খােলাবাজার ২৪,শুক্রবার,২০সেপ্টেম্বর,২০১৯ঃআওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে চলছে শুদ্ধি অভিযান। প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশ এ ব্যাপারে। অন্যায়, দুর্নীতি করে কেউ পার পাওয়ার সুযোগ নেই এবং সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। আর এই পদক্ষেপকে বাস্তবমুখী বলছেন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যাযের নেতারা জানান, দলকে শুদ্ধ করার জন্যই অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়ার একটি অংশ। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা সরকার, আওয়ামী লীগ ও রাজনীতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলেও তারা মনে করেন।
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর যেসব নেতাকর্মী বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এরই অংশ হিসেবে চাঁদাবাজির অভিযোগে দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভুঁইয়াকে।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের বেশকিছু নেতাকর্মীর চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজিসহ দুর্নীতি, অনিয়মের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এই অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, সভায় অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেভাবে জঙ্গি, মাদকের সঙ্গে জড়িতদের দমন করা হয়েছে এদেরও সেভাবে দমন করা হবে। ওই সভাতেই অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, এটা সমযোপযোগী বাস্তবমুখী একটি পদক্ষেপ। এতে দেশের সাধারণ মানুষ সমর্থন দেবে এবং তারা সন্তুষ্ট হবে। যারা আওয়ামী লীগে সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছে, তারা এখনও ত্যাগ স্বীকার করে যাচ্ছে। তাদের ত্যাগের বিনিময়েই আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। অথচ কিছু মানুষ আওয়ামী লীগকে ভাঙিয়ে যা খুশি তাই করবে এটা হতে পারে না। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা পরিশ্রম করবেন আর কিছু লোক অপকর্ম করে বাধা হয়ে দাঁড়াবে এটা করতে দেওয়া যাবে না। এ কারণেই এ বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, যুবলীগ নেতা গ্রেফতারের ঘটনা এটাই প্রথম না। এটা গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার চলমান প্রক্রিয়া। এর আগে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের যারা ভুল করেছে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
‘মন্ত্রী ছিলেন লতিফ সিদ্দিকী, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সব সময় গণতন্ত্র ও সুশাসনের পক্ষে কাজ করে। হঠাৎ করে এই ব্যবস্থা নেওয়া হলো এটা না। অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কখনও কখনও হয়তো দেরি হয়েছে। গত কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দল শুদ্ধ করার জন্য এই ব্যবস্থা। এতে দেশের উপকার হবে, সরকার, আওয়ামী লীগ ও রাজনীতির জন্য ভালো হবে। জনগণের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।