
এদিকে পুত্রবধূর প্রতিবাদী মনোভাব দেখে বাড়ির প্রধান গেটে তালা মেরে ঘরবন্দি হয়ে থাকেন শ্বশুর-শাশুড়ি। তবে ঘটনার সময় অভিযুক্ত স্বামী বাড়িতে ছিলেন না বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৮ বছর বয়সী ওই গৃহবধূর নাম সোনিয়া বিবি। তার বাড়ি নদিয়াতে। বেঙ্গালুরুতে কর্মরত মালদহের মোথাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওয়াসিম আখতারের সঙ্গে ২০১৪ সালের ২৯ জুন বিয়ে হয় বান্ধবী সোনিয়ার। সে সময় তারা দু’জনেই বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।
সোনিয়ার অভিযোগ, প্রথমদিকে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। বিয়ের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। চার বছর পর, ২০১৮ সালে ওয়াসিম হঠাৎই কাজ ছেড়ে মালদহে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান। তাঁদের মধ্যে এই নিয়ে বিবাদও হয়। তার জেরে সোনিয়া নদিয়ায় বাপেরবাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন।
অভিযোগ, সোনিয়া বাবার বাড়িতে চলে আসার পরে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা এমনকি স্বামীও তাঁর কোনও খোঁজ নেননি। তারপর তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু সে সময় তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাঁকে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
সোনিয়ার অভিযোগ, কিছুদিন আগে তিনি জানতে পারেন, স্বামী ওয়াসিম আখতার দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি নদিয়া থেকে মালদহের মোথাবাড়ি গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে ছুটে আসেন।
কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন। তাঁর মুখের ওপর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর বাধ্য হয়ে তিনি মোথাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সোনিয়া জানান, পুলিশকে সব কিছু জানানোর পরেও কোনও লাভ হয়নি, সাহায্য মেলেনি। তাই স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে আটকাতে এবং স্বামীকে ফিরে পেতে শ্বশুরবাড়ির সামনে অনশনে বসেন তিনি।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ হয়েছেন গ্রামের মানুষ। তাঁরা জানিয়েছেন, সোনিয়া যে কাজ করছেন, তা একদম সঠিক। তাঁরাও সোনিয়ার পাশে আছেন। কোনও মতেই এক স্ত্রী থাকতে তাঁরা আর কোনও বিয়ে মানবেন না।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বাড়িতে গেলে ওয়াসিমের বাবা গোলাম মোস্তাফা গেট খোলেননি। গেটের ওপর প্রান্ত থেকে গোলাম মোস্তাফার সাফ কথা, তাঁর পক্ষে ওই মেয়েকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই নারীকে অনশন থেকে উঠে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করে এবং আইনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।