মঙ্গলবার দুপুরে ডাকসুর সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ডাকসু নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা সকলেই নিয়ম অনুসরণ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছন। ভর্তি প্রক্রিয়াটি বিভাগ, অনুষদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মাফিকই হয়েছে। আর ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হননি। ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে। এ প্রক্রিয়ায় শুধু ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ভর্তি হননি, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন ও স্বতন্ত্র জোটের অনেক নেতাকর্মীরাও ভর্তি হয়েছেন। তবে এখানে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠনকে দায়ী করে চিহ্নিত করা হচ্ছে, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের থেকে যারা বিচ্ছিন্ন ছিল, ডাকসু নির্বাচনে তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তারা এ বিষয়কে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে।
সাদ্দাম বলেন, তিন দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক পরিবেশ পেয়েছে। কারো হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যেন পরিবেশ বিঘ্নিত না হয়।
সাদ্দাম অভিযোগ করে বলেন, ডাকসুর কোনো ধরনের কার্যক্রমে ভিপি নুরুল হক নুর উপস্থিত থাকেন না, যদিও নিয়মানুযায়ী তাকে সব আয়োজনের ব্যাপারে অবগত করা হয়।
ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তার নিজ সংগঠন ছাত্রলীগ, ডাকসুর অন্যান্য নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচর্যের সঙ্গে আলোচনা করে মন্তব্য জানাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক আরিফ ইবনে আলী, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বি এম লিপি আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে কোনো ধরণের কার্যক্রমে উপস্থিত না থাকার বিষয়ে এজিএস সাদ্দাম হোসাইনের বক্তব্যকে ঢালাও মিথ্যাচার বলে দাবি করেন ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, তারা ডাকসুকে ছাত্রলীগের মুখপাত্র বানাতে চায়, ছাত্রলীগ এবং ডাকসুকে একাকার করে কাজ করতে চায়। ডাকসুর প্রোগ্রামে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে অতিথি হিসেবে রাখা হয়। অথচ সেসব প্রোগ্রামের ব্যানারে ডাকসুর ভিপির নাম থাকে না। কাজেই যেসব প্রোগ্রামে আমাকে অসম্মানিত করা হবে, সেখানে তো আমি যাবো না। তবে যেসব প্রোগ্রামে আমাকে দাওয়াত করা হয়েছে সেগুলোতে আমি গিয়েছি। ১ সেপ্টেম্বর ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর সাংস্কৃতিক ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান এবং সদস্য তানভীর হাসান সৈকতের ১৫ই আগস্ট প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছি। সুতরাং তাদের যে অভিযোগ, সেটি ঢালাও মিথ্যাচার। আসলে তাদের নিজেদের দোষ ঢাকার একটি প্রবণতা এটি।
পাল্ট অভিযোগ করে নুর বলেন, ডাকসুতে ২৫ জনের মধ্যে ছাত্রলীগের ২৩ জনের উচিত সংখ্যালঘু অন্য দুইজন প্রতিনিধিকে একটু স্পেস দেওয়া। কিন্তু এর পরিবর্তে তারা আমাদের ছোটখাটো উদ্যোগগুলোতে নানান ধরণের বাধা-বিঘ্ন সৃষ্ট করে। এর আগে আমাদের সমাজসেবা সম্পাদক আয়োজিত ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস’ প্রোগ্রামটি করা সম্ভব হয়নি ছাত্রলীগের বাধার কারণে।
গোলাম রাব্বানী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি ছাত্র সংগঠনই তার দুর্নীতিকে মেনে নেয়নি। তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। সেখানে ডাকসুর জিএস হিসেবে কেন থাকবে? বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সারা দেশের মানুষ ডাকসুকে ধারণ করে। সেখানে একজন নৈতিকভাবে স্খলিত লোক যদি ডাকসুর প্রতিনিধিত্ব করে তাহলে সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সম্মানহানিকর এবং ছাত্র রাজনীতির একটি খারাপ দৃষ্টান্ত। সুতরাং তার (গোলাম রাব্বানী) নৈতিকভাবে স্বপ্রণোদিত হয়ে পদত্যাগ করা উচিত।
৩৪ জনের ভর্তিকে অবৈধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তির কোনো ধরণের সুযোগ নেই। সুতরাং যে ৩৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে, সেটি অবৈধভাবে। এসময় তিনি ৩৪ জনের মধ্যে ডাকসুতে নির্বাচিত ৮ জনসহ ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিনের অপসারণ দাবি করেন।