শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
রঙ্গিন মাছের বাড়ি!
খােলাবাজার২৪,বৃহস্পতিবার,০৬ফেব্রুয়ারি,২০২০ঃ পানিতে এই ডুবছে, এই ভাসছে। লাল, নীল, কমলা, হলুদ, কালোসহ হরেক রঙের মিশালী মাছ। কমেট, প্লাটি, সোপটেল, কার্প, গোল্ডফিশ, অরেন্ডা, এলবিনে শার্ক, সিলভার শার্ক, গোড়ামী, ব্লু, গোল্ডেন গোড়ামী, মলি, গাপটিসহ নানা প্রজাতির মাছ। এসব মাছ মূলত শোভা পায় বাসাবাড়িতে অ্যাকুরিয়ামে। শখের সেই মাছের চাষ হচ্ছে রংপুর নগরীর একটি বাড়িতে।


গেট দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকেই চমক। গোটা উঠান জুড়ে বসানো ছোট ছোট রিং আর চৌবাচ্চা। চৌবাচ্চাগুলোর কাছাকাছি গেলে মনের মধ্যে জেগে ওঠে নানা কৌতূহল। মনে হতে পারে লাল, হলুদ রঙের কাগজের টুকরো ভেসে আছে। একটু কাছাকাছি কোন সাড়া শব্দ পেলে নড়েচড়ে উঠে। না কোন কাগজের টুকরো নয়। মাছ। কোনটা ডুবছে আবার কোনটা ভাসছে। তবে সচরাচর বাজারে পাওয়া যায় এমন মাছও নয়। মূলত শখের বসে যারা অ্যাকুরিয়ামে রাখেন তাদের কাছে বেশ প্রিয় এসব মাছ।

যেভাবে শুরু:
মেডিকেল পূর্বগেটের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। এলাকায় মৃদুল রহমান নামে পরিচিত। লেখাপড়া শেষ করে এলজিইডিতে চাকরি নেন ২০০৪ সালে। এরপর ২০০৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডে। শেষ পর্যন্ত কোন চাকরিতে মন টেকেনি তার। ঢুকে যান ব্যবসা-বাণিজ্যে। মাথায় ছিলো ব্যতিক্রম কিছু করার ভাবনা।

২০১২ সালে ঢাকার কাটাবন থেকে সংগ্রহ করেন বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি কার্প মাছ। শুরুতে বেশ কয়েকটা মাছ মারা গেলে কিছুটা হতাশ হন মৃদুল। কিন্তু আর বসে থাকতে পারেননি তিনি। বইপত্র ঘাটতে থাকেন। শুরু করেন পড়াশোনা। এরপর আবারো ঘুড়ে দাঁড়ান। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন ২৫টি চৌবাচ্চায় হাজার হাজার মাছ চাষ করছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ মাছ কিনতে ভিড় জমান তার বাড়িতে।

মৃদুল বলেন, ১০ টাকা থেকে শুরু করে একেকটি মাছ সর্বোচ্চ ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন তিনি। প্রতিদিন অন্তত লাখ টাকার মাছ কেনাবেচা হয় তার বাড়ি থেকে। শুধু ক্রেতা নয়, প্রতিদিন শ’খানেক মানুষ তার বাড়িতে যান মাছের যাদু দেখতে।

শুধু মাছ নয়, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৬২ শতক জমির এককোণে ছোট্ট একটি দোতলা বাড়ি। আর পুরো বাড়ি জুড়ে গাছ আর গাছ। বাড়ির ছাদ আর উঠোন মিলে ৭০ প্রজাতির আমের গাছ ছাড়াও ব্রাজিলের জাতীয় ফল জাবাডি কাবা, পিস ফলসহ অন্তত একশ প্রজাতির ফলদ গাছ আছে তার বাড়িতে। প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা ফাতেমা ফারিয়া, স্ত্রী তাসলিমা খাতুন আর অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছেলে তাসফিক আহমেদকে নিয়ে স্ব-পরিবারে বাগানবাড়িতে থাকেন ব্যবসায়ী মৃদুল রহমান।


আপনিও করতে পারেন:
মৃদুল রহমান বলছেন, যেকোন বেকার যুবকের ভাগ্য খোলার জন্য একটু উদ্যোগ দরকার। সামান্য জায়গা থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। দৈর্ঘ্য-প্রস্থ যাই হোক একেকটি চৌবাচ্চার গভীরতা ৩ ফিটের বেশী হবে না। চৌবাচ্চা প্রস্তত করার পর সংগৃহীত ডিম বা রেনু ছাড়ার পর নিয়ম অনুযায়ী ভাসমান খাবার দিলেই চলবে। তবে নিয়ম-কানুনের সবটা খুলে না বললেও তার সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন মৃদুল রহমান।