Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

এই চার কন্যার মধ্যে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকও রয়েছেন। অপর তিনজন হলেন- রূপা হক, রুশনারা আলী ও আফসানা বেগম। এদের মধ্যে আফসানা বেগম এবারই প্রথম ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হলেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোনো নির্বাচনে লেবার পার্টির সবচেয়ে খারাপ এই ফলাফলের মধ্যেও বাংলাদেশি এই চার কন্যা শুধু জয়লাভই করেননি, প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন। যে চার আসনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীরা লড়েছেন সেখানে তাদের নিকটতম প্রতিন্দ্বন্দ্বীরা অর্ধেক ভোটও পাননি। খবর বিবিসির

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনে ২৮ হাজার ৮০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। লন্ডনের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনে টিউিলপের প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির জনি লাক পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮৯২ ভোট। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হওয়া টিউলিপ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

লন্ডনের হ্যামস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে বিজয়ী হওয়ার পর টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে (বাঁয়ে) স্বামী ক্রিস পার্সি, (ডান থেকে) মা শেখ রেহানা, ছোট বোন আজমিরা সিদ্দিক রূপন্তী ও ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। ছবি: টুইটার

টিউলিপের মতো রূপা হকও টানা তৃতীয়বারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে তিনি ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে ২৮ হাজার ১৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির জুলিয়ান গেল্যান্ট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৩২ ভোট। টিউলিপের মতো রূপাও ২০১৫ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। রূপা হকের আদি বাড়ি বাংলাদেশের পাবনায়। তিনি কিংসটন ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।

টিউলিপ ও রূপার আগে থেকেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রতিনিধিত্ব করে আসা রুশনারা আলী এবারের নির্বাচনেও পেয়েছেন বড় জয়। বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে লেবার পার্টির এই প্রার্থী ৪৪ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এই আসনে তার প্রতিন্দ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী নিকোলাস স্টোভোল্ড পেয়েছেন ৬ হাজার ৫২৮ ভোট। সিলেটের বিশ্বনাথে জন্মগ্রহণ করা রুশনারা সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে চলে যান। অক্সফোর্ডের সেইন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ডিগ্রি নেওয়া রুশনারা ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো লেবার পার্টির টিকিটে বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। সেবার তিনি পার্লামেন্টারি ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়া লেবার পার্টির এমপিও হয়েও কনজারভেটিভ সরকারের বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্যদূত হিসেবেও দায়িত্ব করেন করেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আফসানা বেগম এবারই প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে তিনি লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে পপলার অ্যান্ড লাইমহাউজ আসনে ৩৮ হাজার ৬৬০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৫৬ ভোট। কুইনমেরী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিতে লেখাপড়া করা আফসানার জন্ম যুক্তরাজ্যে হলেও তার পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর লুদুরপুর এলাকায়। তার বাবা মনির উদ্দিন টাওয়ার হ্যামলেটসের কাউন্সিলর ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। এই নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। প্রতি পাঁচ বছর পর পর যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া) নিয়ে জটিলতার কারণে দেশটিতে গত পাঁচ বছরেরও কম সময়ে এ নিয়ে তিনটি সাধারণ নির্বাচন হলো।