Tue. Aug 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
১৭ মামলায় সম্রাটের সংশ্লিষ্টতা থাকলেও আসামি করা হয়নিখােলাবাজার ২৪,সোমবার,৩০সেপ্টেম্বর,২০১৯ঃ  ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে চলমান শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৭ টি মামলা দায়ের হয়েছে। মাদক, অস্ত্র এবং মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের হওয়া এসব মামলায় করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। এগুলোর প্রায় প্রতি ঘটনার সঙ্গে যুবলীগের আলোচিত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে কোনো মামলাতেই তাকে আসামি করা হয়নি। এছাড়া সম্রাটের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসা, বিদেশে অর্থ পাচারসহ আটটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও পাওয়া গেছে। তবুও এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। সম্রাট দেশে আছে আইনশৃংখলা বাহিনী নিশ্চিত হলেও তাকে ধরা হচ্ছে না। ক্যাসিনো সম্রাটের গ্রেফতার নিয়ে চলছে লুকোচুরি খেলা। তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছে প্রশাসন। তবে ইঙ্গিতটি নাকচ করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, এসব ক্ষেত্রে নতুন করে সবুজ সংকেতের প্রয়োজন নেই। সব সংকেত নিয়েই তারা মাঠে নেমেছেন। সম্রাট তাদের নজরেই আছেন। তিনি গোয়েন্দাজালে আটকা পড়েছেন। এখন এই জাল কেটে বের হওয়ার সুযোগ অনেক কম।

জানা গেছে, সম্রাটকে গ্রেফতার করা হলে এসব অভিযোগই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হবে। সবকিছু প্রস্তুত কিন্তু তার গ্রেফতার বা আটকের বিষয়ে নেই কেবল সুনির্দিষ্ট কোনো বার্তা।

এদিকে ক্যাসিনো গডফাদার ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতারের বিষয়ে লুকোচুরি খেলা চলছে। কয়েকদিন ধরেই তিনি গোয়েন্দাজালে আটকে আছেন। এরপর তাকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা সে বিষয়েও কেউ মুখ খুলছেন না।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সংক্রান্ত প্রশ্নের কৌশলী উত্তর দিচ্ছেন। রোববার ওবায়দুল কাদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে বলেন ‘প্লিজ, ওয়েট অ্যান্ড সি’।

শনিবার আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘অপেক্ষা করুন, যা ঘটবে দেখবেন। আপনারা অনেক কিছু বলছেন, আমরা যেটি বলছি ‘সম্রাট’ হোক আর যেই হোক, অপরাধ করলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। ‘আমি এটি এখনও বলছি- সম্রাট বলে কথা নয়; যে কেউ আইনের আওতায় আসবে। আপনারা সময় হলেই দেখবেন।’

এদিকে তার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ কিছু বলছেন না।

এমন পরিস্থিতিতে সম্রাটকে আদৌ গ্রেফতার করা হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে সেই পুরনো সন্দেহ ফের উঁকি দিচ্ছে।

১৮ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীর ক্যাসিনোগুলোতে অভিযান শুরু করে র্যা ব-পুলিশ। ওই দিনই ঢাকার মতিঝিলের ফকিরাপুল ইয়াংমেনস ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাব এবং মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্রে র্যা বের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো মেলার পাশাপাশি সেগুলো পরিচালনায় যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। পর দিন কলাবাগান ক্লাব থেকে গ্রেফতার করা হয় কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম ফিরোজকে। দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় ঠিকাদার জিকে শামীমকে, যিনিও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। এরা সবাই সম্রাটের অবৈধ ব্যবসার জোগানদাতা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় মোহামেডান, আরামবাগ, দিলকুশা, ওয়ান্ডারার্স, ভিক্টোরিয়া ও ফকিরেরপুল ইয়াংমেনস ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনোর ছড়াছড়ি। এর মধ্যে ইয়াংমেনস ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্রাটের শিষ্য খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। বাকি পাঁচটি ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন সম্রাটের লোকজন।

সম্রাটের ক্যাসিনোর দেখাশোনা করতেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক ওরফে সাঈদ। তারা এক বছর আগে পল্টনের প্রীতম–জামান টাওয়ারে ক্যাসিনো চালু করেছিলেন। মমিনুল হক এখন সিঙ্গাপুরে।

অন্যরকম