Sat. Jul 26th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার ২৪,শনিবার,০৫অক্টোবর,২০১৯ঃ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা থেকে বেরিয়ে গেলেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ। শুক্রবার বিদায়ী শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান প্যানেলের কমিটির এই সভায় কথা বলতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে বের হয়ে যান তিনি।
জানা যায়, শিল্পী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব চত্বরে শুক্রবার এজিএমের ডাক দেন। কিন্তু কমিটির চল্লিশ ভাগ সদস্যও এই এজিএমে উপস্থিত ছিলেন না।

আরও জানা গেছে, শিল্পী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা শুরু হয় বেলা ১২টায়। পরে চিত্রনায়ক রিয়াজ কথা বলার জন্য বারবার সুযোগ চান। কিন্তু তাকে কথা বলতে না দেওয়া হলে আধা ঘণ্টা পরে তিনি বের হয়ে যান। তা নিয়ে হইচই হয়।বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘এটি সাধারণ শিল্পীদের সভা, এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বর্তমান কমিটির আর কেউ কথা বলতে পারবেন না।’

এরপর রিয়াজ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে যান। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আসলে আজ যা হলো, সমিতিতে যা হচ্ছে তা নিয়ে বলার ভাষা নেই। কেমন একটা একনায়কতন্ত্রভাব। সবকিছুতে সভাপতি আর সেক্রেটারিই যেন মুখ্য! সব অর্জন কী তাদের দুজনের? তারা দুজন কি একা একা জয়ী হতে পারতেন বা দুটা বছর একাই চলতে পারতেন?’

সভাপতি আর সেক্রেটারিই সব হন তাহলে ঘটা করে ২১টি পদের নির্বাচনের কী দরকার প্রশ্ন তুলে রিয়াজ বলেন, ‘এজিএম করার কথা প্রতি বছর। সেটা হয়নি। দুই বছর শেষে হচ্ছে, সেখানেও যদি কথা বলার সুযোগ না থাকে তাহলে তো মেনে নেয়া যায় না। সভাপতি আর সেক্রেটারির বাইরে এজিএমে আর কোনো পদের লোক কথা বলতে পারবেন না, এমন গঠনতন্ত্রের কথা আমার জানা নেই। তারা কেন ভয় পাচ্ছেন? কীসের এত ভয়? কেন অন্যের কণ্ঠরোধ করতে চান? আমরা তো শিল্পী সমিতিতে গণতন্ত্র ও সুন্দর কিছু চর্চার জন্যই এক হয়েছিলাম। তাহলে এত রাজনীতি কেন সবকিছু নিয়ে?’

তিনি আরও বলেন, ‘কমিটির কোষাধ্যক্ষ যে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন, তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়। দুই বছরে অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি সংগ্রহ করেছে ৫৮ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকা। শিল্পীদের জন্য খরচ হয়েছে দুই লাখ ৯১ হাজার ৩০০ টাকা। বাকি টাকা কেন ফান্ডে ফেলে রাখা হয়েছে? তাছাড়া ভোটার তালিকা নিয়েও কথা বলার ছিল। নতুন ভোটার তালিকায় অনেককে বাদ দেয়া হয়েছে। বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন ছাড়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যায় না। কমিটির কয়েকজন সদস্য প্রভাব খাটিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। এসব অনিয়মের ব্যাপারে সভায় কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা সুযোগ দেয়নি। আজকের এজিএমটা রাজনৈতিক ভাবনায় পরিকল্পিত। এটা সব সদস্যই বুঝতে পেরেছেন।’

এ বিষয়ে মিশা সওদাগর বলেন, ‘আজকের এজিএম নিয়ে অনেক পজিটিভ কথা বলার আছে। আমরা প্রথা ভেঙে কমিটির লোককে হাইলাইট না করে আমাদের যারা সিনিয়র তাদের সামনে বসতে দিয়েছি। এজিএমের স্বাগত বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দিয়েছি নির্বাচনে সভাপতিপ্রার্থী মৌসুমীকে। তিনি এই সম্মান পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়েছেন। এছাড়া আজ প্রায় তিন শতাধিক সদস্য হাজির করেছি। আমরা প্রথম এজিএম করতে পারিনি সেজন্য সবার কাছে হাতজোড় ক্ষমা চেয়েছি। এত সব ভালো বিষয় রেখে একটা মন্দ দিক তুলে ধরার কিছু দেখছি না।’

২০১৭ সালের ৫ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসেন মিশা সওদাগর ও জায়েদ খান। আসন্ন ২৫ অক্টোবর নির্বাচনেও মিশা-জায়েদ এক হয়ে প্যানেল দিয়েছেন। তবে এবারের প্যানেলে নেই আগেরবারের সত্তর ভাগ সদস্য।

জানা গেছে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নানা বিতর্কিত আচরণে বিরক্ত হয়ে তারা এবার মিশা-জায়েদের প্যানেল থেকে সরে গেছেন। অন্যদিকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে মৌসুমী ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে ইলিয়াস কোবরা মনোনয়ন কিনেছেন।

অন্যরকম