Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার২৪,বুধবার,০৮জানুয়ারি,২০২০ঃগত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ঘটনার পরপরই ধর্ষককে গ্রেফতারের জন্য তৎপর হয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

আজ বুধবার ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সামনে হাজির করা হলে, তিনিই ধর্ষণকারী বলে শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারকৃত ধর্ষণকারীর মুখের সামনের দুটি দাঁত ভাঙ্গা। এই ভাঙ্গা দাঁতের জন্যই তাকে শনাক্ত করা সহজ হয়েছে বলে জানা যায়।

ওই ব্যাক্তির নাম মজনু (৩০)। ধর্ষণের অভিযুক্ত মজনু ভবঘুরে জীবনে অভ্যস্ত। সে মাঝে মাঝে হকারি করে পোশাক বিক্রি করত। ধর্ষক যে ওই ব্যাক্তিই তা নিশ্চিত করে র‌্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে মজনু নিজেও অপরাধের দায় স্বীকার করেছে। সেই সাথে ধর্ষকের সামনের দুটি দাঁত ভাঙা বলে ভুক্তভোগী মেয়েটি যে বর্ণনা দিয়েছিলেন সেটাও মিলে গেছে। এছাড়া ভুক্তভোগী মেয়েটিও ধর্ষককে শনাক্ত করেছেন।

র‌্যাব জানায়, অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পাশাপাশি তার কাছ থেকে ভুক্তভোগীর ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও চার্জার উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও একটি টর্চ লাইট জব্দ করা হয়েছে। মজনু কুর্মিটোলা এলাকায় পরিত্যক্ত ট্রেনের কামরায় বসবাস করত। এর আগে র‌্যাব সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনের মধ্যে একজন স্বীকার করে।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাসেম এ কথা জানান। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মজনু তার অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন। মজনু জানিয়েছে, তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর নিজের খারাপ অবস্থার কারণে তিনি আর বিয়ে করতে পারেননি। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন প্রতিবন্ধী নারী এবং ভিক্ষুককে ধর্ষণ করেছেন।

সারোয়ার বলেন, ‘মজনু তার আগের অপকর্মগুলোর কথা নিজেই স্বীকার করেছেন। মজনু মূলত মানসিক প্রতিবন্ধী নারীদের টার্গেট করতেন এবং সুযোগ বুঝে তাদের ধর্ষণ করতেন।’

মজনু জানিয়েছেন, ‘এই প্রথম তিনি প্রতিবন্ধী নয়-এমন কাউকে ধর্ষণ করেছেন। তিনি নিজে সেদিন গিয়েছিলেন কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। এরপর ওঁৎ পেতে ছিলেন।’

উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ওই ছাত্রী ঢাবির নিজস্ব বাস ক্ষণিকায় রওনা দেন তিনি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামেন। এরপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে শারীরিক নির্যাতনও করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে। ধর্ষণের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।

ফলে হাসপাতালে নিলেও তার জ্ঞান ফিরতে কিছুটা সময় লাগে। রাত ১০টার দিকে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি নিয়ে ঢামেকে আসেন। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।