Wed. Jun 11th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
tangail-somoy
খােলাবাজার ২৪,মঙ্গলবার,২২অক্টোবর,২০১৯ঃ টাঙ্গাইলের সখিপুরে আবারও আলোচিত জাহালম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। নাম এবং চেহারার মিল থাকায় বিনা বিচারে ২৫ দিন যাবৎ নয়ন নামের এক কলেজ ছাত্র নারী নির্যাতন মামলায় জেল খাটছে। চলতি মাসের ৭ তারিখ আসল আসামী গ্রেফতারের পরেও আইনি জটিলতায় জেল থেকে বের হতে পারছে না নির্দোষ নয়ন।

এদিকে নয়ন মিথ্যা মামলায় দিনের পর দিন জেলে থাকায় নয়নের মা ছেলের শোকে অসুস্থ্ হয়ে পড়েছেন। নয়নের মুক্তিসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন স্বজনরা।

পুলিশ ও নয়নের পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত ২১ আগস্ট সখিপুর উপজেলার প্রতিমা বংকী এলাকার ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী অপহরণ হয়। অপহরণের চারদিন পর টাঙ্গাইল ডিসি লেক এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে তার পরিবার। পরে অপহৃত তার পরিবারের কাছে জানায়, নয়ন নামের একটি ছেলে ও তার দুই বন্ধু তাকে অপহরণ করে কক্সবাজারের একটি হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করে পুনরায় তাকে টাঙ্গাইলে নিয়ে এসে ডিসি লেকে ফেলে রেখে চলে গেছে।

এ ঘটনায় অপহৃতের মা ২৬ আগস্ট প্রতিবেশী গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে বাবুল হোসেন নয়নকে আসামি করে সখিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঐদিনই পুলিশ বাবুল হোসেন নয়ন নামের এক কলেজ ছাত্রকে গ্রেফতার করে অপহৃতের সামনে হাজির করলে সে এই নয়নই তাকে অপহরণ করে কক্সবাজার নিয়ে ধর্ষণ করেছে বলে পুলিশের কাছে নিশ্চিত করে।

নয়ন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এবং সে তার জীবনে কক্সবাজার যায়নি এবং সে কলেজে নিয়মিত ক্লাস করেছে বলে জানায়।

পরদিন পুলিশ নয়নকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিয়ে নয়নের কলেজ এবং আশপাশে খোঁজ নিয়ে নয়নের কথার সত্যতা পায়। এতে করে রহস্য আরো দানা বাঁধে। পরে অপহৃতের কাছ থেকে কক্সবাজারের ঠিকানা নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার হোটেলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করলে মামলার প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হয়।

পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৭ অক্টোবর প্রকৃত অপহরণকারী ও ধর্ষণকারী নয়নকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে ১৬৪ ধারায় প্রকৃত নয়ন স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়।

এদিকে আইনি জটিলতায় পরে এখনও নির্দোষ নয়ন মুক্তি না পাওয়ায় পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দ্রুত নয়নের মুক্তিসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী পরিবার ও এলাকাবাসীর।

নির্দোষ নয়নের বাবা বলেন, আমার ছেলে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। আসল আসামী ধরা পড়েছে, তবু তাকে এখনও জেলখানা থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই আমার ছেলের পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়েছে। সে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারলো না। এর ক্ষতিপূরণ কে দেবে। অন্যদিকে যাদের ভুলের কারণে আমার ছেলের জীবন নষ্ট হয়েছে তাদের পুলিশ এখনও গ্রেফতার করে নাই। দ্রুত বাদী এবং ঐ নির্যাতিতা মেয়েকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, একজনের ভুলের কারণে একটি ছেলের জীবন নষ্ট হতে পারে না। আসল আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে আজ প্রায় ১৫ দিন তার পরেও কেন নির্দোষ নয়ন জেলখানায় থাকবে।

এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত নয়নের মুক্তিসহ মামলার বাদীকে আইনের আওতায় আনার দাবী তাদের।

সখিপুর থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন জানান, মামলা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হওয়ায় মামলাটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন করা হয়েছে। আসল নয়নকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দিয়েছে। আইনি জটিলতায় নির্দোষ নয়ন জেলখানায় থাকলেও দ্রুতই জেল থেকে বের হবে।