Tue. Jun 10th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, শনিবার, ০৯নভেম্বর, ২০১৯ঃ ধেয়ে আসছেপ্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় “বুলবুল” ১৩০ থেকে ১৫০কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে বাংলার “ফুসফুস” সুন্দরবনের উপরে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটারে ওঠানামা করছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হচ্ছে। বুলবুলের গতিপথে পড়ছে সাগরদ্বীপ, বকখালি-সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাংলাদেশমুখী প্রায় প্রতিটি ঘূর্ণিঝড় প্রথম আঘাত হানে সুন্দরবনে। বাংলাদেশের ‘ফুসফুস’ খ্যাত এই ম্যানগ্রোভ বন প্রতিবারই বুক চিতিয়ে লড়াই করে রক্ষা করে বাংলাদেশকে। কবেগেমে যায় প্রাণহানি এবং সম্পদহানির পরিমাণ। অথচ, ঝড় চলে যাওয়ার পর মানুষ আবারও নেমে পড়ে সুন্দরবন ধ্বংসে।

পৃথিবীর মধ্যে সর্ববৃহৎ তিনটি ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের একটি হিসেবে গঙ্গা অববাহিকায় অবস্থিত সুন্দরবন সামুদ্রিক ঝড়ঝঞ্ঝার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দুই প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশ এবং ভারত জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনের বৃহত্তর অংশটি (৬২%) বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। অথচ, এই সুন্দরবনকেই ধ্বংস করা হচ্ছে প্রতিদিন। এখানে তৈরি করা হচ্ছে বিদ্যুতকেন্দ্র, কাঠ পাচারকারীরা উজার করছে বন। এই বনেই বিষ দিয়ে মাছ মারছে এক শ্রেণির মানুষ। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র। অথচ, সব ঘটছে চোখের সামনেই। সবাই জানে সুন্দরবন ধ্বংস হলে বাংলাদেশ মরুভূমি হবে; কিন্তু কেউ বাঁচাতে আসছে না ‘বাংলাদেশের মা’কে।

এমনিতেই ইউনেস্কোর রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মানবসৃষ্ট কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের ৪৫ সে.মি. উচ্চতা বৃদ্ধি হয়েছে, সেটা সহ নানাবিধ কারণে একুশ শতকের মধ্যেই সুন্দরবনের ৭৫ শতাংশ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে! রামপাল, তালতলী ও কলাপাড়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নেই। যার বলি হবে সুন্দরবন। এরপর কী হবে? আজ থেকে ৫০ বা ১০০ বছর পর বাংলাদেশকে ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য কোনো সুন্দরবনের অস্তিত্ব থাকবে না। এখনও সময় আছে সুন্দরবনকে রক্ষা করার। না হলে ক্ষমাহীন প্রতিশোধ নেবে প্রকৃতি।