জানা যায়, ভারতের আহমেদনগর জেলার এই গ্রামের বাসিন্দারা ঘরে দরজা লাগান না। অর্থাৎ ঘর থেকে বের হওয়ার দরজা থাকলেও তাতে কপাটের ব্যবস্থা নেই। চব্বিশ ঘণ্টাই থাকে খোলা। তাতে ঘরের ভেতরের টাকা-পয়সা, গয়না, তরকারি কিছুই চুরি হয় না। অবাক করার মতো হলেও ঘটনাটি সত্য।
সেখানকার মানুষ বিশ্বাস করে, শনি দেবতা তাদের যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবেন। গ্রামবাসীর বিশ্বাস, যদি কেউ চুরি করে তাহলে তিনি শনি দেবতার রোষানলে পড়বেন। কেউ যদি কোন রকম অপরাধ করার সাহস করে; সে সারাজীবন ভুগবে। এমনকি দৃষ্টিশক্তিও হারাতে পারে।
লোকমুখে শোনা যায়, ৩০০ বছর আগে গ্রামের প্রান্তে পানাস্নালা নদীতে একটি কালো পাথর ভেসে আসে। এক গ্রামবাসী তাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করার পরই পাথর থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাতেই গ্রামের প্রধান স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন পাথরটি শনি দেবতা।
গ্রহরাজ তাকে নির্দেশ দেন পাথরটি গ্রামে প্রতিষ্ঠা করতে। তার চারদিকে যেন ছাদ বা দেয়াল না থাকে। যাতে শনি দেবতা পুরো গ্রামকে নজরে রাখতে পারেন। গ্রামকে সব রকম বিপদ থেকে রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। তার পরদিনই গ্রামের প্রধান শনি দেবের পাথর প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকেই গ্রামে কেউ দরজা লাগান না।
গ্রামবাসী এ গ্রামের ব্যাংকেও কোন দরজা না লাগানোর দাবি জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাংকে দরজা লাগানো হলেও তাতে তালা লাগানো হয় না। যদিও ইউকো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তালা না লাগালেও ব্যাংকের সব টাকা পাশের গ্রামের শাখায় নিয়ে যায়।
গ্রামে একটি থানা আছে, তাতেও কোন দরজা নেই। মজার বিষয় হচ্ছে, আজ পর্যন্ত থানায় একটি অভিযোগও দায়ের হয়নি। অভিযোগ যা এসেছে, সব পাশের গ্রাম থেকে। গ্রামবাসী পাবলিক টয়লেটেও দরজা লাগান না। শুধুমাত্র পর্দা দিয়েই কাজ সারেন।
শোনা যায়, অনেক বছর আগে গ্রামের এক ব্যক্তি ঘরে দরজা লাগিয়েছিলেন। পরদিনই দুর্ঘটনা ঘটে। আপাতত গ্রামটি পর্যটনস্থল হিসেবে বিখ্যাত।