Sat. Jun 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার ,১৮জুলাই,২০১৯ঃ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এমপি বলেছেন, ‘গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের বিশেষায়িত পদ এবং শিক্ষা যাতে কোনভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়টি সতর্কতার সাথে মনে রাখতে হবে। আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আপনাদের সুখ-দুঃখকে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি’।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ‍তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘কোন কোন জেলায় আমাদের প্রকৌশলীরা ‍বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়েন। যতদিন আমি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আছি, আমাদের একজন কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক বা অন্য কোন ক্ষমতা দেখিয়ে প্রভাবান্বিত বা হয়রানি করতে চাইলে আমাকে জানাবেন, আমি আপনাদের পাশে দাঁড়াব। টেন্ডার এবং অন্যান্য কর্মকান্ডে কাজ শেষ না করে দ্রুত বিল দিতে হবে, জোরপূর্বক তার লোককে টেন্ডার দিতে বাধ্য করা হবে-এই প্রবণতা কোনভাবেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নীতিমালার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং আমি নিজে এটাকে কোনভাবে অনুমোদন করবো না। আপনাদের ভীত সন্ত্রস্ত্র হবার কোন কারণ নেই’।

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধিকাংশ কর্মকর্তারাই সততা, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এর ভেতরে কিছু ব্যত্যয়ও ঘটেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘটনা আমাদের ইমেজকে ভীষণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমি সবখানেই বলি রূপপুর প্রকল্পের একটি ঘটনা দিয়ে গোটা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। অনেক সময় কেউ কেউ অতি লোভী হয়ে গোটা ডিপার্টমেন্টের ভাবমূর্তি ধ্বংস করার প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন’।

মন্ত্রী প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি অতীতে এমপি-মন্ত্রী ছিলাম না। কিন্তু আমার জীবনে আন্দোলন, সংগ্রাম ও লড়াইয়ের কারণে মার্শাল ল সরকারের আমলে জেল খাটতে হয়েছে। আমি কিন্তু কোনদিন মুচলেকা দিয়ে বের হইনি। এই শক্ত অবস্থানে থাকা আত্ববিশ্বাসী মানুষ আমি। টিম ওয়ার্কে আপনারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উইং। আপনাদের এটাকে ধারণ করতে হবে’।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘এ দেশটা ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া। এ দেশের জন্য অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন। বাঙালী জাতির অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের জাতির জনক পাকিস্তানের সাথে সমঝোতা করেন নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তত ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন, কিন্তু একবারের জন্যও তিনি শঙ্কিত হয়ে আমাদের অধিকার প্রশ্নে ছাড় দেন নি। কর্তব্য পালনে আমি চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। অনিয়মের পরিসর থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। আপনারা মর্যাদাপূর্ণ পদ পান, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পান, বেতন-ভাতা পান। কোনভাবেই যেনো চিহ্নিত না হন যে, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সাথে আপনারা সম্পৃক্ত। এক দুজনের জন্য কেনো বদনামের বোঝা আমাদের কাঁধে আসবে। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আসুন আমরা আত্বশুদ্ধি করি, আত্বসমালোচনা করি। আমার ভুল-ত্রুটিকে শুধরে নেই। তাহলে এই ডিপার্টমেন্টের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হবে’।

প্রধান অতিথি বলেন, ‘দেশটা আমাদের সকলের। এ দেশ গড়ায় আপনাদেন সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ দরকার। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত। তাই উন্নয়নে আপনারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। আপনাদের সুখ-দুঃখ, মাঠ পর্যায়ের সমস্যা, প্রতিকূলতা, দাবী-দাওয়া আমাদের সামনে পেশ করুন। আইনের পরিসরের মধ্যে আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো। প্রয়োজনে বিধি-বিধান পরিবর্তনের চেষ্টা করবো। আশা করি সাধ্যের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আপনাদের সকল প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হবো’।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাহাদাত হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মেধা, মনন ও জ্ঞান দেশের কাজে লাগাতে হবে। দেশ গড়ার কারিগর আপনারা। বিদেশে অর্জিত ডিগ্রী ও অভিজ্ঞতা দেশের কাজে লাগাবেন। কর্তব্যে অবহেলা করা উচিত নয়, না হলে জনগনের আস্থা কমে যাবে। আবাসন খাতে সবচেয়ে বড় কাজ আপনারা করেন। তাই আস্থার জায়গাটা ধরে রাখতে হবে’।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৮ জুলাই থেকে ২০ জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী গণপূর্ত অধিদপ্তরের এ বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।