Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,সোমবার,২৭জানুয়ারি,২০২০ঃনেতাজী সুভাসচন্দ্র বোসের জন্মদিন স্মরণ করে ২৩ জানুয়ারি তৃতীয় বর্ষ ভাঙড় বইমেলার শুভ উদ্বোধন করেছিলেন কথা সাহিত্যিক এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রচেত গুপ্ত।
ভাঙড় বইমেলা জীবনে ভুলবেন না, উদ্বোধনের পর বক্তব্য রাখার সময় বলেছিলেন কথা সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত।
এলাকার সমস্ত স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ও উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
মেলার উদ্বোধন মঞ্চে ভাঙড়ের ভূমিপুত্র ফারুক আহমেদকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১৯ বছর নিয়মিত ‘উদার আকাশ’ পত্রিকা সম্পাদনার জন্য বইমেলা আয়োজক বিডিও সৌগত পাত্র ও ভাঙড়-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাহাজাহান মোল্লা ফারুক আহমেদ-এর হাতে সম্মাননা তুলে দিলেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম পাল ও রেজিস্ট্রার ড. দেবাংশু রায়। মূল্যবান বক্তব্য রেখেছিলেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড. গৌতম পাল। তিনি বইমেলার প্রয়োজন ও গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি বিজ্ঞানের প্রসার ঘটাতে এবং দেশ গঠনে ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এছাড়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন সাহিত্য সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান আজ ইতিহাস হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন।

নিবন্ধক দেবাংশু রায় বলেছিলেন, ভাঙড়ে আন্তর্জাতিক মানের বইমেলা দেখে খুব ভাল লাগল। ভাঙড়ে সাহিত্য সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে বইমেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

উজ্জ্বল উপস্থিতিতে সকলের মন কাড়েন সাংসদ ও চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় নায়িকা মিমি চক্রবর্তী। বইমেলা নিয়ে মিমি চক্রবর্তী আবেগময় বক্তব্য রাখেন।
এদিন মূল মঞ্চে জিনিয়া রায়-এর কাব্যগ্রন্থ “মনের আগের স্টেশন” উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর হতে তুলে দিলেন। ভাঙড়ের এবং বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছেন এমন তিনজনের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিলেন মিমি চক্রবর্তী।

এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন মহকুমা শাসক দেবারতি সরকার, বঙ্গ বিভূষণ সমাজসেবী শিস্ ডিরেক্টর এম এ ওহাব, ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও বইমেলা কমিটির সভাপতি ড. বীরবিক্রম রায়, ভাঙড়-১ ও ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতি যাথাক্রমে সাহাজাহান মোল্লা ও বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঝর্ণা মন্ডল ও আরাবুল ইসলাম, ভাঙড়-১ ও ভাঙড়-২-এর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌগত পাত্র ও কৌশিক মাইতি এবং কাশিপুর, ভাঙড় ও কেএলসি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক।

এদিন ভাঙড় বইমেলা কমিটির পক্ষ থেকে সমস্ত অতিথিদের, ভাঙড়ের গর্বিত সন্তানদের এবং জেলার কর্মাধ্যক্ষ, ভাঙড় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, কর্মাধ্যক্ষ, প্রধান সহ অনান্য কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা দিয়ে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
ভাঙড় বইমেলা কমিটির সম্পাদক তথা ভাঙড়-১ বিডিও সৌগত পাত্র জানান, ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ের মাঠে ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে বইমেলা। প্রতিদিন দুপুর ১ থেকে রাত্রি ৮ টা পর্যন্ত চলে এই বইমেলা। অনেক নামি-দামি প্রকাশনা সংস্থা ও লিটল ম্যাগাজিন এই বইমেলায় অংশ নিয়েছিল।

এই বইমেলাকে প্লাস্টিক মুক্ত ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন বইমেলা কর্তৃপক্ষ।

ভাঙড় বইমেলার মূল মঞ্চে প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি চলে আলোচনাসভা ও কবি সম্মেলন। এর সঙ্গে ছিল মুক্ত মঞ্চে বাউল গানের অনুষ্ঠান।
বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমন্ত্রিত কবি, সাহিত্যিক ও গবেষকবৃন্দ অংশ নিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।

বইমলেলা কমিটির যুগ্ম-সচিব ভাঙড়-২-এর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কৌশিক মাইতি জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিশেষ বার্তা বহন করছে ভাঙড়ের বইমেলা। বইমেলা সফল করতে বহু প্রকাশক ও লিটন ম্যাগাজিন অংশ নিয়েছে। এক অন্য ভাঙড়কে আবিষ্কার করেছে বইমেলায় আগত বইপ্রেমীরা।

সমস্ত বিতর্ক ও রাজনীতির উত্তেজনা ভুলে ভাঙড় উন্নয়নের ভূমিপুত্রদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারিগর শাহাজাহান মোল্লা, আরাবুল ইসলাম, কাইজার আহমেদ, নান্নু হোসেন, ওহিদুল ইসলাম, ঝর্ণা মন্ডল, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখেরা এই ভাঙড় বইমেলাকে সফল করে তুলতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।

দলমত নির্বিশেষে ভাঙড়-১ ও ভাঙড়-২-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৃতীয় বর্ষে এই বইমেলা সার্থক রূপ পেল।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন উপাচার্য দীপক কর, সাংসদ মণীশ গুপ্ত, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, কবি শিবাশিস মুখোপাধ্যায়, অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার, অধ্যক্ষ শিউলি সরকার, কথা সাহিত্যিক বানীব্রত চক্রবর্তী, প্রকাশনা সচিব, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, শুভময় মন্ডল ও অন্যান্য গুণীজন উপস্থিত ছিলেন ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি।
এবারের বইমেলার থিম ছিল পুরুলিয়া জেলা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর-এর দ্বি-শতজন্মবর্ষপূর্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনাও মুগ্ধ করে।
সমগ্র সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনায় ছিলেন ড. নিরুপম আচার্য, সুমন দাস, অভিক পাল।
সুমন দাসের পরিচালনায় ভাঙড় বইমেলার থিম সং এবং অসাধারণ নৃত্য পরিবেশন সকলের মন কাড়ে।
ভাঙড়ে গঠিত হল ভাঙড় প্রেস ক্লাব। এখানকার সাংবাদিকদের এটি ছিল একটি স্বপ্ন যা এদিন বাস্তবায়িত হল। ভাঙড় প্রেস ক্লাব গড়ে তুলতে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করেছেন ভাঙড় -১-এর বিডিও সৌগত পাত্র।

ভাঙড় বইমেলা উদ্বোধনের আগেই ভাঙড় প্রেসক্লাবের শুভ উদ্বোধন করেন আগত সমস্ত অতিথিদের সঙ্গে মহকুমা শাসক দেবারতী সরকার, সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত, সহ উপাচার্য গৌতম পাল, এম এ ওহাব, কৌশিক মাইতি, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।