নায়ক রাজ রাজ্জাকের জন্ম, কলকাতার টালিগঞ্জে। অভিনয়ের শুরুটাও ছিল সেখানেই। কিশোর বয়সে কলকাতার মঞ্চ নাটকে জড়িয়ে শুরু। এরপর ১৯৬৪ সালে আলে দাঙ্গার উত্তাল সময়ে নতুন জীবন গড়তে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আবদুর রাজ্জাক পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন। কঠোর পরিশ্রম আর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সাথে সংগ্রাম করে উপাধি পেয়েছেন নায়ক রাজ রাজ্জাক।জীবনে নানা সংগ্রামের পথ অতিক্রম করেন তিনি। তারপর আব্দুল জব্বার খানের সহযোগিতায় তিনি একবাল ফিল্মে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন। ‘উজালা’ ছবিতে কাজ শুরু করেন পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে। এরপর সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের ‘তেরো নাম্বার ফেকু অস্তাগড় লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক।
পরবর্তীতে কার বউ, ডাক বাবু, আখেরী স্টেশনসহ আরও বেশ কটি ছবিতে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করে তিনি। পরে বেহুলা চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে তিনি নায়ক হিসেবে ঢালিউডে উপস্থিত হন এবং সবার মন জয় করে নেন। দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি নায়করাজ হিসেবে পরিচিতি পান।
১৯৭৩ সালে রংবাজ ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করে রাজ্জাক বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন ধারা প্রবর্তন করেন। তিনি সূচনা করেন চলচ্চিত্রের আধুনিক অ্যাকশন যুগেরও। রংবাজ দিয়েই রাজ্জাক তাঁর অভিনয় জীবনে বৈচিত্র নিয়ে আসেন। ওই সময় রাজ্জাক বলেছিলেন, রংবাজ ছবির সাফল্যের পর আমার মনে হলো, দর্শকদের একঘেয়েমি থেকে মুক্ত রাখতে হলে সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। প্রয়োজনে দর্শকদের জন্য নিজের অর্থে ছবি নির্মাণ করতে হবে।
‘কি যে করি’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেছেন। এই পর্যন্ত তিনি চার বার জাতীয় সম্মাননা লাভ করেন। বাংলা সিনেমার খ্যাতনামা এই অভিনেতার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট ৭৫ বছর বয়সে সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন নায়ক রাজ রাজ্জাক।