খােলাবাজার ২৪, সোমবার,০৭ অক্টোবর, ২০১৯ঃ পিরোজপুর প্রতিনিধি : পিরোজপুর বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান মহারাজ এর প্রতিবাদ ও সমিতির বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন।
গতকাল রোববার দুপুরে পিরোজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে পিরোজপুর বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান মহারাজ বলেন, আমার বিরুদ্ধে শনিবার উথ্যাপিত সমিতির ২৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র। সমিতির বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ তাকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও প্রশাসনিক ভাবে হয়রানি করার জন্য সমিতির কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্য এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এ মিথ্যা তথ্য সম্বলিত অপপ্রচারমূলক একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে মসিউর রহমান মহারাজ বলেন, ৫ অক্টোবর শনিবার একটি মহল পিরোজপুর বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান মহারাজ সহ সমিতির বিভিন্ন কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভাবে চাঁদা আদায়ের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে যে মিথ্যা প্রচারনা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। একটি কুচক্রী মহল সমিতির সভাপতি সহ সমিতির বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও প্রশাসনিক ভাবে হয়রানি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তিনি জানান।তিনি তার ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ীক কাজের জন্য বেশির ভাগ সময়ই পিরোজপুরের বাইরে অবস্থান করার কারনে সমিতির গাড়ী চলাচলের রোটেশন, অলটার স্লিপসহ যাবতীয় কার্যক্রম সাধারণ সম্পাদকের উপর ন্যাস্ত ছিল।
এ সুযোগে সাধারণ সম্পাদক বাবুল হালদার তার স্বাক্ষর স্ক্যান করিয়া সমিতির বিগত বছরগুলিতে রোটেশন করিয়া আসিতেছে, আমার সম্পূর্ণ অগোচরে বাবুল হালদার এই সকল কাজ করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
আমার বিষয়ে যে সকল অনিয়মের অভিযোগের কথা বলা হইতেছে তা এর আগে কোন গাড়ীর মালিক তাকে লিখিত বা মৌখিক ভাবে কখনো জানায় নাই বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্যেখ করেন। মসিউর রহমান মহারাজ বলেন, তার স্বাক্ষর স্কান করে রোটেশন করার কথা সাধারণ সম্পাদক বাবুল হালদারের কাছে জানতে চাইলে সে তাহার কোন সদুত্তর দিতে পারে নাই। এমনকি দূর পাল্লার গাড়ী হইতে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে গত ৮ বছরের মধ্যে কোন মালিক তাকে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করে নাই বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কখনো কোন চাঁদাবাজির হইতেছে এ সম্পর্কেও তাকে অবহিত করে নাই। যে মালিকগণ অভিযোগ করেছে চাঁদা দিয়েছে কিন্তু বিগত দিনে চাঁদার বিষয়ে কখনোই তারা তার কাছে কোন লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করে নাই।
এছাড়া দূরপাল্লার পরিবহনের মালিকবৃন্দ চাঁদার বিষয়ে অত্র সমিতিতে বা প্রশাসনের নিকট কোন অভিযোগ করে নাই। বর্তমান কমিটি কোন খাতা-কলমের কমিটি নয় উল্লেখ করে তিনি জানান, সমিতির মালিকদের উপস্থিতিতেই সকলের সম্মতিতেই এ কমিটি করা হয়। এছাড়াও পিরোজপুর বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতি শ্রম অধিদফতর, খুলনা শাখা হইতে সরকারি রেজিষ্টার ভুক্ত। যার সরকারি রেজি: নং: খুলনা-৯৯৬। পিরোজপুর বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতি নাম করণ শ্রম অধিদফতরের গেজেট অনুযায়ী করা হয়েছে আর শ্রম অধিদফতর হতে প্রাপ্ত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্তমান কমিটি সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
পরে সংবাদ সম্মেলনে পিরোজপুর বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান মহারাজ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন নান্না, সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম গাজী, কোষাধ্যক্ষ রিপন দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।
এ ব্যাপারে সমিতির কথিত সাধারণ সম্পাদক বাবুল হালদার বলেন, আমি যে এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক তা আমার নিজেরই জানা নেই! বিগত পাঁচ বছর তিনি সমিতির অফিসে বা বাস টার্মিনালে জীবন ভয়ে আসা যাওয়া করেন না। সমিতির যে সব কাগজপত্রে তার সই স্বাক্ষর রয়েছে তা জোর করে ও ভয় দেখিয়ে নেয়া হয়েছে। সভাপতি মশিউর রহমান মহারাজ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন নান্না ও অফিস সহকারী জাহিদ হোসেন কাগজপত্র তৈরী করে একক ভাবে সংগঠন চালিয়েছেন।
উল্লেখ্য, পিরোজপুর জেলা বাস, মিনি বাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সাধারণ সদস্যদের অধিকাংশের উপস্থিতিতে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মশিউর রহমান মহারাজের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয়। সাতটি পন্থায় পিরোজপুর জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান মহারাজ তার কতিপয় সহযোগীর সহায়তায় এ অর্থ আত্মসাত করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করা হয়।