Wed. Jun 11th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার ২৪,শনিবার,১২অক্টোবর,২০১৯ঃ  বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের খুনিদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। শনিবার সকালে ১২ দফা দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন সাংবাদিকরা।

সাংবাদিকদের ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বুয়েট শিক্ষার্থী শহীদ আবারার ফাহাদের খুনিদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার, ছাত্রলীগ এখন দানবে পরিণত হওয়ায় শিক্ষাঙ্গনে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, বুয়েট ভিসির পদত্যাগ, আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, তার মৃত্যুর দিনকে শহীদ আবরার দিবস ঘোষণা, ফেনী নদীর পানি বণ্টনসহ ভারতের সাথে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিল, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলমুক্ত করে সহবস্থান নিশ্চিত ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশে ফিরিয়ে আনা, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার, বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া, কথায় কথায় সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি, হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ, নবম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ গেজেটে সংযোজিত সাংবাদিকদের স্বার্থবিরোধী ধারা, উপধারা বাতিল করে শিগগির সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করা এবং দেশ পরিচালনায় চরম ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে বর্তমান ‘অনির্বাচিত’ সরকারকে পদত্যাগ করে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়া।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল আমিন রোকন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, ডিইউজের সহসভাপতি শাহিন হাসনাত, খন্দকার আলমগীর, রাশেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, মত প্রকাশে বাধা, গণতন্ত্র বিলিয়ে দেয়া ও যারা দেশবিরোধী তৎপরতা চালায় সাংবাদিক সমাজ কখনো তা সহ্য করবে না। আমরা এ কুচক্রীদের বিরুদ্ধে বরাবরই রাজপথে আন্দোলন করেছি এবং করবো।
ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক মেধাবী ছাত্র আবরার। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি যে কথা বলেছেন, তা শুধু তার একার কথা নয় বরং এ দাবি দেশের ১৬ কোটি মানুষের।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আজ দেশের সর্বত্র সন্ত্রাসের জনপদে পরিনত হয়েছে, এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে সবাইকে এক সাথে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ বলেন, আবরারের মতো একজন মেধাবী ছাত্রকে এভাবে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় সারাদেশ স্তব্ধ হয়ে গেছে। দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়ে সরকার ও সরকারি দলের লোকজন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। মেধাবী এ ছাত্রকে ছাত্রলীগের বর্বর নির্যাতনে জীবন দিতে হলো; আমরা তা মেনে নিতে পারি না। মানুষ এখন সত্য কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। দেশের স্বার্থে জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে আমাদের।

এম আবদুল্লাহ বলেন, আবরারকে হত্যা করা মানে হচ্ছে, মত প্রকাশে বাধা দেয়া। ছাত্রলীগ শুধু বুয়েটের একজন ছাত্রকেই হত্যা করেনি; সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ একজন সাংবাদিক হত্যারও বিচার হয়নি।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, আবরার বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আর যারা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, তারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা জাতীয় শত্রু। বাংলাদেশকে বাঁচাতে এই দেশদ্রোহীদের প্রতিহত করতে হবে। খুনিরা আবরারকে হত্যা করেনি লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের পতাকাকে লাঞ্ছিত করেছে, হত্যা করেছে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শহিদুল ইসলাম বলেন, আবারের অপরাধ তিনি দেশের পক্ষে কথা বলেছিলেন। তার স্ট্যাটাসের কোথাও কোনো উস্কানি ছিল না, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মন্তব্য করেননি তিনি। দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে এদেশের গণমাধ্যমগুলো যে কথা বলতে পারেনি; সে কথা বলেছিলেন আবরার। ভারতের সাথে সরকারের দেশবিরোধী যে চুক্তি হয়েছে; তার বিপক্ষে মত প্রকাশ করতে গিয়ে আবরারের মতো একজন মেধাবী ছাত্রকে ছাত্রলীগ নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আবরার শুধু একজন মায়ের সন্তান নন, তিনি বাংলাদেশে একটি বিপ্লবের নাম আজ।