য আরও দশ লক্ষ টাকার প্রয়োজন দেখায়। এত পরিমাণ টাকা আমার পিতা-মাতার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিলে তারা সকলেই আমার উপর ২০১৮ সালের ৫ জুলাই অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এর আগে, ঢাকায় অবস্থানকালে ও বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালাতেন, একটি বেসরকারি হাসপাতালে আমি তিনদিন চিকিৎসাধীনও ছিলাম। এতকিছু করার পরও সবকিছু বির্সজন দিয়ে স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ির আদর স্নেহ ভালোবাসা পাওয়ার জন্য সর্বশেষ প্রচেষ্টা চালিয়েছি।”তিনি আরও অভিযোগ করেন, ”সানাউল্লাহ নূরী প্রথম থেকেই আমার ভালোবাসাকে পুঁজি করে এক বাণিজ্যের খেলায় মেতে উঠেছিল। বিদেশ পড়তে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সানাউল্লাহ নিজেকে অ-বিবাহিত দাবি করে তদন্তকারী সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পাসপোর্ট হাসিল করে। সানাউল্লাহ নূরীর পাসপোর্ট হস্তাগত করে জুন, ২০১৮। এতে প্রমাণিত হয় তার মনে সব সময় প্রতারণার প্রয়াস ছিল। গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সানাউল্লাহ নূরী ‘বার-এট-ল’ করতে লন্ডন যায়। লন্ডন যাওয়ার পর ২-১ দিন যোগাযোগ রক্ষা করলে সানাউল্লাহ হঠাৎ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিভিন্ন মহল থেকে তার নতুন প্রণয়ের ফিস ফিস আলাপ শোনা গেলেও তা আমার কাছে তেমন বিশ্বাস যোগ্য মনে হয়নি। সানাউল্লার বিবাহিত স্ত্রী হয়ে ও ভরণ পোষণের কোন ব্যবস্থা না করায় অসৎ মনমানসিকতা তার পিতা-মাতার মধ্যে পরিলক্ষিত হওয়ায় গত বছরের ৫ জুলাই ক্সবাজারের বাসায় আমাকে নির্যাতন ও মারধরের ঘটনায় আমার মা বাদী হয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে। ইতিমধ্যে সানাউল্লাহ লন্ডন থেকে ফিরে কণ্ঠশিল্পী সালমাকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিয়ে করে। কক্সবাজারের মামলায় উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করায় সানাউল্লাহ কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছে।”
পুষ্মী আরও অভিযোগ করেন, সানাউল্লাহ ও তার মাতা-পিতার নির্যাতন প্রতারণা বিষয়ে প্রমাণাদি নিয়ে বিভিন্ন মহলে উপস্থাপন করায় তারা আমাকে জীবনে মেরে ফেলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিতে ফেলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।