খােলাবাজার২৪শনিবার,০৪জানুয়ারি,২০২০ঃবর্তমান সময়ে বয়সভিত্তিক, ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাতাচ্ছেন এমন অনেক বা-হাঁতি পেসারের শৈশব রাঙিয়েছেন ইরফান পাঠান। তার সুইংয়ে বুদ হয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। গলা দিয়ে হয়তো অজান্তেই বেরিয়ে এসেছে একটি ‘ওয়াও’ শব্দ। সাপের ফণার মতো ছো মারা ইরফানের ইনসুইং-আউট সুইং হয়তো ছবির মতো লেগে আছে অনেকের চোখে। ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাতানো বাঁ-হাতি পেসার ইরফান পাঠান সব ধরনের ক্রিকেট থেকে শনিবার বিদায় নিয়েছেন।
ভারতের হয়ে সব মিলিয়ে ৩০১ টি আন্তর্জাতিক উইকেট নিয়েছেন ইরফান পাঠান। ওয়ানডে খেলেছেন ১২০টি। এছাড়া ২৯ টেস্ট এবং টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন ২৪টি। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটে তার দেওয়ার ছিল আরও অনেক। সময়ের আগে ঠিক মতো সুযোগ না পেয়ে কিংবা ইনজুরির কারণে সবটা উজাড় করে দেওয়ার আগেই ফুরিয়ে গেছেন এই পেসার। অনেকে মনে করেন, ইরফানের অলরাউন্ডার হয়ে যাওয়াই ছিল বড় ভুল। নাহলে তার সুইং দিয়ে আরও অনেকদিন ক্রিকেট ভক্তদের মুগ্ধ করতে পারতেন।
অ্যাডিলেডে ২০০৩ সালে ইরফানের টেস্ট অভিষেক হয়। নতুন বলে ম্যাথু হেইডেনকে তুলে নেন তিনি। ওই টেস্টে আর উইকেট পাননি। তবে ২০০৪ সালে ভারতের পাকিস্তান সফরে দারুণ ক্রিকেট উপহার দেন এই পেসার। সেবার ভারত সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে পাকিস্তানে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ জেতে। ক্রিকেটের পাতায় পাঠান আলাদাভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন ২০০৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওভারে তার সুইং দিয়ে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করে এক হ্যাটট্রিক তুলে নিয়ে।
ফর্মের তুঙ্গে থাকতে পাঠান ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছেন। দলকে শিরোপা জিততে রেখেছেন বড় অবদান। দারুণ সুইং বোলিংয়ের সঙ্গে পাঠান ব্যাটিংটাও দ্রুত শিখে নেন। তার মধ্যে ভারত একজন পরিপূর্ণ অলরাউন্ডারের ছাপ দেখেছিল। কিন্তু সেই সত্তা পরিপূর্ণ হয়নি। টেস্টে ইরফান পাঠান একটি সেঞ্চুরি ও ছয়টি ফিফটি করেছেন। ৩১.৫৭ গড়টা অনেক ব্যাটসম্যানের চেয়েও ভালো। ওয়ানডে ক্রিকেটে ওপেনিং ও তিনে ব্যাটিং করেছেন তিনি। ওয়ানডেতে তার ফিফটি আছে পাঁচটি।
পার্থে ২০০৭-০৮ মৌসুমে ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়ে ম্যাচ সেরা হন ইরফান পাঠান। কিন্তু ২০০৮ সালের দিকে তার বলের গতি কমতে থাকে। যার কারণে অকার্যকর হতে থাকে সুইং। পাঠান ২০০৮ সালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলেছেন। ওয়ানডে এবং সর্বশেষ টি-২০ খেলেছেন ২০১২ সালে। জাতীয় দলের র্যাডারে না থাকলেও তিনি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে জম্মু-কাশ্মিরের বোলিং কোচ কাম পরামর্শক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
বিদায় জানিয়ে ইরফান পাঠান বলেন, ‘আমার সকল সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি কখনো ভাবিনি বরোদা থেকে উঠে এসে শচীন, শেবাগদের মতো বড় বড় তারকার পাশে ক্রিকেট খেলবো। আমার পরিবার এবং কোচদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আলাদা করে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার ভক্তদের প্রতি।’