Sun. Jun 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

আজ মুশফিক ব্যর্থ, ব্যর্থ পুরো দল। ছবি: এএফপি

খোলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট,২০১৯ঃ তিন ম্যাচেই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় ম্যাচে এসেই নিজেদের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্সটা দেখাল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার ২৯৪ রান তাড়া করতে নেমে টেনেটুনে করেছে ১৭২ রান

শ্রীলঙ্কা ২৯৪ রান করার পরই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে এ মাঠে ৩০০ ছোঁয়া স্কোর যে তাড়া করা সম্ভব নয়, সেটা জানা ছিল সবার। বাংলাদেশের ব্যাটিং ফর্ম তো ছিলই বাড়তি প্রভাবক হিসেবে। তাই বলে এমন অসহায় আত্মসমর্পণের কথাও নিশ্চয় চিন্তা করেননি।

এ সিরিজ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি যদি বলতে হয়, সেটা সৌম্য সরকারের বোলিং। প্রথম ম্যাচের পর আজও দলের সেরা বোলার এই ওপেনার। দলের মূল দুই পেসারকে রেখে ইনিংসের শেষ ওভারে তাঁকে আনাটাই সেটা বলছে। সৌম্য আজ শুধু বোলিং নয়, মুগ্ধ করেছিলেন উপস্থিত বুদ্ধি দিয়েও। বোলিংয়ের সময় পা দাগ পেরিয়ে যাওয়ার পর আম্পায়ার নো বল ডেকেছিলেন। শুনেই বোলিং থামিয়ে দিয়ে ফ্রি হিট ও অতিরিক্ত রান দেওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন।

ব্যাটিংয়েও আউট হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বুদ্ধির পরিচয় দিচ্ছিলেন। দলের সব ব্যাটসম্যান যখন আউট হওয়ার আত্মহত্যার মিছিলে নেমেছেন, সেখানে একমাত্র সৌম্যই সম্মান রক্ষার্থে লড়েছেন। তবে যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতে দুঃখ পেতে বাধ্য। আকিলা ধনঞ্জয়া অফ স্পিন করবেন ভেবে ড্রাইভ করেছিলেন। কিন্তু লেগ স্পিন বলটি ফাঁকি দিয়ে ভেঙে দিল স্টাম্প।

এতে অবশ্য ম্যাচের গতি-প্রকৃতিতে কিছু যায়-আসেনি। ৭ উইকেটে ১৪৩ রানের স্কোরটা শুধু ১৪৩/৮ হয়েছে। এর আগেই যে তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা নিশ্চিত করেছেন তৃতীয় ম্যাচ জিতে সান্ত্বনা বা গৌরব, কোনোটাই পাওয়ার উপায় থাকছে না।

আগের ছয় ইনিংসে বোল্ড হওয়া তামিম ইকবাল জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজিথাকে হাঁকাতে গিয়ে কুশল পেরেরাকে ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে এলেন। এনামুল-তামিমের ওপেনিং জুটি টিকল মাত্র ৯ বল। বহুদিন পর দলে ফেরা এনামুল দায়িত্ব সেরে নিয়েছেন ১৪ করেই। ইনিংসের প্রথম ও দ্বিতীয় চারের দেখা মিলেছে অষ্টম ওভারে। টানা দুই চারে পরের বলেই আরেকটি চারের নেশায় বিদায় এনামুলের।

ফর্মে আছেন, আগের ম্যাচে দলের ব্যাটিং নিয়ে অনেক কথাও বলেছেন মুশফিক। সে মুশফিক ফিরলেন দলকে ৪৬ রানে রেখে। শানাকার অত বাইরের বল তাড়া না করলেও যে চলত, সেটা নিশ্চয় মুশফিক সবার চেয়ে ভালো বোঝেন। প্রথম দুই ম্যাচে ২২ রান করা মিঠুন আজ ৪ রানে আউট হয়েছেন শানাকাকে হুক করতে গিয়ে। বাজে শট খেলতে গিয়ে, সেটা বলাটা বাহুল্য হয়ে যায়। বাংলাদেশের ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার মধ্যেও শ্রীলঙ্কার মূল পেসার লাহিরু কুমারাকে বল হাতে নিতে হয়নি!

আগের দুই ম্যাচে ৯ রান করা মাহমুদউল্লাহ আজ ৯ রান করেই দায়িত্ব সেরেছেন। কুশল পেরেরা দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেছেন, কিন্তু মাহমুদউল্লাহর শটও আহামরি ছিল না। শুধু সাব্বির রহমানই একটু ভদ্রস্থ আউট হয়েছেন। এক্সট্রা কভারে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়েছেন।

ইনিংসের আগে-পরে শুধু সৌম্যের লড়াইয়ের গল্প। কিন্তু ২৯৫ রানের লক্ষ্যে নেমে শুধু একজনের ৬৯ রান বড় অল্প হয়ে যায়, যখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (অন্য ব্যাটসম্যানদের মধ্যে) ১৪। শেষ দিকে তাইজুলের অপরাজিত ৩৯ রান হারের ব্যবধান ৩০ কমিয়ে এনেছে—এই যা!

ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ, ব্যর্থ বোলাররা। ফিল্ডিংটা হয়েছে বাজে। দলে ছিলেন না সাকিব-মাশরাফি-লিটন-সাইফউদ্দীনের মতো কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। বিশ্বকাপে খেলে এসেই আরেকটা সিরিজ, ক্লান্তিও উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। তাই বলে এতটা খারাপ খেলবে বাংলাদেশ! ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর গত সাড়ে চার বছরে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার কাছে ৩ ম্যাচ সিরিজে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ। আর র‍্যাঙ্কিংয়ের নিচের দলের কাছে ধবলধোলাই—সে গবেষণাসাপেক্ষ বিষয়!