
রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় যুবলীগ নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ডাকা হয়েছে।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বুধবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা নিয়েই আমরা সম্মেলন আয়োজনের সকল পদক্ষেপ নিতে চাই।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ওইদিন শেখ রাসেলের জন্মদিন থাকায় দিনক্ষণ পরিবর্তন করা হয়।
সম্প্রতি যুবলীগের কতিপয় নেতার বিরুদ্ধে ক্যাসিনো, জুয়া, মাদক ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। গোয়েন্দা রিপোর্টে এসব জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে ঘোষণা দেন।
পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভূইয়া, কথিত যুবলীগ নেতা জি কে শামীম।
বিভিন্ন তদন্তে উঠে আসে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ছিলেন এসবের মূল পৃষ্ঠপোষক। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয় এবং তার বিদেশ যাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
এর পর থেকেই অনেকটা আড়ালে রয়েছেন ওমর ফারুক চৌধুরী। উদ্ভূত এ পরিস্থিতিতে তাকে ছাড়াই সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সংগঠনটি। এরই মধ্যে গত শুক্রবার তাকে ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সভা।
দলীয় সূত্র জানা গেছে, যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে সম্মেলন আয়োজনের আলোচনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের আলোচনা হয়। চেয়াম্যানের অনুপস্থিতির ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় সম্মেলন আয়োজনের পরবর্তী দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ শেখ হাসিনার কাছ থেকে নেয়া হবে। পরে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ‘আবেদন’ জানায় নেতারা।
বুধবার গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কণফারেন্সর মাধ্যমে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ওই অনুষ্ঠানের পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেন হারুনুর রশীদ।
এসময় প্রধানমন্ত্রী প্রথমে শুক্রবার দেখা করার সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের জন্মদিন হওয়ায় যুবলীগ নেতাদের সাক্ষাতের দিন পরিবর্তন করে রোববার করা হয়।
এদিকে রোববার যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী গণভবেন যাবেন কিনা সে বিষয়ে যুবলীগের নেতারা নিশ্চিত করে কোনও তথ্য জানাতে পারেনি।
তবে দু-একটি গণমাধ্যমে খবর এসেছে- ওই বৈঠকে থাকছেন না সংগঠনটির বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য ভোলা-০৩ আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
গণভবনের যুবলীগের ওই বৈঠকে ওমর ফারুক চৌধুরী ও নুরন্নবী চৌধুরী শাওনকে না রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বুধবার রাতে আমার সংবাদ কে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের রোববার দেখা করার সময় দিয়েছেন। কিন্তু যুবলীগ চেয়ারম্যান ও ওমর ফারুক চৌধুরী ও নুরন্নবী চৌধুরী শাওনকে না রাখার বিষয়ে কোনও নির্দেশনার কথা আমাকে বলেননি।
তবে আমার ধারনা চেয়ারম্যান মহোদয় সম্ভবত যাবেন না। কারণ বেশ কিছু দিন হলো তিনি সংগঠনের কার্যক্রম থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে ফিরে গত ২ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের আগেই সম্মেলন করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
পরদিন আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে চিঠি দেয়া হয়।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ২০১২ সালের ১৪ জুলাই যুবলীগের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন হারুনুর রশীদ।
আগামী ২৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে।