Mon. Apr 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, শনিবার, ৩১আগস্ট, ২০১৯ঃপিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ভন্ডারিয়ায় বখাটের উৎপাতে ওষুধ খেয়ে শুক্রবার রাতে আত্ম হত্যা করে উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবহী বন্দর সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং সম্প্রতি ওই স্কুলের স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত সদস্য রুকাইয়া আক্তার রুপা (১৫)। এদিকে আত্মহত্যাকারী স্কুল ছাত্রীকে রুপাকে উত্বক্ত করায় উত্বক্তকারী প্রধান আসামী তামিম খান (১৮) কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া সার্কেল) মোস্তফা হাসান স্বপন অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে ভন্ডারিয়া থানা পুলিশের একটি চৌকশদল বলে জানিয়েছেন ওসিএস এম মাকসুদুর রহমান।
স্থানীয় ও স্কুল সহপাঠী সূত্রে জানাগেছে, রুপা প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার বিকেলে প্রাইভেট পড়ে সদরের টিএন্ডটি রোড নিজ বাসায় ফিরছিল। এসময় স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে রুপার সহপাঠীদের পথ অবরুদ্ধ করে তামিম খান ও তার আরো দুই সহযোগি। ভয়ে তারা দাড়িয়ে পড়লে তামিম রুপাকে তার সাথে (তামিমের) জোড় করে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি করতে বললে রুপা না নাকোচ করে। বার বার একই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় তামিম তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বাহির করে একটি খারাপ ছবি দেখিয়ে রুপাকে বলে এর সাথে তোমার ছবি জুড়ে ইন্টার নেটে ছেড়ে দিব এই হুমকি দিয়ে চলে যাওয়ার পর রুপা বাসায় ফিরে তার চুপচাপ থাকে। ধারনা করা হচ্ছে ঐ ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার খবর জানতে পারে রুপা। জানার পরে সন্ধ্যায় সে তার রুমে ঢুকে ঘরে থাকা ওষুধ অতিরিক্ত পরিমানে সেবন করে।
নিহত রুপার বাবা থানা চত্বরে বসে সাংবাদিকদের জানান, এই ছেলে ২বছর পূর্ব থেকে রুপাকে উত্ক্ত করলে সে সময়ে থানায় মামলা করতে গেলে উভয়ই পাশাপাশি এলাকার হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় ছেলে অপরাধ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এধরনের কাজ করবেনা বলে মাফ চায়। দুই বছর পর ফের গত ৩/৪দিন ধরে ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটে। শুক্রবার রুপা বাসায় ফিরে ঘটনা পরিবারকে জানায় রুপা। বাবা ব্যবসায়ী রুহুল মুন্সি সন্ধ্যায় বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী শান্তা বেগমকে মেয়ে রুপাকে ডাকতে বললে সে গিয়ে দেখে মেয়ের রুমের ভিতর থেকে আটকানো। এসময় রুপার বাবা,মা,চাচা চাচি ডাকাডাকি শুরু বরলে কোন সারাশদ্ধ না পেয়ে দরজা ভেঙে মেয়েকে অচেতন দেখে তাৎক্ষণিক ভা-ারিয়া হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎশক একটি স্যালাইন পুশ করে স্যালাইন চলা অবস্থায় বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করার পরে সেখানে পেট ওয়াস করার কিছু সময় মারা যায় রুপা।এদিকে গতকাল শনিবার দুপুরে বখাটের উৎপাতে সভ্য,শান্ত বন্ধু রুপার মৃত্যুতে সহপাঠীরাসহ ওই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা থানায় রুপাকে শেষ দেখা দেখে স্কুলে এসে স্কুলের মুল ফটকে সড়ক অবরোধ করে ইভটিজিং বন্ধ, বখােেট তামিমের ফাঁসি সম্বলিত প্লাকার্ড,ব্যানার সহ এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
পরে স্থানীয় প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এসে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিলে তারা ক্লাসে ফিরে যায় জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল আলম। এবিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জিব কুমার হালদার জানান, রুপা অত্যন্ত ভর্দ ,বিণয়ী ,শান্ত এবং সম্প্রতি ওই স্কুলের স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত সদস্য ছিল।
এদিকে রুপার বাবা রুহুল মুন্সির দাবি ভন্ডারিয়া হাসপাতালে যদি তার মেয়ের বেটার ট্রিটমেন্ট করানো হতো তা হলে হয়ত প্রাণে বেঁচে যেত রুপা! অন্যদিকে রুপার লাশ থানায় নিয়ে আসলে রাত থেকেই স্বজন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নের্তৃবৃন্দসহ অসংখ্য মানুষ ভিড় জমায় থানা চত্বরে। বাসায় নির্বাক মা শান্তা বেগম !
এবিষয়ে ভা-ারিয়া থানার অফিসার্স ইন চার্জ এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, লাশ ময়না তদন্দের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। মৃতের বাবা রুহুল মুন্সি জানান, সে বাদি হয়ে এ বিষয়ে তামিমকে প্রধান করে আরো অজ্ঞাতদের নামে মামলার প্রস্তুুতি নিচ্ছে। বখাটে তামিম উপজেলা সদরের মঞ্জু খানের ছেলে এবং আমানউল্লা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র বলে জানাগেছে।