Tue. Jun 10th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ঃ সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল সোয়া ১১টার দিকে শহরের ইবি রোড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের উদ্যোগে বিজয় র‌্যালি বের হয়। এতে সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ মুক্তিযোদ্ধারা নেতৃত্ব দেন। বিজয় র‌্যালিটি ইবি রোড এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মামুনুর রশিদ, ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাসেল, যুবলীগ কর্মী সালমান, শামীম, শুকুরসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

হেলাল উদ্দিন আরও জানান, আহতদের একজনের অবস্থা গুরুতর। তাকে ঢাকা চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হারুন অর রশিদ হাসান খােলাবাজার২৪,কে  জানান,খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেলা বিএনপি পুরাতন শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌর ভাসানী মিলনায়তনের মুক্তমঞ্চে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সমাবেশে হামলা চালায়। তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। এতে ইটপাটকেল ও পুলিশের টিয়ারশেলের আঘাতে জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেন হিটলার, যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল আব্বাস, ছাত্রদলের জুলমত, নাদিম, রানা, ছোট সবুজ, রতন, ছাবিব, যুবদলের নয়ন,খোকন, মীম, ইমরান, স্বেচ্ছাসেবকদলের সালাউদ্দিনসহ ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং দলীয় অফিসে আগুন দেওয়া হয়।

এদিকে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে বের হওয়া বিজয় র‌্যালিতে হামলা ও সংঘর্ষ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ দুপুর ২টায় এক সংবাদ সম্মেলন করে। এতে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক টিএম সোহেল গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিজয়ের মাসে সিরাজগঞ্জের বাতিঘর হিসেবে পরিচিত সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ মহান মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচিতি করাতে র‌্যালির আয়োজন করে। যা স্থানীয় প্রশাসনকে অনেক আগেই অবগত করা হয়েছে। কিন্তু র‌্যালিটি ইবি রোডে পৌঁছানোর পর সেই র‌্যালিতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি হঠাৎ হামলা চালায়।

অধ্যক্ষ বলেন, ‘এ সময় আমার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করে জীবন রক্ষা করেছে। র‌্যালিতে প্রধান অতিথি থাকা সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত উপস্থিত থাকার পরও কি করে র‌্যালিতে হামলা হলো তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভালো বলতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না ও সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বিজয় র‌্যালিতে যারা হামলা করেছে তারা স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। তারা যাই হোক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের না।

তারা আরও বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা ঘাপটি মেরে র‌্যালিতে পেছন থেকে আক্রমণ করেছে জামাত-বিএনপি ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। শহরবাসী দেখেছে কীভাবে তারা হামলা করেছে। তাই তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গাজী সফিকুল ইসলাম সফি, সদর উপজেলা কমান্ডার গাজী ফজলুর রহমান খান ফজলু, গাজী সোহরাব আলী সিএনসি প্রমুখ।

হামলা ও সংঘর্ষের বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ জানান, বিজয় র‌্যালি চলাকালে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এ সংঘর্ষের সূত্রপাতের কারণ জানা যায়নি।