খােলাবাজার ২৪,বুধবার,২৩অক্টোবর,২০১৯ঃ চাদঁপুর জেলার উত্তর মতলব থানাধীন ৩নং সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের দারিদ্র সংখ্যালঘু একটি পরিবারের উপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা। এলাকায় তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। তার নাম রশিদ সরকার। তিনি ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন না করে ও অসৎ উপায়ে মোটা টাকার বিনিময়ে স্বাধীনতা বিরোধী সরকারের সময়ে এই রশিদ সরকার মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট হাতিয়ে নেন। তিনি এই মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দেখিয়ে বিশেষ বিসিএস এর কোটায় চাকরি পান। চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই এই দুর্নীতিবাজ লোভী রশিদ সরকার একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে। দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে তার নামে একাধিকবার ডির্পাটমেন্টাল মামলা হয়। যার কারণে এই রশিদ সরকারকে সহকারী সচিব হিসেবেই রির্টায়েমেন্ট এ যেতে হয়। তাহার সাথে যারা চাকরীতে যোগদান করেছেন তারা অনেকেই সচিব ও সিনিয়র সচিব হয়ে অবসরে এ গিয়েছেন।
এই দুর্নীতিবাজ সাবেক সরকারি কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার পরেই তার নজর পরে শান্তি শীল ও সঞ্জয় শীলের মত দারিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারটির উপর।
১৯৯৩ সালের ২৭ জানুয়ারি ৭২৪২নং দলিলের মাধ্যমে রশিদ সরকারের বড় ভাই আব্দুল খালেক সরকার এই দারিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের বসতভিটার ২৬ শতাংশ জমি জোরদবস্তি করে বিনিময় দলিল করে এবং এই দারিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারটিকে একটি বেড়িবাধের পাশের ডোবার মধ্যে ২৫ শতাংশ জমি বিনিময় করে দেয়। এই দারিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারটি একটি নাপিত পরিবার। তারা বিভিন্ন সেলুনে চুল কেটে অর্থ উর্পাজন করে। তাদের পরিবার চালিয়ে অনেক কষ্টের মাঝে ও তিলে তিলে কিছু টাকা জমিয়ে ওই বিনিময় করে দেওয়া ২৫ শতাংশ ডোবা জমি ভরাট করে এবং সেখানে এই দারিদ্র সংখ্যালঘু অসহায় পরিবারটি শান্তিতে দীর্ঘদিন বসবাস করতে ছিল।
২০০৫ সালে রশিদ সরকার এই দারিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারটিকে তাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য মরীয়া হয়ে উঠে। এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও ভূমিদস্যুর কাছে একটি লাইসেন্স করা পিস্তল রয়েছে এবং বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসীদের এনে শান্তি শীল, সঞ্জয় শীল এবং তাদের পরিবারের অন্যান্য সদ্স্যদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। এক পর্যায়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা এলাকায় ব্যাপক আতংঙ্ক সৃষ্টি করে এই সংখ্যালঘু পরিবারের বিনিময় করা ২৫ শতাংশ জমি থেকে ১৪ শতাংশ জমি রশিদ সরকার দখল করে এবং এই দখলকৃত জায়গায়টি একটি স্কুল বলে চালানোর চেষ্টা করে।
সরজমিনে এই জায়গায় গিয়ে দেখা যায়,এই জমিতে স্কুলের কোন চিহ্ন মাত্র নেই। এই হিন্দু পরিবারটিকে উচ্ছেদ করার জন্য রশিদ সরকার এই স্কুলের নাটকটি করেন। প্রকৃতপক্ষে এখানে নেই কোন শিক্ষক নেই কোন ছাত্র।সম্পূর্ণভাবে এটি শান্তি শীল ও সঞ্জয় শীলদের বসতবাড়ি।
এই বিনিময়ই সম্পত্তি নিয়ে ইতোমধ্যে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিকবার রশিদ সরকারকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে তিনি কোন সালিশ বৈঠক মানেন না এমনকি সে কথায় কথায় এলাকার মানুষদের পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে গত ১৮-১০-২০১৯ তারিখে চাঁদপুর উত্তর মতলব থানায় সঞ্জয় কুমার বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেন কিন্তু থানায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে না নিয়ে সাধারণ ডায়েরী হিসেবে গ্রহন করেন। যাহার ডায়েরী নং ৭৫২৩ তারিখ ১৮-১০-২০১৯ ইং।
এ বিষয়ে চাঁদপুর উত্তর মতলব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন মৃধার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি এই রশিদ সরকার মানুষ হিসেবে সুবিধার নয়, সে এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখায় তার একটি লাইসেন্সে করা পিস্তল রয়েছে এটি দেখিয়ে সে মানুষকে ভয়ভীতি দেখায় তবে এ বিষয়ে এখনও থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি রশিদ সরকারের পিস্তল দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিত তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার এই পিস্তলের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা যেত।
এ বিষয়ে ৩ নং সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লোকমান আহাম্মেদ মুন্সীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, শান্তি শীল ও সঞ্জয় শীলদের পরিবারটি একটি নিরীহ দারিদ্র পরিবার। যে জমি নিয়ে রশিদ সরকারের সাথে এদের বিরোধ রয়েছে তা একটি বিনিময় সম্পত্তি। এই জমিটি ১৯৯৩ সালে রেজিস্ট্রি করে বিনিময় করা হয়, কিন্তু রশিদ সরকার তার ক্ষমতার মাধ্যমে এই দারিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারটিকে বিভিন্ন সময় হয়রানি করে আসছে। এ বিষয়ে এলাকায় কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে কিন্তু রশিদ সরকার তা মানছে না।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শিপলু সিকদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা রশিদ সরকারের সাথে স্থানীয়ভাবে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাজাহান সরকারকে নিয়ে রশিদ সরকারকে নিয়ে বৈঠক করেছি সে কোন সালিশ বৈঠক মানে না।