Wed. Jun 11th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, শুক্রবার, ০৪অক্টোবর, ২০১৯ঃ হাসির সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের কতটা সম্পর্ক? আমাদের মুখের হাসি কি সবসময় আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করে? হাসি-আনন্দ দিয়ে বছরের একটি দিন আলাদাভাবে পালন করার উদ্দেশ্যে আজ বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে বিশ্ব হাসি দিবস।

বিশ্বের নানা দেশে এই দিনটির যারা আয়োজক তাদের আশা, অন্তত এক দিনের জন্য হলেও এই দিনটিতে মানুষ হাসিমুখে থাকবে, এবং একে অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করবে।

মনোবিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ ফারুক হোসেন বলছেন, মানুষ যখন ভালো থাকে, সুখে থাকে, আনন্দে থাকে, তখন সাধারণত প্রায়ই হাসে। আমাদের মনের যে আনন্দ আবেগটা আছে, সেটার একটা তাৎক্ষণিক বহিঃপ্রকাশ হাসির মাধ্যমে হয়। সুতরাং যখন কাউকে প্রায়ই হাসতে দেখি, তখন বলা যায় যে, সে ভালো আছে।’

যারা সবসময় হাসে, তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে?

ড. হোসেন বলছেন, আমাদের যখন মন খারাপ থাকে, তখন আমরা কম হাসি। সহজে আমাদের হাসি আসে না। যেমন বিষণ্ণতা থাকলে বা কোনো বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলে সহজে আমরা হাসতে পারি না।”

তিনি বলছেন, হাসির শারীরিক দিকও আছে। হাসলে আমাদের হৃদযন্ত্র, শ্বাসযন্ত্র, এগুলোর একপ্রকার ব্যায়াম হয়। সুতরাং যারা প্রায়শ হাসে, তারা শারীরিক মানসিক দিক থেকে ভালো আছে ধরে নেয়া যায়।

হাসির সাথে তাহলে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক কতটা?

মনোবিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ ফারুক হোসেন বলছেন, হাসির সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। কারণ বিষণ্ণ থাকলে হাসিটা সহজে আসে না। “আমাদের সুখানুভূতির বহিঃপ্রকাশ হলো হাসি।”
সুতরাং দীর্ঘমেয়াদী সুখে থাকা অথবা তাৎক্ষণিকভাবে কোন কারণে উৎফুল্ল হয়ে যাওয়া, সেগুলো হাসির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তাই যিনি হাসছেন, তিনি আসলে মানসিকভাবে ভালো আছে। অন্তত সে ভারাক্রান্ত নয় বলে মনে করেন ফারুক হোসেন।

কেউ যদি একদম না হাসে, তার কী মানে?

ড. মুহাম্মদ ফারুক হোসেন বলছেন, আমরা দেখেছি, যারা খুবই বিষণ্ণ থাকে, তারা প্রায় হাসতে ভুলে যায়। তার আশেপাশের লোকজন বলে, তাকে তো কখনো হাসতে দেখি না। তারা আসলে মানসিকভাবে ভালো নেই। হয়তো বিষণ্ণ আছে, অথবা অনেক বেশি দুশ্চিন্তায়, ব্যথা যন্ত্রণায় কাতর।

হাসির উপাদান তৈরি করা কী সম্ভব?

ড. মুহাম্মদ ফারুক হোসেনের মতে, কেউ যদি হাসতে না পারে, যদি মনে হয় যে, তিনি হাসার মতো কিছু পাচ্ছেন না, তাহলে তিনি একজন মানসিক বিশেষজ্ঞ বা মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারেন। পরিবারের সদস্যরা এমন দেখতে পেলে বা বুঝতে পারলে তারাও তাকে নিয়ে যেতে পারেন। কারণ এখানে চিকিৎসা করাটাই প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।

এছাড়া, হাসির সিনেমা দেখা কৌতুক পড়া, ঠাট্টা-তামাশা করা, তাতে কিন্তু আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, হাসির একটা সংক্রামক প্রবণতা আছে। হাসির একটা চেহারা আছে, সেটা দেখলে আমাদের মস্তিষ্কে সিগন্যাল যায়।

তাই হাসিখুশি মানুষের সাথে থাকলে, অন্যদের হাসতে দেখলে সেই হাসি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে যায়। সেটিও আমাদের মনের অবস্থা কিছুটা ভালো করে।