
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০০০ সালকে এসএসসি বা সমমানের ধরে ছাত্রদলের নেতা-কর্র্মীরা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে পারবেন। এ নিয়ে বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের ছাত্রদলের কাউন্সিলের জন্য গঠিত ‘নির্বাচন পরিচালনা কমিটি’তে রাখা হবে। আগামীতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ অন্য যেসব অঙ্গ সংগঠনের কমিটি হবে সেখানে বঞ্চিতদের যোগ্য পদে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ছাত্রদলের কমিটির জন্য ঘোষিত তফসিল নতুন করে আবারও ঘোষণা করা হবে।বহিষ্কার হওয়া ১২ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে।
২০০০ সালকে এসএসসি ধরে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন- বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল আলম টিটু, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক মামুন খান, সহ-সম্পাদক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্লোগান মাস্টার গুলিবিদ্ধ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, বৃত্তি ও ছাত্র কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, মুক্তিযোদ্ধা গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম সাগর, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক আরাফাত বিল্লাহ, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল আলম ফকির লিঙ্কন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সিনিয়র সহসভাপতি তানভীর রেজা রুবেল, সহসভাপতি আমিনুর রহমান আমিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ইকবাল হোসেন শ্যামল, রিজভী আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহসভাপতি সুরুজ ম ল প্রমুখ।
আগের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গতকাল ছিল ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট গ্রহণের দিন। কিন্তু এ পর্যন্ত সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীদের ফরমই বিক্রি করতে পারেনি। বরং গত ২২ জুন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে ক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের নেতৃত্ব দেওয়া ১২ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও বিএনপি ও ছাত্রদলের একাধিক নেতা বলেছেন, রিজভীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। সাবেক একাধিক ছাত্রনেতা জানান, আগে যা হয়েছে তা আর সামনের দিনে হবে না। সবাই জাতীয়তাবাদী আদর্শের সৈনিক। কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শক্ত হাতে হাল ধরেন। সবার সম্মতিতেই কাউন্সিলের সময়সীমা পেছানো হচ্ছে। তফসিলও কয়েক দিন পেছানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সাবেক ছাত্রনেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এখন আর বড় কোনো সমস্যা নেই। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করব। সাবেক ছাত্রনেতা আমিরুল ইসলাম খান আলিম বলেন, ছোট ভাই বড় ভাই সবাই এখন ঐক্যবদ্ধ। সব ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে। কাউন্সিলের মাধ্যমেই ছাত্রদলের কমিটি হবে। আশা করছি, ঈদের আগেই এ কমিটি হবে।তবে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির একাংশের নেতারা বলছেন, সার্চ কমিটি এজমল হোসেন পাইলট ও বাশার সিদ্দিকী ছাড়া কাউকেই ম্যানেজ করতে পারেনি। তাদের মতে, ছাত্রদলে পাইলট ও বাশারের সেভাবে কোনো অনুসারী নেই। তারপরও তারা স্বেচ্ছায় যাননি। তারা সার্চ কমিটির নেতাদের চাপ হয়তো সামলাতে পারেনি। এখানে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির, আসাদুজ্জামান আসাদ ও জহির উদ্দিন তুহিনসহ অন্যদের অনুসারীই বেশি। গত ৩ জুন ছাত্রদলের রাজীব আহসান ও আকরামুল হাসানের নেতৃত্বাধীন মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি।
বয়সসীমা নির্ধারণের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রদলের একটি অংশ ১০ জুন থেকে নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে। তারা ১০ জুন দলের কার্যালয় ৭ ঘণ্টা তালা দিয়ে বন্ধ করে রাখে। লাঠিসোঁটা নিয়ে দলের কার্যালয়ে বাইরে অবস্থান নেওয়া বিক্ষুব্ধরা কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থান নেওয়া কিছু নেতা-কর্মীকেও মারধর করে। গত ২২ জুন বিক্ষুব্ধদের অবস্থান কর্মসূচির সময় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কার্যালয় থেকে একটি মিছিল শেষে ভিতরে প্রবেশ করতে গেলে তোপের মুখে পড়েন। এ রকম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে বিএনপি ছাত্রদলের ১২ নেতাকে বহিষ্কার করে। ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতা ইখ?তিয়ার রহমান ক?বির বলেন, ‘সার্চ কমিটির আন্তরিকতা না থাকার কারণে ছাত্রদলের সংকট সমাধানের সম্ভাবনা খুবই কম। স্থায়ী কমিটিকে দায়িত্ব নিতে হবে। এখনো সংকটের সমাধান হয়নি।