
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা দাবি করছেন, অনেক ক্ষেত্রে চিকিত্সক যে রোগীকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেন, সে ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগে ভিন্ন ফল দেখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে হূদযন্ত্রের পরীক্ষার এক বছরের ফল বিশ্লেষণ করে রোগী কবে নাগাদ মারা যাবেন, এর পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে এ পূর্বাভাস দিতে পারে, তা এখনো রহস্যজনক।
পেনসিলভানিয়া-ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গেইসিংগারে গবেষক ব্রেন্ডন ফ্রনওয়াল্টের নেতৃত্বে একদল গবেষক এআই নিয়ে গবেষণা চালান। তারা ৪ লাখ মানুষের ১৭ লাখ ৭০ হাজার ইলেকট্রিকার্ডিয়গ্রাম (ইসিজি) পরীক্ষার ফল নিয়ে পরীক্ষা করে কারা আগামী বছর নাগাদ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন, তা বের করার চেষ্টা করেন।
গবেষকেরা তাদের পরীক্ষার জন্য দুটি সংস্করণের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করেন। একটি সংস্করণের এআইকে শুধু প্রাথমিক ইসিজি তথ্য দেওয়া, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভোল্টেজ পরিমাপ করে। অন্য সংস্করণের এআইকে ইসিজি তথ্যের সঙ্গে বয়স ও লিঙ্গ তথ্য দেওয়া হয়। গবেষকেরা ‘এইউসি’ নামের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পারফরম্যান্স নির্ধারণ করেন। এতে এক বছরের মধ্যে কাদের মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং কারা টিকে যাবেন, তা বের করা হয়।
গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাদের তৈরি মডেলে মৃত্যুঝুঁকির বিষয়টি অনেকটাই নিখুঁতভাবে বের করা সম্ভব হয়েছে। অনেক সময় হূদরোগ বিশেষজ্ঞরাও এ ধরনের পূর্বাভাস দিতে পারেন না। তিন জন হূদরোগ বিশেষজ্ঞ যে ইসিজি পরীক্ষার ফল স্বাভাবিক বলেছেন, তাকে এআই ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করেছে।
গবেষক ফ্রনওয়াল্ট দাবি করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, মানুষ যা দেখতে পায় না মডেলটি তা দেখতে পায়। আমরা যা স্বাভাবিক বলে অবহেলা করি, তা এ পরীক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। তবে এআই কোনো বিশেষ প্যাটার্ন ধরে হূদরোগের বিষয়গুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে শনাক্ত করে, তা এখনো জানা যায়নি। তাই অনেক চিকিত্সক এখনো এ ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগে রাজি নন। গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ আগামীকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের সায়েন্টিফিক সেশনে তুলে ধরা হবে।
গবেষক ক্রিস্টোফার হ্যাগার্টি বলেন, এ গবেষণা মূলত ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে করা। এ ধরনের অ্যালগরিদমের ব্যবহার রোগীর ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর হয়, তা পরীক্ষা করে দেখা গুরুত্বপূর্ণ।