খােলাবাজার ২৪,মঙ্গলবার,২২অক্টোবর,২০১৯ঃ মেহেদী হাসান,জবি প্রতিনিধিঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য ড.মীজানুর রহমানের জবি উপাচার্যের পদকে হেয় করে বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে মানব বন্ধন ও মিছিল করেন জবির সাধারণ শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান নিজেকে যুবলীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ে চাকরি করেন না এমন মন্তব্য ও তার কর্মকান্ডের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় কেন্দ্রীয় শহীন মিনার প্রাঙ্গনে এ কর্মসূচী পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা আগামী রোববারের মধ্যে উপাচার্যের বক্তব্য প্রত্যাহার করে, গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যার জন্য সময় বেধে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, চলতি মাসের গত বৃহস্পতিবার (১৬অক্টোবর) বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনে এক টকশোতে কথা প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, যুবলীগের দায়িত্ব পেলে তিনি উপাচার্য পদ ছেড়ে দেবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেও তিনি এখনো যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক নম্বর সদস্য। এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যদি দায়িত্ব দেন তাহলে তিনি উপাচার্য পদ ছেড়ে দিয়ে যুবলীগের পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিহিত। কিন্তু উপাচার্য আইন এর বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেকে বক্তব্য দেন যে, তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন না। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে রাজনীতি করা নিষিদ্ধ নয়। উপাচার্যের এমন ব্যবহারে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধনে মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জহির রায়হান জবি প্রতিনিধি কে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী ৮ নাম্বার ধারায় লেখা আছে, উপাচার্য, ডীন, বিভাগীয় প্রধান, রেজিষ্টার, প্রক্টর, পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব থাকবেন। সে হিসেবে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। এই আইনের ৪৪ নম্বর ধারার চার নম্বর উপধারায় উল্লেখ আছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না।
এ শিক্ষার্থী আরো বলেন, উপাচার্য এ আইন লঙ্ঘন করেই রাজনৈতিক পদ ধরে রেখেছেন। তাই তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্য একধিকবার বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় করা ঠিক হয় নি, উপাচার্যের কান্ডজ্ঞানহীন এমন আবেগ ও ভালোবাসা মেনে নিবো না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ধারণ করতে হবে ভালোবেসে, নিয়োগ কৃত হিসেবে নয়। ভালোবেসে দায়িত্ব পালন না করতে চাইলে এখনি পদ থেকে অব্যহতি নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের থেকে আরো জানা যায়, ড.মীজানুর রহমান কথায় কথায় নিজেকে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দাবি করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষক বানিয়েছেন পাশাপাশি সৈর-শাসকের মত নীতি বানিয়ে দিন দিন বিশ্ব বিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুন্ন করছেন। তাই আগামীতে জবির যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে হবে।
এ বিষয়ে জবি উপাচার্যের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তারা কোন সাধারণ শিক্ষার্থী নয়। আমি এ নিয়ে মিডিয়ার সামনে কিছু বলবো না।
তিনি উচ্চস্বরে আরো বলেন, এটা নিয়ে কোন কথা বলবো না। চাইলে লিখে দাও যে উপাচার্য কোটেশন দিতে রাজি হন নি।
উল্লেখ্য যে গত বৃহস্পতিবার (১৬অক্টোবর) যুবলীগের পদের কথা উল্লেখ করে বলেন,দায়িত্ব পেলে ভিসির চেয়ার ছেড়ে দেবেন। এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগত ও সাবেক শিক্ষার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সহ রাত ১০টার পর প্রবেশ নিষেধ নিয়ে ড.মীজানুর রহমান বেশ আলোচিত।