খোলাবাজার ২৪,সোমবার,২৯জুলাই,২০১৯ঃ গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে মাসিক পাঁচ লাখ টাকার কিস্তির চেক দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার সকালে হাইকোর্টে গ্রিন লাইন পরিবহনের আইনজীবী ভুক্তভোগী রাসেলের হাতে এ চেক তুলে দেন।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
আদালত বলেন, ‘মাসিক কিস্তির অর্থ পরিশোধের আদেশ বহাল থাকবে। টাকা পরিশোধ করে যাবেন।’
তবে আগামী ১৭ অক্টোবর পরবর্তি আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। ২১ জুলাই শুনানির জন্য ধার্য থাকলেও গ্রিন লাইনের নতুন আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৮ জুলাই শুনানির জন্য রাখা হলেও অসুস্থতার কথা জানিয়ে একদিনের সময় চান আইনজীবী।
ক্রাচে ভর দিয়ে আদালতে উপস্থিত হন ভুক্তভোগী রাসেল সরকার। পরে আদালতের সামনেই গ্রিন লাইনের পক্ষে তার হাতে চেক তুলে দেন আইনজীবী পলাশ চন্দ্র রায়।
এদিকে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের জন্য গত ২৫ জুন আদালত আদেশ দিলে তা কমানো জন্য ১৭ জুলাই চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ। তবে চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেননি।
হাইকোর্ট বলেন, ‘আমাদের আদেশে স্থগিতাদেশ নেই। স্থগিতাদেশ থাকলে ভিন্ন কথা। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করবেন। কিস্তিতে মাসিক অর্থ পরিশোধের আদেশ বহাল আছে। টাকা দিয়ে যাবেন। যদি আদেশ স্থগিত না হয়, তাহলে অর্থ পরিশোধ চালিয়ে যেতে হবে। কেননা, কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের বিরুদ্ধে আপনারা আপিল বিভাগে যাননি। তবে সর্বোচ্চ আদালত অর্থ কমিয়ে দিলে অন্য কথা।’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম, বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. রাফিউল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ২৮ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লালাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারান রাসেল সরকার। তিনি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালক ছিলেন। পা হারানোর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম হাইকোর্টে রিট করেন।
গত মার্চে হাইকোর্ট এক আদেশে রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দিতে এবং প্রয়োজন হলে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার এবং কাটা পড়া বাঁ পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর জন্য খরচ বহন করতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
গত ১০ এপ্রিল গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ রাসেলকে পাঁচ লাখ টাকার চেক দেয়। সর্বশেষে গ্রিন লাইনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ জুন হাইকোর্ট বাকি ৪৫ লাখ টাকা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে নির্দেশ দেন। প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে রাসেলকে পাঁচ লাখ টাকা করে এ অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়।